জিজ্ঞাসা–১৫৯৬: আসসালামুয়ালাইকুম, হুজুর, আমি জানতে চাচ্ছি যে কোনো অমুসলিম লেখকের লেখা বাংলা উপন্যাস পড়া যাবে কিনা, শুধু মাত্র বিনোদনের উদ্দেশ্যে?–রকিবুল কাজী।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله
প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, এক্ষেত্রে মূলনীতি হল, গল্প-উপন্যাসে যদি এমন কিছু থাকে যা বাস্তব ও ইসলামের নীতিমালার সাথে সাংঘর্ষিক তবে তা পড়া জায়েয হবে না। আর যদি এমন কিছু না থাকে; বরং যদি ভাষাশিক্ষা, সাহিত্যচর্চা, মনুষ্যত্বের বিকাশ, চরিত্র সংশোধন, আত্মসমালোচনা, সমাজ সংস্কার, দেশপ্রেমসহ ইসলাম ও ঈমানবান্ধব উপকারী বিষয়গুলোর শিক্ষা থাকে তাহলে সে সকল গল্প-উপন্যাস পড়া নিষেধ নয়। এ ধরণের গল্প-উপন্যাস তখন উদাহরণ ও উপমা হিসেবে পরিগণিত হবে।
বিস্তারিত দেখুন জিজ্ঞসা নং–১৩৩০
আর এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না যে, অমুসলিমদের লিখিত উপন্যাসগুলোতে অশ্লীলতার প্রচার, মিথ্যাচারসহ অনেক সময় কুফরি বিষয় নিয়েও লেখা থাকে যা ইসলামের সাথে সাঘর্ষিক। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তা ঈমান-আকিদা নষ্টের ‘কারণ’ হয় এবং নাস্তিকতার প্রতি ধাবিত করে। সুতরাং এ ধরণের উপন্যাস পড়া জায়েয হবে না।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,
মানুষের মধ্যে এমন ব্যক্তিও আছে যে অর্থহীন ও বেহুদা গল্প কাহিনী খরিদ করে, যাতে করে সে (মানুষদের নিতান্ত) অজ্ঞতার ভিত্তিতে আল্লাহ তাআলার পথ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে, সে একে হাসি, বিদ্রুপ, তামাশা হিসেবেই গ্রহণ করে; তাদের জন্য অপমানকর শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। (সূরা লোকমান ০৬)
আর একজন ঈমানদারের জন্য সময় অত্যন্ত মূল্যবান জিনিস। গল্প, উপন্যাসে মূল্যবান সময় প্রচুর নষ্ট হয়। আবু হুরাইরা রাযি. বলেন, রাসূল্লাহ ﷺ বলেছেন,
من حُسنِ إسلام المرءِ تركُهُ ما لا يعنيه
একজন ব্যক্তির ইসলামের পরিপূর্ণতার একটি লক্ষণ হল যে, তার জন্য জরুরী নয় এমন কাজ সে ত্যাগ করে। (জামে তিরমিযী ২২৩৯)
সুতরাং এজাতীয় উপন্যাসের কল্প-কাহিনি না পড়ে কোরআন-হাদিসের সত্য-গল্প পড়ুন। সালফে সালেহিন ও আল্লাহওয়ালাদেরকে জানুন। ইনশা আল্লাহ, জীবন পাল্টে যাবে।