ফেতনার যুগে ইবাদতে ব্যস্ত থাকার ফজিলত

জিজ্ঞাসা–১১৮৪: কারো কাছে যদি ইবাদত করা কষ্টের মনে হয়, সে যদি মনে মনে ইবাদত না করার ইচ্ছা পোষণ করে, কিন্তু সে যদি পরকালের ভয়ে অনিচ্ছা সত্যেও ইবাদত করে তাহলে কি এতে কুফর বা কোনো গুনাহ হবে?–Nazmul Ahsan Ruhan

জবাব: ইবাদতের প্রতি উদাসীনতার কারণেই ইবাদত করতে কষ্ট লাগে এবং একারণেই ইবাদতের ইচ্ছা অন্তরে জাগে না। এটা মূলত ঈমানি দুর্বলতা ও ফেতনার যুগের অন্যতম নিদর্শন। ফেতনার যুগে এটি মুমিনদের মাঝে অধিকহারে দেখা দিবে; ফলে তাদের ঈমান দুর্বল হয়ে পড়বে এবং দুনিয়ার প্রতি তাদের আকর্ষণ বেড়ে যাবে। যা তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতের সাফল্য থেকে পিছিয়ে দিবে। আর এই উদাসীনতা ও অলসতার প্রধান প্রতিকার ও চিকিৎসা হল, মনের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে পরকালে আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা ও তাঁর আযাবের ভয়ে এবং তাঁর কাছ থেকে পুরস্কার লাভের আশায় ইবাদতের প্রতি মনোনিবেশ করা।

প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, সুতরাং অন্তরে ইবাদতের প্রতি ইচ্ছা ও উদ্দীপনা না থাকা সত্ত্বেও ইবাদতে ব্যস্ত থাকা কুফর কিংবা গুনাহ নয়; বরং এটা উক্ত রোগের প্রধান চিকিৎসা। এই চিকিৎসা যারা গ্রহণ করে ইবাদতে মনোনিবেশ করে আল্লাহ তাআলা তাদের প্রশংসা করে বলেন,

رِجَالٌ لَّا تُلْهِيهِمْ تِجَارَةٌ وَلَا بَيْعٌ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَإِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيتَاء الزَّكَاةِ يَخَافُونَ يَوْمًا تَتَقَلَّبُ فِيهِ الْقُلُوبُ وَالْأَبْصَارُ
সেই সব লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয় বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ হতে এবং নামাজ কায়েম ও যাকাত প্রদান হতে বিরত রাখে না, তারা ভয় করে সেই দিনকে যেদিন তাদের অন্তর ও দৃষ্টি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। (সূরা নূর ৩৭)
রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেছেন,
بَادِرُوا بِالأَعْمَالِ فِتَنًا كَقِطَعِ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ يُصْبِحُ الرَّجُلُ مُؤْمِنًا وَيُمْسِي كَافِرًا أَوْ يُمْسِي مُؤْمِنًا وَيُصْبِحُ كَافِرًا يَبِيعُ دِينَهُ بِعَرَضٍ مِنَ الدُّنْيَا
অন্ধকার রাতের মত ফিতনা আসার আগেই তোমরা নেক আমলের প্রতি অগ্রসর হও। সে সময় সকালে একজন মুমিন হলে বিকালে কাফির হয়ে যাবে। বিকালে মুমিন হলে সকালে কাফির হয়ে যাবে। দুনিয়ার সামগ্রীর বিনিময়ে সে তার দ্বীন বিক্রি করে বসবে। (মুসলিম ২১৪)
‏ الْعِبَادَةُ فِي الْهَرْجِ كَهِجْرَةٍ إِلَىَّ ‏
ফিতনা-দুর্যোগের সময় ইবাদত করা আমার নিকট হিজরত করার সমতুল্য। (মুসলিম ৭১৩৩)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − one =