মাহরামের সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমানোর বিধান

জিজ্ঞাসা–১৩৪২: নাতনির বয়স ১৩ সে কি নানার সাথে ঘুমাতে পারবে বা ইসলামে মাহরামের সাথে ঘুমানোর কি মাসআলা? জানিয়ে বাধিত করবেন।–জাফর।

জবাব: উক্ত নাতনি তার নানার সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমানো জায়েয হবে না। কেননা, বয়োসন্ধির নিকটবর্তী হবার পর আলাদা ঘুমানো ওয়াজিব। একসাথে একই বিছানায় ঘুমানো নাজায়েয। তবে এক মহিলা আরেক মহিলার সাথে একই বিছানায় ঘুমাতে পারবে, যদি উভয়ের সতর ঢাকা থাকে এবং ফিতনার শংকা না থাকে। তেমনি দুইজন পুরুষ একসাথে একই বিছানায় ঘুমাতে পারবে, যদি সতর ঢাকা থাকে। কিন্তু ফিতনার শংকা থাকলে জায়েয হবে না।

হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

مُرُوا أَوْلَادَكُمْ بِالصَّلَاةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ ، وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرٍ ، وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ

তোমাদের সন্তানদের বয়স সাত বছর হলে তাদেরকে নামাজের জন্য নির্দেশ দাও। যখন তাদের বয়স দশ বছর হয়ে যাবে তখন (নামাজ আদায় না করলে) এজন্য তাদেরকে মারবে এবং তাদের ঘুমের বিছানা আলাদা করে দিবে। (আবু দাউদ ৪৯৫)

ইবনু আবেদীন রহ. বলেন,

التفريق بينهما عند النوم ؛ خوفاً من الوقوع في المحذور ؛ فإن الولد إذا بلغ عشراً : عقل الجماع ، ولا ديانة له ترده ، فربما وقع على أخته أو أمه ، فإن النوم وقت راحة ، مهيج للشهوة ، وترتفع فيه الثياب عن العورة من الفريقين فيؤدي إلى المحظور وإلى المضاجعة المحرمة خصوصاً في أبناء هذا الزمان ! فإنهم يعرفون الفسق أكثر من الكبار

তাদেরকে ঘুমের সময় আলাদা করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে, ভয়ানক বিষয় ঘটে যাওয়ার ভয়ে। কেননা, সন্তানের বয়স দশ বছর হলে সে সঙ্গম সম্পর্কে বুঝতে পারে। তাই নিজের বোন কিংবা মায়ের সঙ্গে কিছু ঘটে যেতে পারে। কেননা, ঘুম মানে বিশ্রামের সময়, যৌনকামনা জাগিয়ে তোলে এমন। আর ঘুমের মধ্যে উভয়েরই সতর থেকে কাপড় উঠে যেতে পারে, যা বিশেষ করে এই যুগের ছেলেদেরকে ভায়বহ কাণ্ড ও অবৈধ যৌন সম্পর্কের দিকে ধাবিত করতে পারে। কেননা, তারা তো অপকর্ম বড়দের থেকেও বেশি বুঝে। (হাশিয়া ইবনু আবেদীন ৬/৩৮২)

দেখুন, ইবনু আবেদীন রহ. ইন্তেকাল করেছেন ১২৫২ হিজরিতে। সুতরাং এই যুগের ছেলে মেয়েদের ক্ষেত্রে তাঁর উক্ত কথা তো আরো বেশি প্রযোজ্য।

والله اعلم بالصواب

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − two =