মোবাইলে বিবাহ সম্পর্কে একটি প্রশ্নের উত্তর

জিজ্ঞাসা–৭১৬: আসসালামু আলাইকুম। আমার এক বন্ধু একজন মেয়েকে ভালবাসে এবং মেয়েটিও ভালবাসে ছেলেটিকে। তাদের পরিবারও তাদের বিয়েতে রাজি। এখন ছেলেটি মেয়েটির সাথে একটা বৈধ সম্পর্কের উদ্দেশ্যে মেয়েটিকে ফোনের মাধ্যমে বিয়ে করে। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে। তাতে চার জন সাক্ষী ছিল, সেখানে মোবাইলেই ইজাব কবুল হয়েছে এবং মোহরানাও নির্ধারিত হয়েছে মেয়েটির চাওয়া অনুযায়ী। এখন প্রশ্ন হলো তাদের বিয়ে কতটুকু শরিয়ত সম্মত হয়েছে। আর এ বিয়ে নিয়ে কেউ জানে না শুধু পাঁচজন ছাড়া। দয়া করে জানালে উপকৃত হবো।– কাজী হানিফুর রহমান।

জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

এক. উক্ত বিয়ে শরিয়তসম্মত হয় নি। কেননা, বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক বিবেকবান মুসলিম সাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রী প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রী তা কবুল করবে। আর সাক্ষীগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। আর শরয়ী এ শর্তাবলী পরিপূর্ণভাবে (হ্যাকিং, ক্লোনিং, ভয়েস চেঞ্জিং, এডিটিং ও অন্যান্য সমস্যার আশঙ্কা থাকার কারণে) মোবাইল বা টেলিফোনে পাওয়া সম্ভব নয়। তাই মোবাইলে বিবাহ করা জায়েয নয়। (ফাতওয়ায় উসমানী-২/৩০৪,৩০৫)

আলহামদুলিল্লাহ, ইতিপূর্বে আমরা এবিষয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করেছি। জানার জন্য পড়ুন জিজ্ঞাসা নং–৪৪৬

দুই. সুতরাং উক্ত ছেলে-মেয়ের উক্ত প্রেম বিবাহ-বহির্ভূত প্রেম, যা সম্পূর্ণরূপে হারাম হচ্ছে। কেননা, রাসূলুল্লাহ এটাকে যেনা বা ব্যভিচার বলেছেন-

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ ، وَالأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الاسْتِمَاعُ ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلامُ ، وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا ، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى ، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা, জিহবার ব্যভিচার হল, [পরনারীর সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে। (সহীহ মুসলিম ২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ ৮৯৩২)

والله أعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন

��ন্তব্য

  1. প্রিয় হুজুর সাহেব কাছে আমার একটা প্রশ্ন, বর্তমান আমাদের প্রায় সহবাসের সময় মানুষই পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকি এটা কি জায়েজ

    • স্ত্রীর শারীরিক অসুবিধা হলে জন্ম নিয়ন্ত্রণের সাময়িক পদ্ধতি যেমন, আযল করা (সহবাসের চরম পুলকের মুহুর্তে স্ত্রীর যোনীর বাহিরে বীর্যপাত ঘটানো), Condom Jelly, Cream, Foam, Douche ইত্যাদি ব্যবহার করা, পিল (Pill) খাওয়া, জরায়ুর মুখ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া, ইঞ্জেকশন নেয়া ইত্যাদির অনুমতি আছে। আর যদি অভাব-অনটনের ভয়ে এমনটি করে তাহলে তাহলে তা নাজায়েয ও হারাম হবে। (ইমদাদুল ফাতাওয়া ৪/২০৪)

      হাদীস শরীফে এসেছে,

      عن جابر قال كنا نعزل على عهد النبي ﷺ

      জাবের রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যুগে আযল (যা জন্ম নিয়ন্ত্রণের একটা পুরনো ও অস্থায়ী পদ্ধতি) করতাম। (বুখারী ২/৭৮৪)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − seven =