জীবনের ছুটে যাওয়া নামাজগুলো কাযা করার পদ্ধতি

জিজ্ঞাসা–১৩৪৪: আমার জীবনের অনেক দিনের নামাজ বাকি আছে।যার কোন হিসাব আমার জানা নেই। এখন প্রশ্ন হলো, এই নামাজ কি আদায় করতে হবে? আর করতে হলে কিভাবে আদায় করব। আমি এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার চেষ্টা করি এবং শুধু ফরজ নামাজ আদায় করে, পিছনের বাদ যাওয়া ফরজ নামাজ আদায় করি এটা ঠিক আছে?–মোঃ মাহফুজুর রহমান।

জবাব:

এক. প্রশ্নকারী দীনি ভাই, যেহেতু নামাজের ক্ষতিপূরণ নামাজই, তাই আপনার জন্য বিগত ছুটে যাওয়া নামাজগুলো কাযা করা ওয়াজিব। কেননা, আনাস ইবনু মালিক রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন,

مَنْ نَسِيَ صَلاَةً فَلْيُصَلِّ إِذَا ذَكَرَهَا، لاَ كَفَّارَةَ لَهَا إِلاَّ ذَلِكَ فإن الله يقول {‏وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي‏}‏

যদি কেউ কোনো নামাযের কথা ভুলে যায়, তাহলে যখনই স্মরণ হবে, তখন তাকে তা আদায় করতে হবে। এ ব্যতীত সে নামাযের অন্য কোনো কাফ্ফারা নেই। কেননা, আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন, ‏وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي আমাকে স্মরণের উদ্দেশে নামায কায়েম কর। (মুসলিম ৬৮৪)

দুই. যদি কারো পাঁচ ওয়াক্তের বেশী কাযা হয়ে যায় – সেটা কয়েক দিন কয়েক মাস এমনকি কয়েক বছরও হতে পারে-তাহলে তার উচিত কাযা নামাযগুলো একটা অনুমান করে কোন নামায কত ওয়াক্ত কাযা হয়েছে তা নির্ধারণ করে নিবে। তারপর একে একে তা আদায় করবে। যত দ্রুত এবং যত বেশি সম্ভব এই কাযাগুলো আদায় করতে হবে। প্রতি ওয়াক্তে কয়েক ওয়াক্তের কাযা আদায় করলেও ভালো। এ ছাড়া সুবিধামতো সময়ে যখন যে নামাযের কাযা আদায়ের সুযোগ হয় আদায় করা যাবে। তবে প্রতি ওয়াক্তে ওই ওয়াক্তের কাযা আদায় করলে হিসাব রাখা সহজ। এভাবে আদায়কৃত নামায আনুমানিক হিসাব থেকে কমতে থাকবে। এ নিয়মে ছুটে যাওয়া নামায আদায় হয়ে গেলে ভালো। নতুবা জীবনের শেষ মুহূর্তে অবশিষ্ট নামাযের ফিদয়া দেয়ার ওসিয়ত করতে হবে।

এ অবস্থায় কাযা নামায আদায়ের নিয়ম এই যে, সে যে ওয়াক্তের কাযা আদায় করতে চাইবে সে ওয়াক্তের নিয়ত করবে যে, অমুক ওয়াক্তের সবচেয়ে প্রথম বা শেষ নামায আদায় করছি। যেমন- কাযা হওয়া নামাযের মধ্যে ফজরের নামাযের কাযা আদায় করতে চাই। তাহলে নিয়ত করবে, আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা আছে, তার সবচেয়ে প্রথম অথবা শেষটা আদায় করছি। এভাবে আদায় করবে যাতে সকল কাযা নামায পুরো হয়ে যায়।

এভাবে বাকি নামায আদায় করবে। যোহর, আছর, মাগরিব, ইশাও এভাবে আদায় করবে।

উল্লেখ্য, সুন্নাত নামাযের কাযা করা যায় না, কেবল ফরজ ও বেতরের নামাযের কাযা করার সুযোগ থাকে। (আদ্দুররুল মুখতার, সাঈদ, খণ্ড : ২, পৃষ্ঠা : ৬৮; ফাতাওয়া দারুল উলুম, জাকারিয়া, খণ্ড : ৪, পৃষ্ঠা : ৩৩২)

والله اعلم بالصواب

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × one =