কোক পেপসি বিয়ার ইত্যাদি পান করা যাবে কি?

জিজ্ঞাসা–২১৯: আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। হুজুরের কাছে আমার প্রশ্ন হলো, বিভিন্ন ধরনের পানীয় যেমন কোক, পেপসি, প্রাণআপ, ফিজআপ, স্প্রাইট, মেরিন্ডা ইত্যাদি পান করা যাবে কি না?–মোঃ মাহামুদুল হাসান রোকন: [email protected]

জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

সমাজে যেসব পণ্য সরাসরি মাদকদ্রব্য হিসেবে প্রচলিত নয়। সেই সাথে তা নেশাগ্রস্থ করে না, তাহলে এসব পণ্যে অন্য কোন হারাম উপাদান না থাকলে ‘হারাম’ বলার সুযোগ নেই।

উপর্যুক্ত বিবেচনায় যেসব সাধারণ কোমল পানীয় বাজারে পাওয়া যায়, যেমন কোক, পেপসি, প্রাণআপ, ফিজআপ, স্প্রাইট, মেরিন্ডা ইত্যাদি এসব কোনটিই মাদকদ্রব্য হিসেবে প্রচলিত নয়। আর এসব খাওয়ার দ্বারা ব্যক্তি মাতালও হয় না। তাই এসব সাধারণ পানীয়তে অন্য কোন হারাম উপাদান থাকার নিশ্চয়তা পাওয়া না গেলে পান করাতে কোন সমস্যা নেই।

তবে আধুনিক বিজ্ঞানের গবেষণায় যেহেতু কোক, পেপসি ইত্যাদিতে শরীরের জন্য ক্ষতিকর নানা উপাদান বিদ্যমান প্রমাণিত হয়েছে, তাই এগুলো গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকাই কাম্য।

এ প্রসঙ্গে আরববিশ্বের প্রখ্যাত আলেম শায়খ মুহাম্মাদ সালেহ আলমুনাজ্জিদ বলেন,

ما قيل عن شراب الكوكاكولا من أنه مكتوب عليه : لا الله لا محمد ، أو لا محمد لا مكة ، وأن ذلك يرى بالنظر إلى الكتابة في المرآة ، ليس صحيحا ، ولا يترتب عليه حكم شرعي. وينبغي البعد عن التكلف والتعلق بالوهم الذي لا مستند لهوجميع المشروبات والمأكولات إذا ثبت أنها مضرة فإنها حرام ، أما إذا لم ثبت ذلك فالأصل أنها حلال ، ولا تحرم بمجرد الاحتمال والظن. وإذا كانت الشركة المنتجة لها تحارب الإسلام وتدعم أعداءه فإنها تقاطع لأجل ذلك . 

অর্থাৎ, ‘কোমল-পানীয় কোকাকোলা সম্পর্কে যে কথাগুলো বলা হয়ে থাকে যে, এর বোতলের উপরে লেখা আছে, লা আল্লাহ (আল্লাহ নেই), লা মুহাম্মদ (মুহাম্মদ নেই) অথবা লা মুহাম্মদ (মুহাম্মদ নেই) লা মক্কা (মক্কা নেই); আয়নার ভিতরে তাকালে এটি দেখা যায়- এ কথা সঠিক নয় এবং এর ভিত্তিতে কোন শরঈ-বিধান আরোপিত হয় না।’

‘আমাদের উচিত এ ধরনের জোড়াতালি নির্ভর কল্পিত ধ্যান-ধারণা থেকে দূরে থাকা; যার কোন ভিত্তি নেই। যে কোন পানীয়ের মধ্যে যদি ক্ষতিকর (নেশা সৃষ্টিকারী) কোন উপাদান থাকা সাব্যস্ত হয় তাহলে এটি পান করা হারাম। আর যদি এমন কিছু সাব্যস্ত না হয়- তাহলে যে কোন পানীয় পান করা হালাল। কল্পনা ও ধারণানির্ভর কোন তথ্যের কারণে কোন পানীয় হারাম হবে না।’

‘কিন্তু উৎপাদনকারী কোম্পানী যদি ইসলামের সাথে শত্রুতা করে এবং ইসলামের শত্রুদেরকে সাহায্য করে তাহলে ইসলামের শত্রুতার কারণে সে কোম্পানীর পণ্য বর্জন করা উচিত।’ (ফাতওয়া নং ১০৭৬৫৪)

উল্লেখ্য, সমাজে যেসব পণ্য মাদক হিসেবে প্রচলিত এসবই মাদক-বিধির আওতাভুক্ত। এর কমবেশি সবই হারাম। যেমন বিয়ার, হুইস্কি, শ্যাম্পাইন ইত্যাদি আমাদের সমাজে মদ হিসেবেই প্রচলিত। এগুলো গ্রহণের ফলে মানুষ নেশাগ্রস্থ হয়। তাই এগুলো মদ হিসেবেই বিবেচ্য। মদের যে বিধান এরও একই বিধান তথা এগুলো পান করা হারাম।

রাসূল  বলেছেন, كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ  নেশা সৃষ্টিকারী প্রতিটি বস্তুই হারাম। (বুখারী ৪৩৪৩)

আরেক হাদীসে রাসূল রাসূল  বলেছেন,ما أسكر كثيره فقليله حرامযে বস্তু বেশি পরিমাণ খেলে নেশা হয়, তার সামান্য পরিমাণ খাওয়াও হারাম। (জামে তিরমিজী ১৮৬৫,  সুনানে ইবনে মাজাহ ৩৩৯৩,  সুনানে আবু দাউদ ৩৬৮১)

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 − 7 =