জিজ্ঞাসা–১৯৫: আমি বিয়ের সময় আট ভরি স্বর্ণের মালিক হই। বর্তমানে আমার সংসার খুব অভাবে চলে। কারণ আমার স্বামীর অনেক দিন থেকে চাকরি নাই। আমাদের তিনটি ছেলে মেয়ে আছে। এই অবস্থায় যেখানে আমার সংসারই চলেনা, আমি যাকাত কিভাবে দিব?–নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
জবাব: যাকাত ইসলামের অন্যতম রোকন। পাঁচ স্তম্ভের একটি। যাকাত সম্পদের হক। কারো কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকার পরও যাকাত আদায় না করা বা আদায় না করার জন্য হীলা-বাহানা খোঁজ করা অথবা আদায় করতে গড়িমসি করা সবটাই অত্যন্ত গর্হিত কাজ। আপনি যাকাত আদায়ে অসামর্থ্যের কথা লিখেছেন। কিন্তু শরীয়ত তো সম্পদের অংশ বিশেষ দ্বারাই যাকাত দিতে বলেছে। যেমন আপনার কাছে স্বর্ণ আছে, আপনি তার ২.৫০% যাকাত হিসেবে আদায় করবেন। অন্য কোনো সম্পদ বা টাকা তো আদায় করতে হবে না। হাঁ, আপনি চাইলে সোনার বদলে সমমূল্যের টাকাও দিতে পারেন।
তাই নিজের কাছে ০৮ ভরি সোনা থাকার পরও অসামর্থ্যের প্রশ্ন আসে না।
প্রিয় দীনি বোন, মনে রাখবেন ফরয হওয়া সত্ত্বেও যারা যাকাত আদায় করে না তারা যাকাতের সকল সুফল থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি আল্লাহর আদেশ অমান্য করার কারণে তাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এ মর্মে কুরআন মজীদে বলে ইরশাদ হয়েছে-
وَ لَا یَحْسَبَنَّ الَّذِیْنَ یَبْخَلُوْنَ بِمَاۤ اٰتٰىهُمُ اللّٰهُ مِنْ فَضْلِهٖ هُوَ خَیْرًا لَّهُمْ ؕ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَّهُمْ ؕ سَیُطَوَّقُوْنَ مَا بَخِلُوْا بِهٖ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ ؕ وَ لِلّٰهِ مِیْرَاثُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ ؕ وَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْرٌ۠
আর আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যা তোমাদেরকে দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তারা যেন কিছুতেই মনে না করে যে, এটা তাদের জন্য মঙ্গল। না, এটা তাদের জন্য অমঙ্গল। যে সম্পদে তারা কৃপণতা করেছে কিয়ামতের দিন তা-ই তাদের গলায় বেড়ি হবে। আসমান ও যমীনের স্বত্ত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহরই। তোমরা যা কর আল্লাহ তা বিশেষভাবে অবগত। (সূরা আলইমরান : ১৮০)
হাদীস শরীফে এসেছে- ‘যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু সে তার যাকাত দেয়নি কিয়ামতের দিন তা বিষধর স্বর্পরূপে উপস্থিত হবে এবং তা তার গলায় পেঁচিয়ে দেওয়া হবে। সাপটি তার উভয় অধরপ্রান্তে দংশন করবে এবং বলবে, আমিই তোমার ঐ ধন, আমিই তোমরা পুঞ্জিভূত সম্পদ।’ (সহীহ বুখারী)
অতএব, গড়িমসি না করে যাকাত আদায়ে সচেষ্ট হোন।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী