জিজ্ঞাসা–১১৮: আসসালামু আলাইকুম। হুজুর, কোন ধূমপায়ী ব্যক্তির পেছনে জামাতে নামাজ আদায় করা সহিহ হবে কিনা? জানালে উপকৃত হব। ধন্যবাদ।–হাসান।
জবাব: ওয়ালাইকুমুসসালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
ধূমপান করা নাজায়েয। এতে আর্থিক অপচয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যগত ক্ষতিও রয়েছে। জেনে শুনে নিজের জান-মালের ক্ষতি করা গুনাহ। অধিকন্তু ধূমপায়ীর মুখের দুর্গন্ধে অন্যের কষ্ট হয়, যা পৃথক একটি গুনাহ। হাদীসে আছে,
مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ فَلاَ يُؤْذِي جَارَهُ
‘‘যে কেউ আল্লাহ্ তা‘আলা ও শেষ দিবসে ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।’’ (সহীহ বুখারী ৭/২৬)
আর দুর্গন্ধসহ ইমামতি করা মাকরূহে তাহরীমী। বরং এ অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করাও মাকরূহ। হাদীস শরীফে ধূমপানের চেয়ে অনেক কম দুর্গন্ধ বস্ত্ত কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করতেও নিষেধ করা হয়েছে। নবীজী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন–
مَنْ أَكَلَ الْبَصَلَ وَالثُّومَ وَالْكُرَّاثَ فَلَا يَقْرَبَنَّ مَسْجِدَنَا، فَإِنَّ الْمَلَائِكَةَ تَتَأَذَّى مِمَّا يَتَأَذَّى مِنْهُ بَنُو آدَمَ
“যে ব্যক্তি পেঁয়াজ, রসুন এবং পেঁয়াজের মতো গন্ধ হয় এমন কোনো সবজী খাবে, সে যেন আমাদের মসজিদের ধারে কাছেও না আসে, কেননা; মানুষ যে খারাপ গন্ধ দ্বারা কষ্ট পায়, ফিরিস্তারাও তদ্রূপ কষ্ট পায়।” (সহীহ মুসলিম ১/৩৯৫)
ধূমপান করলে তো আরও বাজে গন্ধ বের হয়। পেঁয়াজ, রসুনের চেয়ে বেশি গন্ধ। অতএব ধূমপানের তীব্র দুর্গন্ধের সাথে মসজিদে প্রবেশ করা যে নিষিদ্ধ হবে তা তো সহজেই অনুমেয়।
তবে যদি ধূমপায়ীর চেয়ে ভালো কাউকে না পাওয়া যায় অথবা আপনি এসে ধূমপায়ীর পিছনে নামায পড়ে ফেলেছেন তাহলে আপনার নামায হয়ে যাবে। ঐ নামায পুনরায় পূনরায় আদায় করতে হবে না। (ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দাইমা ১৩/৫৬;আলফাতাওয়াশ শারইয়্যাহ ১০/১৪৫; রদ্দুল মুহতার ১/৬৬১)
উল্লেখ্য, মিসওয়াক ইসলামের দায়েমী একটি সুন্নত। এ সুন্নতটির প্রতি যত্নবান হয়ে দাঁত এবং মুখ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা প্রতিটি মুমিনের কর্তব্য।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী