ওই দাওয়াত-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা যেখানে গুনাহর পরিবেশ বিদ্যমান

জিজ্ঞাসা–৮৯৮: আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু। আমার মামাতো বোনের আজ (১৮.০৯.২০১৯) বাদ মাগরিব কলমা (বিয়ে) হবে। আমার মামা আমাকে দাওয়াত করেছে আজ সেখানে থাকতে। কিন্তু যার বিয়ে সে নিজে পর্দা করে না ও নামাজও পরে না, যেখানে কলমা অনুষ্ঠিত হবে সেই বাসাই কেউই পর্দা করে না ও অধিকাংশই নামাজ পড়ে না এবং তারা সুদি লেনদেনের সাথে জড়িত। আবার এই কলমা অনুষ্ঠানে ছবিও তোলা হতে পারে (আল্লাহু আলাম), আমাদের সমাজে যেটা প্রচলিত আছে।আমার বিবেক ও মন বলছে যে, সেখানে না যাওয়ায় উত্তম। এখন দ্বিধায় আছি কি করবো? সেখানে যাবো না বর্জন করবো। এখন আপনি যদি কোরআন-সুন্নাহ ও আপনার জ্ঞানের আলোকে আমাকে পরামর্শ ও সুপারিশ করেন তাহলে আমি খুবই উপকৃত হব। অনুগ্রহ করে যে পন্থা সবচেয়ে উত্তম, সেই বিষয়টা অবলম্বন করতে বললে আমি আপনার কাছে বেশী কৃতজ্ঞ থাকবো। আপনার উত্তরের উপেক্ষায় রইলাম। দোয়া করি মহান আল্লাহ্‌ যেন আপনাকে উত্তম প্রতিদিন দান করেন, আমীন।–Md. Abdul Kadir

জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

সম্মানিত দীনী ভাই, উক্ত দাওয়াতে অংশগ্রহণ করলে সমূহ গুনাহয় লিপ্ত হওয়ার যে আশঙ্কা আপনি করছেন, এটি ইতিবাচক আলামত যে, আপনার অন্তরে তাকওয়া আছে। সুতরাং আপনার জন্য এটাই সবচেয়ে বড় সতর্কতা যে, উক্ত পরিবেশে যাবেন না। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)

রাসুলুল্লাহ বলেছেন,

لاَ يَبْلُغُ الْعَبْدُ أَنْ يَكُونَ مِنَ الْمُتَّقِينَ حَتَّى يَدَعَ مَا لاَ بَأْسَ بِهِ حَذَرًا لِمَا بِهِ الْبَأْسُ

কোন বান্দা ক্ষতিকর কাজে জড়িয়ে পড়ার ভয়ে বৈধ অক্ষতিকর বিষয় না ছেড়ে দেয়া পর্যন্ত মুত্তাকীদের পর্যায়ে উন্নীত হতে পারবে না। (তিরমিযি ২৪৫১)

প্রখ্যাত সাহাবী আবুদ্দারদা রাযি. বলেন,

تَمَامُ التَّقْوَى أَنْ يَتَّقِيَ اللهَ الْعَبْدُ حَتَّى يَتَّقِيَهُ مِنْ مِثْقَالِ ذَرَّةٍ، وَحَتَّى يَتْرُكَ بَعْضَ مَا يَرَى أَنَّهُ حَلَالٌ خَشْيَةَ أَنْ يَكُونَ حَرَامًا حِجَابًا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْحَرَامِ

পরিপূর্ণ তাকওয়া হচ্ছে, বান্দা আল্লাহকে এমনভাবে ভয় করবে যে, সে বিন্দু পরিমাণ গুনাহ থেকেও নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে। এমনকি সে হারামে লিপ্ত হওয়ার ভয়ে এমন কিছু বিষয়ও ত্যাগ করবে, যা বাহ্যিক দৃষ্টিতে হালাল। যাতে করে তার মাঝে এবং হারামের মাঝে প্রতিবন্ধক তৈরি হয়ে যায়। (জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম, ইবনু রজব হাম্বলী ১/২১৭)

হাসান বসরী রহ. বলেন,

مَا زَالَتِ التَّقْوَى بِالْمُتَّقِينَ حَتَّى تَرَكُوا كَثِيرًا مِنَ الْحَلَالِ مَخَافَةَ الْحَرَامِ

মুত্তাকিদের তাকওয়া ততক্ষণ বিদ্যমান থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে বেশ কিছু হালাল ত্যাগ করবে হারামে লিপ্ত হওয়ার ভয়ে। (জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম, ইবনু রজব হাম্বলী ১/২১৭)

আল্লাহ আপনাকেও উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমীন।

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী

১ টি মন্তব্য

  1. আলহামদুলিল্লাহ্‌, অনেক ব্যস্ততার মাঝেও আপনি অতি অল্প সময়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, এজন্য আল্লাহ্‌ সুবহানাহু’ওয়া তা’আলা যেন আপনাকে ও আপনার পরিবারকে দুনিয়াতে ও আখিরাতে উত্তম প্রতিদান দান করেন এবং সমস্ত প্রকার অকল্যাণ থেকে হেফাজত করেন, আমীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − 5 =