জিজ্ঞাসা–১৫৬৭: আত্মীয়তার সম্পর্ক কেমন হতে হবে এবং আত্মীয় যদি আমার সাথে ভালো সম্পর্ক না রাখতে চাই আমি কী করবো? কুরআন হাদিসের আলোকে প্রশ্নের উত্তর চাই।–Emon
এক. প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, কোরআন-সুন্নাহর বহু বক্তব্য থেকে বুঝা যায় যে, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হারাম ও কবিরা গুনাহ। যেমন এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ
আত্নীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সহীহ মুসলিম ৬২৯০)
সুতরাং আপনি প্রথমত হেকমত ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন যে, নিজেকে ফেতনা থাকে দূরে রেখে উক্ত আত্মীয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রাখার। আর এটাই হল, সর্বোত্তম পন্থা। যদি এর কারণে আপনার কষ্ট হয় এবং উক্ত কষ্টের কারণে আপনি ধৈর্যধারণ করেন তাহলে মনে রাখবেন, আল্লাহ তাআলা বিনিময়ে আপনাকে এমনভাবে পুষিয়ে দিবেন, যার কল্পনাও আপনি করতে পারবেন না। হাদিস শরিফে এসেছে, এক সাহাবী এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ﷺ ! আমার আত্মীয়-স্বজন আছেন। আমি তাদের সাথে সদাচরণ করি; কিন্তু তারা আমাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। আমি তাদের উপকার করে থাকি; কিন্তু তারা আমার অপকার করে। আমি তাদের সহনশীলতা প্রদর্শন করে থাকি আর তারা আমার সঙ্গে মূৰ্খসুলভ আচরণ করে। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন,
لئِنْ كُنْتَ كَمَا قُلْتَ فَكَأَنَّمَا تُسِفُّهُمُ الْمَلَّ وَلاَ يَزَالُ مَعَكَ مِنَ اللَّهِ ظَهِيرٌ عَلَيْهِمْ مَا دُمْتَ عَلَى ذَلِكَ
তুমি যা বললে, তাহলে যদি প্রকৃত অবস্থা তাই হয় তুমি যেন তাদের উপর জ্বলন্ত অঙ্গার নিক্ষেপ করছ। আর সর্বদা তোমার সঙ্গে আল্লাহর তরফ থেকে তাদের বিপক্ষে একজন সাহায্যকারী (ফেরেশতা) থাকবে, যতক্ষণ তুমি এ অবস্থায় বহাল থাকবে। ((সহীহ মুসলিম ৬২৯৪)
দুই. যদি উক্ত উত্তম পন্থা গ্রহণ করতে না পারেন কিংবা এই আশংকা করেন যে, উক্ত পন্থা অবলম্বন করলে আপনি ফেতনায় জড়িয়ে পাড়বেন তাহলে চেষ্টা করবেন যে, কমপক্ষে সালাম দেয়া ও নেয়ার মাধ্যমে উক্ত আত্মীয়ের সঙ্গে নূন্যতম সম্পর্ক ধরে রাখার। হাফেজ ইবনু হাজার আসকালানি রহ. বলেন,
تزول الهجرة بمجرد السلام ورده
আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার বিষয়টি কেবল সালাম দেয়া ও সালামের উত্তর দেয়া দ্বারা দূর হয়ে যায়। (ফাতহুল বারী ১০/৪৯৬)