জিজ্ঞাসা–১৬৫: হুজুর, আমাকে এক ভাই প্রশ্ন করছে যে, আমরা যারা মুসলমানের ঘরে জন্মগ্রহন করেছি। এটা আল্লাহ তায়ালার রহমত। কিন্তু যাদের বিধর্মীর ঘরে জন্ম হয়েছে তারা তো এই রহমত থেকে বঞ্চিত হলো কিন্তু কেন?–জাকির খান।
জবাব: মুলতঃ সকল শিশুই আল্লাহর রহমতে ইসলামের উপর জন্মগ্রহণ করে। সুতরাং অমুসলিম পরিবারে কোনো শিশু জন্ম নেয়া কোন অপরাধ নয় কিংবা এটা আল্লাহ্র ব্যাপক রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়া নয়। এ কারণেই হাদীসে পরিস্কার বলা হয়েছে প্রতিটি শিশু যার ঔরষেই জন্মগ্রহণ করুক না কেন, সে শিশু থাকাকালীনি মুসলিমই থাকে। তারপর বড় হলে তার পিতা মাতা তাকে বিধর্মী বানায়।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الفِطْرَةِ، فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ، أَوْ يُنَصِّرَانِهِ، أَوْ يُمَجِّسَانِهِ، كَمَثَلِ البَهِيمَةِ تُنْتَجُ البَهِيمَةَ هَلْ تَرَى فِيهَا جَدْعَاءَ
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, প্রত্যেক নবজাতক ফিতরাত তথা ইসলামের উপর জন্মগ্রহণ করে। এরপর তার মাতাপিতা তাকে ইয়াহুদী বা খৃষ্টান অথবা অগ্নি উপাসকরূপে রূপান্তরিত করে। যেমন চতুষ্পদ জন্তু একটি পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাকে (জন্মগত) কানকাটা দেখেছ? (বুখারী, হাদীস নং-১৩৮৫)
যার কারণে যদি কোনো নাবালেগ শিশু -মুসলিম কিংবা অমুসলিম- মারা যায়, তাহলে সে জান্নাতী হয়।
সহীহ বুখারীতে একটি দীর্ঘ হাদীস এসেছে। যেখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরাজের ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। দীর্ঘ হাদীসের এক পর্যায়ে তিনি বলেছেন, ‘আমরা চলতে চলতে একটি সবুজ বাগানে উপস্থিত হলাম। এতে একটি বড় গাছ ছিল। গাছটির গোড়ায় একজন বয়ঃবৃদ্ধ লোক ও বেশ কিছু শিশু (বালক বালিকা) ছিল…’
এর ব্যাখ্যায় পরে এসেছে,
الشَّيْخُ فِي أَصْلِ الشَّجَرَةِ إِبْرَاهِيمُ ـ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ـ وَالصِّبْيَانُ حَوْلَهُ فَأَوْلاَدُ النَّاسِ‘গাছের গোড়ায় যে বৃদ্ধ ছিলেন, তিনি ইবরাহীম আলাইহি সালাম এবং তাঁর চারপাশের শিশুরা মানুষের সন্তান।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং- ১৩০৩)
হাদীসের ভাষার প্রতি লক্ষ্য করুন, বলা হয়েছে, ‘তাঁর চারপাশের শিশুরা মানুষের সন্তান।‘ মানুষের মাঝে মুসলিম ও বিধর্মী সবাই শামিল। সুতরাং মানুষের শিশু সন্তানরা জান্নাতে ইবরাহীম আলাইহিসসালামের কাছে থাকবে।
কিন্তু বালেগ হওয়ার পর যেহেতু কোনো মানুষ আর অবুঝ থাকে না, সেহেতু আল্লাহর দেয়া বিবেক-বুদ্ধি ব্যবহার করে নিজের রবকে চিনে নেয়া তার দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়।
এ কারণে প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় কোন ব্যক্তি যদি এক আল্লাহর উপর বিশ্বাস করা ও তার সময়কার সত্য ধর্মের উপর ঈমান আনয়ন করা ছাড়াই মৃত্যু বরণ করে, তাহলেই কেবল সে জাহান্নামী হবে।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
বিধর্মী মানে কী? মুসলমানদের দৃষ্টিতে মুসলমান ছাড়া বাকি সবাই বিধর্মী। একইভাবে হিন্দুদের দৃষ্টিতে হিন্দূ ছাড়া বাকি সব বিধর্মী। এভাবে……..
যেহেতু আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য একমাত্র ধর্ম হল, ইসলাম। আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর মনোনীত ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। (সূরা আলি ইমরান ১৯) তাই প্রকৃতপক্ষে মুসলিম ছাড়া বাকি সকল ধর্মের লোকই বিধর্মী।
যারা ইমান না এনেই মারা গিয়েছে তাদের আযাব মুক্তির কি কোন আশা নেই