জিজ্ঞাসা–১৪০১: আংটি পরা কি জায়েয আছে? থাকলে নিয়ম কী?–তাহসিন।
জবাব:
এক- প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, পুরুষদের জন্য আংটির মধ্যে কেবলমাত্র রূপার আংটি ব্যবহার করা জায়েয আছে। তবে তা এই শর্তে যে, রূপার পরিমাণে এক মিসকালের চেয়ে কম অর্থাৎ সাড়ে চার মাশার চেয়ে কম হতে হবে। গ্রামের হিসাবে এক মিসকালের পরিমাণ হল ৪.৩৭৪ গ্রাম। (ফাতাওয়া কাযী খান ৩/৪১৩)
তাকদীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনা বিশেষ উদ্দেশ্যে আংটি ব্যবহার যেমন–শনির দশা, রাহুর গ্রাস ও কালের দৃষ্টি থেকে রক্ষা; ফাড়া কাটানো, দূর্ভাগ্য দূর করা, সৌভাগ্য আনয়ন করা; এসব উদ্দেশ্যে আংটি ব্যবহার করা হারাম ও শিরিক। (আহসানুল ফাতওয়া খণ্ড : ৮, পৃ. ৬৯-৭০)
যেসব ধাতু কাফিরদের সঙ্গে কিংবা তাদের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ যেমন শিশা, পিতল, কাঁসা ও লোহার আংটি ব্যবহার করা মুসলমানদের জন্য মাকরূহ। পিতল, কাঁসা ইত্যাদি ধাতব কাফিরদের মূর্তি নির্মাণ ও আসবাবপত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয়। তাদের অনেকে লোহাকে বিশেষ পূজা-অর্চনায় ব্যবহার করে- (ইসলাম বনাম বিজাতির অনুকরণ, হাকিমুল উম্মত ক্বারী তৈয়্যব সাহেব (রহ.) পৃ. ১৭১-১৭)। তাছাড়া দোযখীদেরও শাস্তিস্বরূপ লোহার বেড়ী পরানো হবে।
হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَجُلًا، جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ ﷺ خَاتَمٌ مِنْ شَبَهٍ، فَقَالَ لَهُ: مَا لِي أَجِدُ مِنْكَ رِيحَ الْأَصْنَامِ؟ فَطَرَحَهُ، ثُمَّ جَاءَ وَعَلَيْهِ خَاتَمٌ مِنْ حَدِيدٍ، فَقَالَ: مَا لِي أَرَى عَلَيْكَ حِلْيَةَ أَهْلِ النَّارِ؟ فَطَرَحَهُ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مِنْ أَيِّ شَيْءٍ أَتَّخِذُهُ؟ قَالَ: اتَّخِذْهُ مِنْ وَرِقٍ، وَلَا تُتِمَّهُ مِثْقَالًا
একদা জনৈক ব্যক্তি পিতলের আংটি পরে নবী ﷺ–এর নিকট আসলে তিনি তাকে বলেন, ব্যাপার কি, আমি তোমার থেকে মূর্তির গন্ধ পাচ্ছি কেন? একথা শুনে সে ব্যক্তি তা খুলে ফেলে দেয়। এরপর সে ব্যক্তি একটি লোহার আংটি পরে আসলে, তিনি তাকে বলেন, আমি তোমাকে জাহান্নামীদের অলংকার পরা অবস্থায় দেখছি! তখন সে ব্যক্তি তা খুলে ফেলে দেয় এবং বলে, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি কী ধরনের আংটি ব্যবহার করবো? তিনি ﷺ বলেন, এক মিসকাল (৪.৩৭৪ গ্রাম) ওযনের কম রূপা দিয়ে আংটি তৈরী করে তা ব্যবহার কর। (আবু দাউদ ৪২২৩ তিরমিযি ১৭৮৫ নাসায়ি ৫১৯৫)
দুই- স্বর্ণের আংটি বা সোনার অন্য যে কোন অলংকার ব্যবহার পুরুষের জন্য একেবারে হারাম। আবু মুসা আশ‘আরী রাযি. রাসূলুল্লাহ্ ﷺ থেকে বর্ণনা করেছেন,
أُحِلَّ الذَّهَبُ وَالْحَرِيرُ لِإِنَاثِ أُمَّتِي، وَحُرِّمَ عَلَى ذُكُورِهَا
আল্লাহ তা‘আলা আমার উম্মতের নারীদের জন্য রেশম ও স্বর্ণ হালাল করেছেন এবং পুরুষদের জন্য হারাম করেছেন। (নাসায়ি ৫২৬৫)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী