পালিয়ে শালীকে বিয়ে করে নিয়েছে; বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে কিনা?

জিজ্ঞাসা–৮৮৭: আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমার এক বন্ধু আছে তার সাথে আমার অনেক দিন ধরে ছোটবেলা থেকেই একসাথে আমরা বড় হয়েছি এবং তার সব বিষয়ে আমি কম বেশি জানতে পারি বা সে আমাকে জানায় এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে সে প্রথম বিয়ে করে বিয়ে করার পর তার প্রথম স্ত্রী রেখে তার শালিকে নিয়ে সে পালিয়ে যায়। যাওয়ার পর তারা বিবাহ করে এবং পরে তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেয় । এক এখন দীর্ঘ প্রায় 10 বছর ধরে তারা এভাবে সংসার চালাচ্ছে । তো আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এই বিয়েটা তাদের কি সঠিক হয়েছে?  নাকি কি হয়েছে? আমি জানতে পারলে উপকৃত হতাম।  এমত অবস্থায় তারা সংসার করতে পারবে না তাদের এই সমস্ত হারাম হবে? দয়া করে অতি তাড়াতাড়ি প্রশ্নের উত্তরটা দেবে ন।  আশায় রইলাম।–মোহাম্মদ মনজুর আলী।

জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

স্ত্রীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল থাকা অবস্থায় তার বোনকে বিবাহ করা বৈধ নয়। করলেও সে বিবাহ ‘বিবাহ’ হয় না এবং শালী তথা স্ত্রীর বোন ‘স্ত্রী’ হয় না। তবে স্ত্রীর চূড়ান্ত তালাক ও ইদ্দত পালনের পর কিংবা মৃত্যু হলে তার অন্য বোনকে বিবাহ করা জায়েয। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَأَنْ تَجْمَعُوا بَيْنَ الْأُخْتَيْنِ

দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা (হারাম করা হয়েছে) (সূরা নিসা ২৩)

ইমাম কুরতুবি রহ. এর তাফসিরে বলেন,

وأجمعت الأمة على منع جمعهما في عقد واحد من النكاح لهذه الآية

মুসলিম উম্মাহ এব্যপারে একমত যে, দুই বোনকে এক সঙ্গে বিয়ে করা নিষেধ। (আল জামি’ লি আহকামিল কুরআন ৫//১১৬)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা (১৮/২৩৫)-তে এসেছে,

الجمع بين الأختين في عقد نكاح محرم بالنصوص الصريحة من الكتاب والسنة …وقد أجمع على ذلك أهل العلم من الصحابة رضي الله عنهم والتابعين وسائر السلف ، وقد حكى ابن المنذر الإجماع على القول به

কোরআন ও সুন্নাহর স্পষ্ট দলিল দ্বারা প্রমাণিত যে, এক বোন স্ত্রী হিসেবে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বোনকে বিবাহ করা হারাম। এবিষয়ে সাহাবায়ে কেরাম, তাবিঈগণ এবং সমস্ত পূর্বসূরী ফকিহগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন এবং ইবনুল মুনযির রহ. এবিষয়ে উম্মতের ইজমা (ঐকমত্য ) নকল করেছেন।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার বন্ধুর দ্বিতীয় স্ত্রী শরীয়তের দৃষ্টিতে সে স্ত্রীই হয় নি। আর আল্লাহ বলেছেন,

وَلاَ تَقْرَبُواْ الزِّنَى إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاء سَبِيلاً

তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ। (সূরা বনী ইসরাইল ৩২)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

لَأَنْ يُطْعَنَ فِي رَأْسِ أَحَدِكُمْ بِمِخْيَطٍ مِنْ حَدِيدٍ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَمَسَّ امْرَأَةً لَا تَحِلُّ لَهُ

নিশ্চয় তোমাদের কারো মাথায় লোহার পেরেক ঠুকে দেয়া ওই মহিলাকে স্পর্শ করা থেকে অনেক ভাল, যে তার জন্য হালাল নয়। (তাবারানী, ছহীহুল জামে’ ৪৯২১)

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × five =