জিজ্ঞাসা–১৮৫৬: আমার কোরবানির বিষয়ে একটি মাসআলা জানার খুবই প্রয়োজন। মাসআলা টি হলো: একটি গরু মহিষ উট। এই তিনটি জানোয়ারের মধ্যে সাতটা ভাগ থাকে বা সাতজন কোরবানি করতে পারে। আমার প্রশ্নটি হল, কোন একজনের কোন সমস্যা থাকলে, যেমন সাতজনের মধ্যে একজন হারাম টাকা দিয়েছে বা গোস্ত খাওয়ার নিয়ত করেছে বা সমাজে তার বড়ত্ব প্রকাশ করার জন্য কোরবানি করেছে তাহলে কি সেই ব্যক্তিরই কুরবানী নষ্ট হবে নাকি সাত ভাগের ভিতরে সাত জন ব্যক্তির কোরবানি নষ্ট হবে–ভালুকা, গফরগাঁও সড়ক থেকে।
জবাব: কারো ব্যাপারে যদি একথা নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, তিনি হারাম টাকা দিয়েই কুরবানী দিচ্ছেন কিংবা কুরবানী করার দ্বারা তার আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্দেশ্য নয়, বরং গোশত খাওয়া, বা মানুষকে দেখানো উদ্দেশ্য হয়, তাহলে নিয়ত খারাপ থাকার কারণে তার সাথে কুরবানী করা জায়েজ হবে না। এরকম ব্যক্তির সাথে কুরবানীতে শরীক হলে উক্ত পশুতে শরীক সবার কুরবানী বাতিল হয়ে যাবে। (খুলাসাতুল ফাতওয়া ৪১৫)
আবু হুরায়রা রাযি থেকে রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
أَيُّها النَّاسُ، إنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ لا يَقْبَلُ إلَّا طَيِّبًا، وإنَّ اللَّهَ أمَرَ المُؤْمِنِينَ بما أمَرَ به المُرْسَلِينَ، فقالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: 51]، وقالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: 172]، ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أشْعَثَ أغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إلى السَّماءِ، يا رَبِّ، يا رَبِّ، ومَطْعَمُهُ حَرامٌ، ومَشْرَبُهُ حَرامٌ، ومَلْبَسُهُ حَرامٌ، وغُذِيَ بالحَرامِ، فأنَّى يُسْتَجابُ لذلكَ؟
অবশ্যই আল্লাহ পবিত্র এবং তিনি পবিত্র (মালই) কবুল করে থাকেন। আল্লাহ মুমিনদেরকে সেই আদেশ করেছেন, যে আদেশ করেছেন আম্বিয়াগণকে। সুতরাং তিনি আম্বিয়াগণের উদ্দেশ্যে বলেছেন, হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তুসমূহ থেকে আহার কর এবং সৎকাজ কর। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত। (সূরা মু’মিনূন ৫১)
আর তিনি (মুমিনদের উদ্দেশ্যে) বলেছেন, হে মুমিনগণ! আমি তোমাদেরকে যে সব রুজী দান করেছি তা থেকে পবিত্র বস্তু আহার কর–। (সূরা বাক্বারাহ ১৭২)
অতঃপর তিনি সেই ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে লম্বা সফর করে আলুথালু ধূলিমলিন বেশে নিজ হাত দু’টিকে আকাশের দিকে লম্বা করে তুলে দু’আ করে, ‘হে আমার প্রতিপালক! হে আমার প্রভু!’ কিন্তু তার আহার্য হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পরিধেয় লেবাস হারাম এবং হারাম দ্বারাই তার পুষ্টিবিধান হয়েছে। অতএব তার দু’আ কিভাবে কবুল হতে পারে? (মুসলিম ২৩৯৩, তিরমিযী ২৯৮৯, দারেমী ২৭১৭)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী