জিজ্ঞাসা–৪৬৫: পিতা মাতার দিকে নেক নজরে তাকানোতে অনেক সওয়াব শুনেছি। তবে,কোনো কারনে যদি পিতা মাতার কোনো ব্যবহারে বা কাজে প্রচন্ড রকমের অসন্তুষ্টি আসে এবং যতবারই তাকানো হয়,সেই অসন্তুষ্টির মাত্রা বাড়ে কিংবা অসন্তুষ্টি চলে আসে মনে,তাহলে কি গুনাহগার হব? এক্ষেত্রে,তাদের কি এড়িয়ে চলা ঠিক হবে? প্রয়োজনের বাইরে কথা বলি না, তবে যথাসম্ভব চেষ্টা করি তাদের মনে কষ্ট দিতে না। কথা বলে বোঝাতে গেলেই ভুল বুঝাবুঝু হয়,তারা অসন্তুষ্ট হয়। তাই এই চেষ্টা বাদ দিয়ে দিয়েছি। নামাজ পড়ে কেবল আল্লাহকে বলি হেদায়েত দান করতে। আমার করণীয় কি?–নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
জবাব: ইসলাম পিতা-মাতাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করা, তাদের সেবাযত্ন করা এবং মৃত্যু অবধি তাদের আনুগত্য করার নীতি প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস চালিয়েছে। আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا
“আর আপনার রব আদেশ দিয়েছেন তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদত না করতে ও মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে। তারা একজন বা উভয়ই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। তাদের সাথে সম্মানসূচক কথা বল।” (সূরা বনী ইসরাইল ২৩)
সাধ্যানুযায়ী এ আদেশ রক্ষা করা আপনার জন্য ওয়াজিব। এর মধ্যেই প্রভুত কল্যাণ নিহিত রয়েছে। পিতামাতার সেবা ও সদ্ব্যবহারের জন্য তাঁদের মুসলমানও হওয়া জরুরী নয়। মহান আল্লাহ বলেন,
وَإِن جَاهَدَاكَ عَلى أَن تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا
‘‘পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে।” (সূরা লুকমান ১৫)
পাশাপাশি তাদের জন্য দোয়া অব্যাহত রাখুন। এটাও আল্লাহর নির্দেশ। যেমন, আল্লাহর বাণী:
وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُلْ رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
আর মমতাবশে তাদের প্রতি নম্রতার পক্ষপুট অবনমিত কর এবং বল ‘হে আমার রব! তাঁদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তাঁরা আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন’। (সূরা বনী ইসরাইল ২৩-২৪)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
আরো পড়ুন–