জিজ্ঞাসা–১৬১৪: আসসালামু আলাইকুম। শায়েখ, ক্রিকেট বা ফুটবল টিমের জার্সি পরলে কি অমুসলিমদের অনুসরণ হবে? এটা কি নাজায়েজ হবে?–Akib
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله
এ জার্সিগুলো পরা জায়েয হবে না। কেননা এর মাঝে বেশ কিছু খারাপ দিক রয়েছে, যেমন–
১. এটি খেলার মধ্যে ডুবে থাকার প্রতি ইঙ্গিত করে। অথচ আল্লাহ তাআলার ভাষায়; এটা মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য। মুনাফিকরা বলত,
إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلُعَبُ
আমরা তো কথার কথা বলছিলাম এবং খেলা করছিলাম। (সূরা তাওবা ৬৫)
২. বলা বাহুল্য, রোনালদো, মেসি, নেইমাররা মুসলিম নয়। তাদের জার্সি পরা তাদের প্রতি ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ। আর একজন অমুসলিম খেলোয়াড়ের প্রতি ভালোবাসা নিশ্চয় আল্লাহর জন্য নয়। সুতরাং এটি অমুসলিমকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করারই নামান্তর। অথচ আল্লাহ তাআলার নির্দেশ হচ্ছে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا بِطَانَةً مِّن دُونِكُمْ لَا يَأْلُونَكُمْ خَبَالًا وَدُّوا مَا عَنِتُّمْ قَدْ بَدَتِ الْبَغْضَاءُ مِنْ أَفْوَاهِهِمْ وَمَا تُخْفِي صُدُورُهُمْ أَكْبَرُ ۚ قَدْ بَيَّنَّا لَكُمُ الْآيَاتِ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْقِلُونَ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না, তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে কোন ক্রটি করে না-তোমরা কষ্টে থাক, তাতেই তাদের আনন্দ। শত্রুতাপ্রসুত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যা কিছু তাদের মনে লুকিয়ে রয়েছে, তা আরো অনেকগুণ বেশী জঘন্য। তোমাদের জন্যে নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও। (সূরা আলি ইমরান ১১৮)
৩. যদি এদের মধ্য থেকে কেউ মুসলিম হয়ও; তাহলেও বলা বাহুল্য যে, তাদের প্রাপ্ত অর্থের (মাসিক বেতন, ম্যাচ ফি, পুরস্কার) অধিকাংশই আসে হারাম উৎস থেকে। সুতরাং তাদের জার্সি পরা মানে তাদেরকে সমর্থন করা। অথচ আল্লাহ তাআলার নির্দেশ হচ্ছে,
وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ
গুনাহ ও জুলুমের কাজে একে অন্যের সহায়তা করো না। (সূরা মায়েদা ২)
৪. তাছাড়া এসব জার্সিতে অনেক সময় অমুসলিমদের বিভিন্ন প্রতীক এমন কি ক্রুশ পর্যন্ত আঁকা থাকে, যা কোন মুসলিমের জন্য পরিধানের চিন্তা করাটাও অন্যায়। কেননা রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا، لَا تَشَبَّهُوا بِاليَهُودِ وَلَا بِالنَّصَارَى
যে অন্য সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য বা মিল রেখে চলে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়, তোমরা ইয়াহূদী ও নাসারাদের সাথে সাদৃশ্য রেখো না। (তিরমিযী ২৬৯৫)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী