জিজ্ঞাসা–৭৬৭: আসসালামু আলাইকুম হুজুর। আমার প্রশ্ন হচ্ছে নফল কিংবা কাযা যেকোন রোজা রাখার ক্ষেত্রে ১ টি রোজা রাখা কি নিষেধ?– বিনতে মুমিন।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
নফল কিংবা কাযা একটি রোজা রাখা নিষেধ; একথা ঠিক নয়। বরং সপ্তাহের দিনসমূহের মাঝে শুধু একদিন রোজা রাখাতে কোন সমস্যা নেই। তবে শুধু শুক্রবার বা শুধু শনিবার রোজা রাখা মাকরূহে তানজিহী। হারাম বা মাকরূহে তাহরিমী নয়। (তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-৩১৫)
আবু হুরায়রা রাযি. বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি নবী ﷺ-কে বলতে শুনেছি যে,
لا يَصُومَنَّ أَحَدُكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلا يَوْمًا قَبْلَهُ أَوْ بَعْدَهُ
তোমাদের কেউ যেন শুধু জুম‘আর দিনে রোজা না রাখে। কিন্তু তার পূর্বে একদিন অথবা পরের দিন (যদি রাখে তবে জুমু‘আর দিনে রোজা রাখা যায়)। (বুখারি ১৮৪৯ মুসলিম ১৯২৯)
আবদুল্লাহ ইবনু বুসর থেকে তাঁর বোনের সূত্রে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لا تَصُومُوا يَوْمَ السَّبْتِ إِلا فِيمَا افْتَرَضَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ ، فَإِنْ لَمْ يَجِدْ أَحَدُكُمْ إِلا لِحَاءَ عِنَبَةٍ ، أَوْ عُودَ شَجَرَةٍ فَلْيَمْضُغْهُ
তোমাদের উপর ফরযকৃত রোজা ছাড়া তোমরা শনিবারে আর অন্য কোন রোজা পালন করো না। আঙ্গুরের লতার বাকল বা গাছের ডাল ছাড়া তোমাদের কেউ যদি আর কিছু না পায় (সেদিনের আহারের জন্য) তবে সে যেন তাই চিবিয়ে নেয় (রোজা ভাঙ্গার জন্য)। (তিরমিযি ৭৪৪ আবুদাউদ ২৪২১ ইবনু মাজাহ ১৭২৬)
অনুরূপভাবে আশুরার রোজার ক্ষেত্রে এসেছে যে, কেবল ১০ তারিখ রোজা রাখা অনুত্তম। এর কারণ হল, বে, ইয়াহুদিরা আশুরার একদিন রোজা রাখত। তাদের সঙ্গে সাদৃশ্য না হয় সে দিকে খেয়াল রেখে আশুরার পূর্বের দিন ৯ তারিখ বা পরের দিন ১১ তারিখ অতিরিক্ত একটি রোজা রাখা উত্তম।
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাযি. বর্ণনা করেন,
حِينَ صَامَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّهُ يَوْمٌ تُعَظِّمُهُ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ “فَإِذَا كَانَ الْعَامُ الْمُقْبِلُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ صُمْنَا الْيَوْمَ التَّاسِعَ”. قَالَ فَلَمْ يَأْتِ الْعَامُ الْمُقْبِلُ حَتَّى تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ
যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ আশুরার রোজা রাখলেন এবং (অন্যদেরকে) রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন। লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এটিতো এমন দিন, যাকে ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা বড় জ্ঞান করে, সম্মান জানায়। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, আগামী বছর এদিন আসলে, আমরা নবম দিনও রোজা রাখব ইনশাল্লাহ। বর্ণনাকারী বলছেন, আগামী বছর আসার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর ওফাত হয়ে গিয়েছে। ( মুসলিম ১৯৪৬)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী