জিজ্ঞাসা–১৭৭৫: আশাকরি আপনার/আপনাদের সময় আল্লাহ্-তাআলা প্রশান্তিতে কাঁটছে।
বর্তমানে ইএমআই এর মাধ্যমে অনেক দ্রব্যাদি ক্রয় করা যায়। কিন্তু ইএমআই এর মাধ্যমে কোনো কিছু ক্রয় করা শরিয়ত সমর্থন করে কিনা?
উদাহরণ স্বরূপঃ আমি একটা মোটরসাইকেল ক্রয় করতে চাই। মোটর সাইকেলের মূল্য ৩,৮৯,০০০৳। মোট টাকার মধ্যে ১,০০,০০০ টাকা দেওয়ার সামর্থ্য আমার আছে আর বাকি ২,৮৯,০০০৳ ইএমআই তে পরিশোধ করতে চাই কোনো একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, এক্ষেত্রে আমাকে ইএমআই দেয় এমন কোনো ব্যাংকের ক্রেডিট ব্যবহার করতে হবে।
উক্ত ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কারণ ব্যাংক আমার কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা চার্জ করবে। এক্ষেত্রে শরিয়ত কী বলে, আমাকে জানালে অনেক উপকৃত হতাম, শুকরিয়া।–আনাস আল ইমরান।
জবাব: প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, মূলত ক্রেডিট কার্ড হল ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে খরচ করার সুবিধা নেওয়া। যেমন, প্রশ্নেল্লেখিত সুরতে আপনি মোটর সাইকেল খরিদ করলে ব্যাংক আপনার বাকি টাকা পে করে দেবে, পরে আপনি ব্যাংককে ওই টাকা কিস্তিতে পে-ব্যাক করবেন। সুতরাং এক্ষেত্রে ব্যাংক অতিরিক্ত যেটাই নিবে সেটা সুদ হবে। আর সুদ নিঃসন্দেহে হারাম।
ইমাম আবু বকর জাস্সাস রহ. বলেন,
هو القرض المشروط فيه الأجل وزيادة مال على المستقرض
সুদ বলা হয়, এমন ঋণ যাতে মেয়াদ শর্ত করা হয় এবং গ্রহিতাকে অতিরিক্ত প্রদানের শর্ত করা হয়। (আহকামুল কুরআন ১/৫৫৭)
তবে যদি ক্রেডিট কার্ডের মিনিমাম ডিউ টাইমের মধ্যে ব্যাংককে পে-ব্যাক করেন তাহলে যেহেতু তখন ব্যাংককে অতিরিক্ত কোনো ইন্টারেস্ট পে করতে হয় না তাই এক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পণ্য ক্রয় করা আপনার জন্য যদিও উত্তম নয়, তবে নিষেধও নয়। (দারুল ইফতা, দারুল উলূম, দেওবন্দ, জবাব নং ১৪৫৫৮)
উত্তম নয় এজন্য যে, ক্রেডিট কার্ডের চুক্তিপত্রেই লেখা রয়েছে যে, মিনিমাম ডিউ টাইমে/ডেটে বাকী পরিশোধ না করলে প্রতিদিন নির্দিষ্ট হারে সুদ দিতে হবে। সুতরাং এটা হয়, সুদের শর্তে চুক্তি করা।
আর নিষেধও নয় এজন্য যে, যদিও চুক্তিতে উক্ত কথা আছে, কিন্তু মিনিমাম ডিউ টাইমের মধ্যে ব্যাংককে পে-ব্যাক করলে যেহেতু তখন ব্যাংককে অতিরিক্ত কোনো ইন্টারেস্ট পে করতে হয় না, তাই নিষেধ নয়।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী