জিজ্ঞাসা–৪৪৬: অাসসালামু আলাইকুম ,হুজুর আমার প্রশ্ন হলো বর্তমানে প্রায় দেখা যায় মোবাইলে বিবাহ পড়ানো যেমন : ছেলে বিদেশেই থাকে মেয়ে বাংলাদেশে ,এই সব বিবাহ জায়েয আছে কি না , জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো ইনশা আল্লাহ।–মোহাম্মাদ আল-আমীন
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক বিবেকবান মুসলিম সাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রী প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রী তা কবুল করবে। আর সাক্ষীগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ
আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, অভিবাক ও দু’জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)
আর শরয়ী এ শর্তাবলী পরিপূর্ণভাবে (হ্যাকিং, ক্লোনিং, ভয়েস চেঞ্জিং, এডিটিং ও অন্যান্য সমস্যার আশঙ্কা থাকার কারণে) টেলিফোনে পাওয়া সম্ভব নয়। তাই মোবাইলে বিবাহ করা জায়েয নয়। (ফাতওয়ায় উসমানী-২/৩০৪,৩০৫)
আল-লাজনাতুদ্দায়িমাহ লিল-ইফতা, সৌদি আরব-এর ফতোয়াও এটাই যে, টেলিফোন বা মোবাইলে বিবাহ বৈধ হবে না। যেমন, সেখানে বলা হয়েছে,
نظرا إلى عناية الشريعة الإسلامية بحفظ الفروج والأعراض ، والاحتياط لذلك أكثر من الاحتياط لغيرها من عقود المعاملات – رأت اللجنة أنه ينبغي ألا يعتمد في عقود النكاح في الإيجاب والقبول والتوكيل على المحادثات التليفونية ؛ تحقيقا لمقاصد الشريعة ، ومزيد عناية في حفظ الفروج والأعراض حتى لا يعبث أهل الأهواء ومن تحدثهم أنفسهم بالغش والخداع
নারীর সম্ভ্রম ও ইজ্জতের হেফাজত, বিবাহের গুরুত্ব, ধোঁকা ও প্রতারণা থেকে নিরাপত্তা এবং ইসলামি শরিয়তের মাকাসিদের প্রতি লক্ষ্য করে ফাতওয়া বোর্ড এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, বিবাহের ইজাব-কবুল ও প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে ফোনের কথোপকথনের ওপর নির্ভর করা উচিত হবে না। (ফাতওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাহ ১৮/৯০)
তবে ওয়াকীল বা প্রতিনিধি বানানোর কাজটি ফোন বা মোবাইলের মাধ্যমেও হতে পারে। আর এই পদ্ধতিটি প্রয়োগ করলে টেলিফোন বা মোবাইলে বিবাহ বৈধ হবে। এটার পদ্ধতি হল, পাত্র বা পাত্রী তৃতীয় কোন একজন ব্যক্তিকে ওয়াকীল বা প্রতিনিধি বানাবে। ওয়াকীল বিবাহের যেকোনো এক পক্ষের সাথে থাকবে। তারপর সে ওয়াকীল দু’জন সাক্ষীর সামনে বিবাহ করিয়ে দিবে। তাহলে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে। (আল মাবসুত ৫/১৬-১৭, ফাতওয়ায় উসমানী-২/৩০৬) এছাড়া সরাসরি মোবাইলে বা টেলিফোনে প্রস্তাব ও কবুল করার দ্বারা বিবাহ সহীহ হবে না।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
আরো পড়ুন– ☞ বিয়ে করা না করার সিদ্ধান্তহীনতায় আছি; কী করব? ☞ ☞ অভিবাবককে না জানিয়ে গোপনে বিয়ে করা যাবে কিনা? ☞ ছেলে-মেয়ে বালেগ (প্রাপ্তবয়স্ক) কখন হয়?প্রেম ও বিয়ে সম্পর্কে একটি প্রশ্নের উত্তর ☞ ☞ কাজীর ন্যূনতম যোগ্যতা কতটুকু থাকতে হবে? ☞ মোহর: স্ত্রী মাফ করে দিলে মাফ হয় কিনা? ☞ ☞ ☞ ☞ মায়ের খালাকে বিয়ে করা যাবে কি? ☞ মোহরের ক্ষেত্রে উত্তম পন্থা ☞ ☞ কোন দিন বিয়ে করা যাবে না? ☞ স্ত্রীর তালাকপ্রাপ্ত বড় বোনকে বিয়ে করা যাবে কি? ☞ তিনবার কবুল না বললে কি বিবাহ হবে না? ☞ সৎ বাবার ভাইকে বিয়ে করা ☞ ছেলে-মেয়ে বালেগ (প্রাপ্তবয়স্ক) কখন হয়?