জিজ্ঞাসা–৭৮৭: রমজান মাসে ইচ্ছাকৃতভাবে পুরো পরিবারের কেউ রোজা রাখে না এমনকি এরা নামায ও পড়ে না। এমন দরিদ্র পরিবারকে দান বা সদকাহ করা যাবে কিনা?–Masum Billah
জবাব:
এক. যদি উক্ত পরিবার নামাজ-রোজার ফরযিয়াত (অপরিহার্যতা) অস্বীকার করার কারণে নামাজ-রোজা ত্যাগ করে তাহলে তাদেরকে যাকাত দেয়া যাবে না। কেননা, নামাজ-রোজার ফরযিয়াত অস্বীকার করা কুফরি। আর কাফেরকে যাকাত দেয়া যায় না। আল্লামা কাসানি রহ. বলেন,
لا يجوز صرف الزكاة إلى الكافر بلا خلاف
সকলের ঐক্যমত হল, কাফেরকে যাকাত দেয়া যায় না। (বাদায়ি’ ৪/৩৯)
তবে নফল সদকা দেয়া যাবে। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন,
لَّا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُم مِّن دِيَارِكُمْ أَن تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ
থেকে বহিষ্কার করে নি, তাদের সঙ্গে সদাচরণ করতে ও তাদের প্রতি ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালোবাসেন। (সূরা মুমতাহিনা ৮)
হাদিস শরিফে এসেছে, আসমা বিনতে আবু বকর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
قَدِمَتْ عَلَىَّ أُمِّي وَهِيَ مُشْرِكَةٌ فِي عَهْدِ قُرَيْشٍ إِذْ عَاهَدَهُمْ فَاسْتَفْتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدِمَتْ عَلَىَّ أُمِّي وَهْىَ رَاغِبَةٌ أَفَأَصِلُ أُمِّي قَالَ: نَعَمْ صِلِي أُمَّكِ
আমার আম্মা আমার কাছে এসেছেন যে সময় কুরায়শদের সাথে সন্ধি বলবৎ ছিল আর তখন তিনি মুশরিকা ছিলেন। তখন আমি রসূলুল্লাহ ﷺ-কে বললাম, আমার মা আমার কাছে এসেছেন সাহায্যের আশা নিয়ে। আমি কি আমার আম্মার সাথে সদ্ব্যবহার করব? উত্তরে রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তুমি তোমার আম্মার সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ কর। (বুখারী ২৯৪৬)
দুই. পক্ষান্তরে যদি উক্ত পরিবার নামাজ-রোজার ফরযিয়াত (অপরিহার্যতা) স্বীকার করে। তবুও তারা নামাজ-রোজা পালন করে না অলসতা বা উদাসীনতার কারণে তাহলে যদি তারা যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হয় যাকাত দেয়া যাবে এবং নফল সদকাও দেয়া যাবে। তবে ইমাম নববী রহ. বলেন,
يُستَحَبُّ أن يَخُصَّ بصدقتِه الصُّلحاء، وأهلَ الخير
সদকা বিশেষত নেককার ও ভালো মানুষকে দেয়া মুসতাহাব। ( আলমাজমু’ ৬/২৪০)
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী