কোরআন ছুঁয়ে মিথ্যা বললে ঈমান চলে যায় কিনা?

জিজ্ঞাসা–৩৩৪: কোন মুসলিম যদি কোন সত্য ব্যপার গোপন করে কুরআন নিয়ে মিথ্যা বলে তাহলে কি সে আর মুসলিম থাকে না।– adury

জবাব: নিঃসন্দেহে মিথ্যা কবিরা গুনাহ। এমনকি হাদীসে মিথ্যা বলার স্বভাবকে মুনাফিকের আলামত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

أَرْبَعٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ، كَانَ مُنَافِقاً خَالِصاً، وَمَنْ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْهُنَّ، كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْ نِفاقٍ حَتَّى يَدَعَهَا : إِذَا اؤْتُمِنَ خانَ، وَإِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ، وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ

চারটি স্বভাব যার মধ্যে থাকবে, সে খাঁটি মুনাফিক গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তির মাঝে তার মধ্য হতে একটি স্বভাব থাকবে, তা ত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকদের একটি স্বভাব থেকে যাবে। ১. তার কাছে আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে। ২. সে কথা বললে মিথ্যা বলে। ৩. ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে এবং ৪. ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীল ভাষা বলে। (সহীহুল বুখারী ৩৪২, ৪৫৯, ৩১৭৮, মুসলিম ৫৮, তিরমিযী ২৬৩২, নাসায়ী ৫০২০, আবূ দাউদ ৪৬৮৮, আহমাদ ৬৭২৯, ৬৮২৫, ৬৮৪০)

এর উপরে কোরআন শরিফ হাতে নিয়ে মিথ্যা! এটা তো আরো জঘন্যতর অপরাধ। হযরত সাহাল ইবনে মিনজাব থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, مَنْ حَلَفَ بِسُورَةٍ مِنَ الْقُرْآنِ لَقِيَ اللَّهَ بِعَدَدِ آيِهَا خَطَايَا‏ যে ব্যক্তি কোরআন শরিফের কোন একটি সূরার কসম করবে সে ঐ সূরার প্রত্যেকটি আয়াতের বদলায় একটি করে গুনাহ নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা হাদীস ১২৩৬০)
তবে কোরআনের বিভিন্ন আয়াত ও বিভিন্ন হাদীসের মধ্যে সমন্বয় করলে যেটা প্রতিভাত হয়, তাহল এই যে, কুফর-শির্ক ব্যতীত অন্য কোন কবিরা গুনাহর কারণে কাউকে কাফির বলা যায় না। বরং এমন ব্যক্তি মু’মিন, তবে তার ঈমান অসম্পূর্ণ। যদি সে তাওবা করে তবে শাস্তি থেকে রেহাই পাবে। আর যদি তাওবাহ্ ব্যতীত কবিরা গুনাহে লিপ্ত থেকেই মারা যায় তাহলে সে আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাকে ক্ষমাও করতে পারেন আবার শাস্তিও দিতে পারেন।

সুতরাং মিথ্যাবাদীও মু’মিন, তবে তার ঈমান অসম্পূর্ণ। 

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × five =