জিজ্ঞাসা–৪৬১: হেদায়েতের আগের সময়গুলোতে, অজ্ঞতাবশতঃ যে রোজা, নামাজ কাযা হয়েছে তা কিভাবে আদায় করব? একটানা রোজা রাখার মতন শারীরিকভাবে সুস্থ বোধ করি না আর আর্থিক কাফফারা আদায়েও সক্ষম নই। যদিও যুবতী.. এক্ষেত্রে আমি কিভাবে আল্লাহর ক্ষমা পাব? কিভাবে আমার গাফলতি শোধরাব?–নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
জবাব:
এক- প্রিয় বোন, প্রথমত, কাযা নামাযগুলো একটা অনুমান করে কোন নামায কত ওয়াক্ত কাযা হয়েছে তা নির্ধারণ করে নিন। তারপর একে একে তা আদায় করবেন।
যত দ্রুত এবং যত বেশি সম্ভব এই কাযাগুলো আদায় করতে হবে। প্রতি ওয়াক্তে কয়েক ওয়াক্তের কাযা আদায় করলেও ভালো। এ ছাড়া সুবিধামতো সময়ে যখন যে নামাযের কাযা আদায়ের সুযোগ হয় আদায় করা যাবে। তবে প্রতি ওয়াক্তে ওই ওয়াক্তের কাযা আদায় করলে হিসাব রাখা সহজ। এভাবে আদায়কৃত নামায আনুমানিক হিসাব থেকে কমতে থাকবে।
যে ওয়াক্তের কাযা আদায় করতে চাইবেন সে ওয়াক্তের নিয়ত এভাবে করবেন যে, অমুক ওয়াক্তের সবচেয়ে প্রথম বা শেষ নামায আদায় করছি। যেমন- যদি কাযা হওয়া নামাযের মধ্যে ফজরের নামাযগুলোর কাযা আদায় করতে চান তাহলে প্রতিবার নিয়ত করবেন, আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা আছে, তার সবচেয়ে প্রথম অথবা শেষটা আদায় করছি।
যোহর, আছর, মাগরিব, ইশাও এভাবে আদায় করবেন।
উল্লেখ্য, সুন্নাত নামাযের কাযা করা যায় না, কেবল ফরজ ও বেতরের নামাযের কাযা করার সুযোগ থাকে। (আদ্দুররুল মুখতার, সাঈদ, খণ্ড : ২, পৃষ্ঠা : ৬৮; ফাতাওয়া দারুল উলুম, জাকারিয়া, খণ্ড : ৪, পৃষ্ঠা : ৩৩২)
দুই- প্রিয় বোন, রোযার ব্যপারে অলসতা করে, অবহেলা করে আপনি সত্যিকার অর্থেই বিপজ্জনক অবস্থায় আছেন। ফাতাওয়া আল্লাজনাতিদ্দাইমা (১০/১৪৩) এসেছে,
من ترك الصوم جحداً لوجوبه فهو كافر إجماعاً ، ومن تركه كسلاً وتهاوناً : فلا يكفر ، لكنه على خطر كبير بتركه ركناً من أركان الإسلام ، مجمعاً على وجوبه
‘যে ব্যক্তি রোযা ফরয হওয়াকে অস্বীকার করে রোযা ত্যাগ করে সে ব্যক্তি সর্বসম্মতিক্রমে (ইজমার ভিত্তিতে) কাফের। আর যে ব্যক্তি অলসতা করে, কিংবা অবহেলা করে রোযা ছেড়ে দেয় সে কাফের হবে না। কিন্তু, সে ইসলামের সর্বজন স্বীকৃত (ইজমা সংঘটিত) একটি রুকন ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে মহা বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে রয়েছে।’
এখন এই বিপদ থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনি যা করবেন, তাহল,১- তাওবা করবেন। ২- কাযা পালন করবেন।
ইবনে আব্দুল বার বলেন,
وأجمعت الأمة ، ونقلت الكافة ، فيمن لم يصم رمضان عامداً وهو مؤمن بفرضه، وإنما تركه أشراً وبطراً، تعمَّد ذلك ثم تاب عنه : أن عليه قضاءه
“গোটা উম্মত ইজমা করেছেন এবং সকলে উদ্ধৃত করেছেন যে, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা পালন করেনি, কিন্তু সে রমযানের রোযা ফরয হওয়ার প্রতি বিশ্বাসী, সে অবহেলা করে, অহংকারবশতঃ রোযা রাখেনি, ইচ্ছা করেই তা করেছে, অতঃপর তওবা করেছে: তার উপর রোযার কাযা পালন করা ফরয।”(আল-ইযতিযকার ১/৭৭)
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী