জিজ্ঞাসা–১৬৯৫: প্রাইজবন্ড কেনা হালাল হবে নাকি হারাম হবে। অর্থাৎ প্রাইজবন্ডের পাওয়া পুরস্কারের অর্থ কি জায়েজ হবে?–মো. ইমাম হোসাইন।
জবাব: প্রাইজবন্ড ক্রয় করা এবং প্রাইজবন্ড থেকে পাওয়া পুরস্কার গ্রহণ করা জায়েজ নয়। (ফাতওয়ায়ে উসমানী ৩/১৭৬)
কেননা, প্রাইজবন্ডের বাস্তবতা হলো, জনগণ কর্তৃক সরকারকে দেওয়া ‘ঋণের সিকিউরিটি লেটার বা নিশ্চয়তাপত্র’। বন্ড কেনার অর্থই হলো সরকারকে ঋণ দেয়া। আর এর বিনিময়ে যে পুরুস্কার দেওয়া হয় সেটাই সুদ। এখানে এটা জরুরী নয় যে প্রত্যেক ঋণদাতাই নিশ্চিতভাবে এই সুদ লাভ করতে হবে। বরং প্রত্যেক ঋণদাতাই এর মাধ্যমে পুরস্কার লাভের যোগ্য হয়। কিন্তু সকলকে যেহেতু দেওয়া হবে না তাই সেখানে লটারির মাধ্যমে পুরস্কৃতদের নির্বাচন করা। আর এই পুরস্কার লাভের যোগ্যতাটাই রিবা বা সুদের জন্য যথেষ্ট। যদি পুরস্কার পদ্ধতি না থাকতো তাহলে কোনো মানুষই প্রাইজবন্ডের মাধ্যমে সঞ্চয়ের চিন্তা করতো না!! কাজেই এখানে সুদ নেই এই কথা বলার অবকাশ নাই।
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে كل قرض جر نفعاً فهو ربا -যে ঋণের বিনিময়ে লাভ আশা করা হয় তাই সুদ।
আর ফিকহের স্বতঃসিদ্ধ মূলনীতি হলো- العبرة في العقود للمعاني لا للمباني অর্থাৎ, চুক্তি ও লেনদেরনের ক্ষেত্রে অর্থ ও মর্মের ধর্তব্য, শব্দ ও বর্ণের নয়।
সুতরাং পুরস্কার পাওয়া বা না পাওায় ওপর সুদ বা হারাম নির্ভর নয়। বরং শরীয়তে বিধান আকদ বা চুক্তির শর্তের ওপরই আরোপিত হবে। তাই কেউ পুরস্কার না পেলেও সেটা সুদ হিসেবেই গণ্য হবে। তবে হ্যাঁ পার্থক্য শুধু এতটুকুন , যে না পাবে তার সুদ গ্রহনের গুনাহ হবে না। তবে সূচনাতে যেই চুক্তি হয়েছে (বন্ডের মাধ্যমে পুরস্কার লাভের সুযোগ) সেটা আর হালাল হবে না।