জিজ্ঞাসা–১৫১৪: মিরাজ ও ইসরার মাঝে পার্থক্য কী?–মুহাম্মদ আব্দুল কাদের।
ইসরা ও মিরারেজ পরিচয়:
ইসরা ও মিরাজ হচ্ছে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর জীবনে; বরং মানবেতিহাসের সবচেয়ে বিস্ময়কর, অলৌকিক ও শিক্ষণীয় ঘটনা। প্রণিধানযোগ্য মতানুসারে, নবুওয়্যাতের দশম সালে রজব মাসের ২৭তম রজনীতে এই মহান ঘটনা সংঘটিত হয়। এ ঘটনার দুটে অংশ রয়েছে। এক. ইসরা, দুই. মিরাজ।
এক. ইসরা (الإسراء) অর্থ নৈশভ্রমণ। মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর রাত্রিকালীন ভ্রমনকে ইসরা বলা হয়। এ প্রসেঙ্গ কুরআনে বলা হয়েছে,
سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلاً مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ البَصِيرُ
পরম পবিত্র ও মমামহিম সত্তা তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে নৈশকালে ভ্রমণ করিয়েছেন সমজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি, যাতে আমি তাকে কুদরতের নিদর্শনগুলো দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। (সূরা বনী ইসরাঈল: ১)
দুই. মিরাজ (المعراج) শব্দটি ‘উরুজ (عروج) শব্দ থেকে মিরাজের উৎপত্তি। এর অর্থ: সিঁড়ি বা সোপান, আরোহন করা, ওপরে চড়া বা ঊর্ধ্বগমন করা। মসজিদুল আকসা থেকে সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত ভ্রমনকে মিরাজ বলা হয়। মিরাজ একাধিক এমন বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত, যা অনেকের মতে মুতাওয়াতির কিংবা মাশহুরের পর্যায়ভুক্ত। তবে কুরআনেও এর প্রতি পরোক্ষ ইঙ্গিত রয়েছে। সূরা নাজমে আল্লাহ ইরশাদ করেন,
وَهُوَ بِالْأُفُقِ الْأَعْلَى. ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّى. فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى. فَأَوْحَى إِلَى عَبْدِهِ مَا أَوْحَى. مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَى. أَفَتُمَارُونَهُ عَلَى مَا يَرَى. وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَى. عِندَ سِدْرَةِ الْمُنْتَهَى. عِندَهَا جَنَّةُ الْمَأْوَى. إِذْ يَغْشَى السِّدْرَةَ مَا يَغْشَى. مَا زَاغَ الْبَصَرُ وَمَا طَغَى. لَقَدْ رَأَى مِنْ آيَاتِ رَبِّهِ الْكُبْرَى.
তখন সে ঊর্ধ্ব দিগন্তে। তারপর সে নিকটবর্তী হল, অতঃপর আরো কাছে এল। তখন সে নৈকট্য ছিল দু’ ধনুকের পরিমাণ, অথবা তারও কম। অতঃপর তিনি তাঁর বান্দার প্রতি যা ওহী করার তা ওহী করলেন। সে যা দেখেছে, অন্তকরণ সে সম্পর্কে মিথ্যা বলেনি। সে যা দেখেছে, সে সম্পর্কে তোমরা কি তার সাথে বিতর্ক করবে? আর সে তো তাকে আরেকবার দেখেছিল। যার কাছে জান্নাতুল মা’ওয়া অবস্থিত। যখন কুল গাছটিকে যা আচ্ছাদিত করার তা আচ্ছাদিত করেছিল। তার দৃষ্টি এদিকÑসেদিক যায়নি এবং সীমাও অতিক্রম করেনি। নিশ্চয় সে তার রবের বড় বড় নিদর্শনসমূহ থেকে দেখেছে। (সূরা নাজম ৭-১৮)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী