জিজ্ঞাসা–২৩৬: নামাজের সামনে দিয়ে কী হাঁটা যাবেই না। অথবা হাঁটা গেলে কতটুকু সামনে দিয়ে হাঁটা যাবে?–ফারহান।
জবাব: নি:সন্দেহে নামাজি-ব্যক্তির সামনে দিয়ে যাওয়া অত্যন্ত গুনাহের কাজ। কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لو يَعْلَمُ المَارُّ بيْنَ يَدَيِ المُصَلِّي مَاذَا عليه، لَكانَ أنْ يَقِفَ أرْبَعِينَ خَيْرًا له مِن أنْ يَمُرَّ بيْنَ يَدَيْهِ. قالَ أبو النَّضْرِ: لا أدْرِي أقالَ: أرْبَعِينَ يَوْمًا، أوْ شَهْرًا، أوْ سَنَةً
নামাজি-ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী যদি জানত এতে কীরূপ শাস্তি-ভোগের আশংকা রয়েছে, তবে চল্লিশ পর্যন্ত ঠায় দাঁড়িয়ে থাকাও ভালো মনে করতো।
বর্ণনাকারী আবুন নাযর বলেন, আমার জানা নেই, হাদীসে চল্লিশের কী অর্থ, চল্লিশ দিন, চল্লিশ মাস, নাকি চল্লিশ বছর! (সহীহ বুখারী ৫১০ , সহীহ মুসলিম ৫০৭)
তবে, কেউ যদি নামাজীর বরাবর সামনে থাকে, তাহলে সেখান থেকে ডানে কিংবা বামে চলে যাওয়ার সুযোগ আছে। এটা নামাজের সামনে দিয়ে অতিক্রম করার অন্তর্ভুক্ত নয়। অবশ্য বিনা প্রয়োজনে এমন করা ঠিক নয়।
অনুরূপভাবে যদি নামাজরত ব্যক্তির সামনে ‘সুতরা’ থাকে তাহলে তার সামনে দিয়ে অতিক্রম করা যাবে। যদিও এটাও বিনা প্রয়োজনে করা ঠিক নয়। কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
إِذَا وَضَعَ أَحَدُكُمْ بَيْنَ يَدَيْهِ مِثْلَ مُؤَخَّرَةِ الرَّحْلِ فَلْيُصَلِّ وَلاَ يُبَالِي مَنْ مَرَّ وَرَاءَ ذَلِكَ
উটের পিঠের কাষ্ঠাসনের অনুরূপ কিছু (সুতরা) যদি মুসল্লির সামনে থাকে, তবে এর বাইরে দিয়ে কারো যাতায়াতে পরওয়া করার কিছু নেই। (ইবনু মাজাহ ৯৪০, তিরমিযী ৩৩৫)
অনুরূপভাবে যে মসজিদের প্রশস্ততা ৪০ বর্গ হাতের বেশি হয়, তাহলে মুসল্লির দৃষ্টি সেজদার স্থানে থাকলে সাধারণত যে স্থান পর্যন্ত নজরে আসে, যার পরিমাণ মোটামুটি মুসল্লির কাতারসহ সামনের আরোও দুই কাতার হয়, তবে ততটুকু জায়গার বাইরে দিয়ে অতিক্রম করা যাবে। কোনো গুনাহ হবে না। ততটুকু জায়গার ভেতর দিয়ে অতিক্রম করলে গুনাহ হবে। আর এর চেয়ে ছোট মসজিদে মুসল্লির সামনে দিয়ে সুতরা ছাড়া অতিক্রম করা যাবে না। (আদ দুররুল মুখতার ১/৬৩৬ হেদায়া ১/১১৮) কেননা হাদীসে বলা হয়েছে, ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻱ ﺍﻟﻤﺼﻠﻲ নামাজরত-ব্যক্তির সামনে দিয়ে…এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, দৃষ্টি সেজদার স্থানে থাকলে সাধারণত যে স্থান পর্যন্ত নামাজরত-ব্যক্তির নজরে অনুভূত হয় ততটুকু জায়গার ভেতর দিয়ে অতিক্রম করা যাবে না। এর বাইরে দিয়ে অতিক্রম করা যাবে।