অমুসলিমদের সালাম দেওয়ার বিধান

জিজ্ঞাসা–১২৮০: আমি একটা কোম্পানিতে চাকরি করি। এখানে উর্ধতন কর্মকর্তা হিসেবে বেশ কয়েকজন হিন্দু রয়েছেন। সাধারণত সবাই তাদের সালাম দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি জানলাম, অমুসলিমদের সালাম দেয়া জায়েয নয়। মাওলানা হেমায়েত উদ্দীন তার আহকামে যিন্দেগিতে ‘সুপ্রভাত, গুড মর্নিং ইত্যাদি’ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের এখানে সালাম না দিয়ে অন্য কিছু বলাটা বেয়াদবি হিসেবেই দেখা হবে। তাহলে কী করণীয়? স্লামালিকুম বা সালামের ভুল উচ্চারণ ব্যবহারের সুযোগ আছে কি?–মেহেদী।

জবাব: প্রিয় প্রশ্নকারী দীনি ভাই, সালাম একটি দোয়া। ইসলামের শেআ’র ও প্রতীক পর্যায়ের একটি আমল। এর ভুল উচ্চারণ কিংবা ভুল ব্যবহারের সুযোগ নেই। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَمَنْ يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللَّهِ فَإِنَّهَا مِنْ تَقْوَى الْقُلُوبِ

আর কেউ আল্লাহর শাআ’য়েরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে এটা তো অন্তরস্থ তাকওয়া থেকেই উৎসারিত। (সূরা হজ ৩২)

অনুরূপভাবে সালাম একজন মুসলিম ভাইয়ের উপর অপর মুসলিম ভাইয়ের হক ও অধিকার। সুতরাং সালাম শুধু এক মুসলিম ভাই আরেক মুসলিম ভাইকেই দিতে পারবে। কোনো অমুসলিমকে সালাম দেওয়া যাবে না। এ মর্মে রাসূলুল্লাহ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন,

لا تَبْدَؤوا اليَهُودَ ولا النَّصَارى بالسَّلام

তোমরা ইয়াহূদী ও খৃষ্টানদের আগে বাড়িয়ে সালাম করো না। (মুসলিম ২১৬৭)

তবে কোনো অমুসলিম আগে সালাম দিয়ে ফেললে উত্তরে ‘অয়া আলাইকুম’ বলবে। কেননা, রাসূলুল্লাহ বলেন,

إذا سَلَّمَ علَيْكُم أهْلُ الكِتابِ فَقُولوا وعلَيْكُم

আহলে কিতাবগণ তোমাদের সালাম দিলে, তার উত্তরে তোমরা শুধু ‘অয়া আলাইকুম’ বলবে। অর্থাৎ তোমাদের প্রতিও। (বুখারি ৬২৫৮ মুসলিম ২১৬৭)
উল্লেখ্য, কোনো অমুসলিমের সাথে সাক্ষাৎ হলে সৌজন্য প্রদর্শনস্বরূপ তার কুশলাদি জিজ্ঞাসা করে বা অন্য কোনভাবে যেমন, হাতের দ্বারা ইশারা করে কুশল বিনিময় করার অবকাশ রয়েছে। তাকে ‘আদাব’ও বলা যেতে পারে। তবে কোনভাবেই তাকে ‘নমস্কার’ বা ‘নমস্তে’ বলা যাবে না। (রহীমীয়া ৬/১২৬ কিফায়াতুলমুফতী ৯/১০৬) কেননা, নমস্কার’ বা ‘নমস্তে’ শব্দটি হিন্দুদের বিশেষ সম্ভাষণবাচক শব্দ। সুতরাং এ শব্দ বলে কোনো হিন্দুকে সম্ভাষণ করা যাবে না। (আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল ১/৫৪)

والله اعلم بالصواب

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × three =