আল্লাহুম্মা ছাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিন কুল্লামা যাকারাহুযযাকিরূনা…এই দরূদ পড়লে কি আল্লাহ হিসাব নিবেন না?

জিজ্ঞাসা–৭৬২: আস সালামু আলাইকুম। (1)দরুদ শরীফের জন্য দালায়েলুল খাইরাত নামক কিতাব খানা ওজিফা হিসেবে পড়লে কি ভালো হবে? (2)ইমাম শাফিয়ি একটা দরুদ পড়তেন [আল্লাহুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিন কুল্লামা জাকারাহুজ জাকিরুন ওয়া সল্লি আলা মুহাম্মাদিন কুল্লামা গাফালা আন জিকরীহিল গাফিলুন]এই দরুদ টি পড়ার কারনে উনার কোনো হিসাব আল্লাহ তায়ালা নেবেন না | এটি আল কাউলুল বাদি ফিস সালাত আলাল হাবিবিস সাফিই নামক কিতাবে লেখা আছে | তাহলে এটি যদি আমরা পড়ি তাহলে আল্লাহ কি আমাদের বিনা হিসাবে জান্নাত দেবেন?–najmus sakib

জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

এক. আলোচ্য কিতাবটি হল সালাত ও সালাম তথা দরূদ শরীফের সংক্ষিপ্ত কিতাব। এতে লেখক দরূদের ফজিলত ও দরূদের বিভিন্ন পাঠ উল্লেখ করেছেন। হাদীসে বর্ণিত দরূদের মাছূর শব্দের পাশাপাশি পরবর্তী বুযুর্গদের নিজস্ব শব্দে পঠিত দরূদকে এ কিতাবে সংকলন করা হয়েছে। এতে দরূদের ফাযায়েল সম্পর্কে যেসব হাদীস ও রেওয়ায়েত উল্লেখ রয়েছে তাতে সহীহ, যয়ীফ, মুনকার ও মওযূ সবধরণের রেওয়ায়েতই স্থান পেয়েছে। সুতরাং কিতাবটিকে অজিফা হিসেবে গ্রহণ করা উচিত হবে না।

দুই. আলোচ্য দরূদ সম্পর্কে আল্লামা খতিব আশশারবীনী আশশাফিঈ (মৃ ৯৭৭ হি) রহ. লিখেন,

قَالَ الْأَصْبَهَانِيُّ: رَأَيْت النَّبِيَّ ﷺ فِي الْمَنَامِ، فَقُلْت لَهُ: يَا رَسُولَ اللهِ، مُحَمَّدُ بْنُ إدْرِيسَ الشَّافِعِيُّ ابْنُ عَمِّك، هَلْ خَصَصْته بِشَيْءٍ؟ قَالَ نَعَمْ، سَأَلْتُ رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ أَنْ لَا يُحَاسِبَهُ. قُلْت: بِمَاذَا يَا رَسُول َاللهِ؟ فَقَالَ: إنَّهُ كَانَ يُصَلِّي عَلَيَّ صَلَاةً لَمْ يُصَلَّ عَلَيَّ مِثْلُهَا، فَقُلْت: وَمَا تِلْكَ الصَّلَاةُ يَا رَسُولَ اللهِ؟ فَقَالَ: كَانَ يَقُولُ: اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ كُلَّمَا ذَكَرَك الذَّاكِرُونَ، وَصَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كُلَّمَا غَفَلَ عَنْ ذِكْرِهِ الْغَافِلُونَ

আসবাহানী রহ. বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ -কে স্বপ্নে দেখেছি। তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করেছি যে, ইয়া রাসুলাল্লাহ! মুহাম্মদ ইবন ইদরীস আশশাফিঈ আপনার বংশধর। আপনি কি তাঁকে বিশেষ কিছু দিয়েছেন। তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি, তিনি যেন তাঁর হিসাব না নেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ? তখন তিনি বললেন, এর কারণ হল, সে আমার জন্য এমন দরূদ পাঠ করত, যার মত আর কেউ পাঠ করে নি। তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ওই দরূদ কোনটি? তখন তিনি বললেন, সে বলত,

 اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ كُلَّمَا ذَكَرَك الذَّاكِرُونَ، وَصَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كُلَّمَا غَفَلَ عَنْ ذِكْرِهِ الْغَافِلُونَ (

মুগনিল মুহতাজ ইলা মা’রিফাতি মা’নী আলফাযিল মিনহাজ ১/৫৬৫ দারুল কুতুব আলইলমিয়া)।

লক্ষণীয় বিষয় হল, আলোচ্য দরূদের উক্ত ফজিলত ইমাম শাফিঈ রহ. বলেন নি; বরং পরবর্তীতে স্বপ্নের মাধ্যমে একজন জানতে পেরেছেন। আর বলা বাহুল্য যে, উম্মতের স্বপ্ন শরিয়তের দলিল নয়। তবে ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, উক্ত দরূদ পড়া নিষেধ নয়। কেননা এর মাঝে শরিয়ত পরিপন্থী কোনো কথা নেই।

والله أعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন

��ন্তব্য

    • অজিফা মানে কোনো আমল নিয়মিত করা। কোরআন-সুন্নাহ থেকে অজিফা চয়ন করে তা নিয়মিত পড়া নিষেধ নয়। একেক অজিফার একেক রকম সাওয়াব হাদিস শরিফে বলা আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − three =