জিজ্ঞাসা–৭২৮: আমার এক বান্ধবী এর হাসবেনড রাগের মাথায় ওকে মোবাইলে তিন তালাক লিখে পাঠায়। লিখাটি এমন ছিল 1 talak, 2 talak, 3 talak. কিন্তু সাথে সাথে ওরা ওদের ভুল বুঝতে পারে এবং দুই জনে তওবা করে। ভাই জানত না মোবাইলে লিখে পাঠালে তা হয়ে যায়। আমি জানতে চাই এখন এটা তালাক হয়েছে কিনা।–মোঃ হাসিব।
জবাব: মানুষ সাধারণত তালাক রাগের মাথায়ই দেয়। রাগের মাথায় তালাক দিলেও তালাক হয়ে যায়। কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
ثَلاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ : النِّكَاحُ ، وَالطَّلاقُ ، وَالرَّجْعَةُ
তিনটি বিষয় এমন রয়েছে যা গোস্বায় হোক বা হাসি ঠাট্টায় হোক সর্বাবস্থায় কার্যকরী হয়ে থাকে। বিবাহ্, তালাক ও রজয়াত। (আবু দাউদ ২১৯৪ তিরমিযি ১১৮৪)
অনুরূপভাবে মুখে দিলে যেমনিভাবে তালাক হয় তেমনিভাবে তালাক লিখে পাঠালেও তালাক পতিত হয়। ফকিহগণ বলেন,
إن الكتابة يقع بها الطلاق، ولو كان الكاتب قادرا على النطق، فكما أن للزوج أن يطلق زوجته باللفظ، فله أن يكتب إليها الطلاق.
নিশ্চয় চিঠি (ম্যাসেজ) দ্বারাও তালাক পতিত হয়। যদিও লেখক বলতে সক্ষম হয়। সুতরাং যেমনিভাবে স্বামী মুখে তালাক দিতে পারে, তেমনিভাবে লিখিতভাবেও দিতে পারে। (ফিকহুস সুন্নাহ ৩/১৬৫)
সুতরাং উক্ত মহিলার উপর তিন তালাক পতিত হয়ে গেছে। এখন উক্ত মহিলা তার উক্ত স্বামীর সাথে ঘরসংসার করা আর বৈধ হবে না। হ্যাঁ, ইদ্দত শেষে যদি উক্ত মহিলার অন্যত্র বিয়ে হয়। সেখান থেকে কোনো কারণে তালাকপ্রাপ্তা হয় বা তার স্বামীর মারা যায় তাহলে ইদ্দত পালন শেষে তাকে উক্ত স্বামী দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে পারবেন। এছাড়া আর কোন গত্যান্তর নেই। (কিতাবুন নাওয়াজেল-৯/৫২১-৫২৩)। আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। (সূরা বাকারা ২৩০)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী