জিজ্ঞাসা–৩৫৬: আসসালামু আলাইকুম। ফরয রোজা রেখে পরনারীর সঙ্গে যিনা করলে কি রোজা ভাঙ্গবে? যদি ভাঙ্গে তাহলে কি শুধু কাজাই যথেষ্ঠ হবে?–ইচ্ছাকৃতভাবে নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা হয় নি।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
এজাতীয় লোক কত বড় জঘন্যতর পাপে রমজানের মত পবিত্র মাসে লিপ্ত হয়; ভাবতেও কষ্ট হয়। জানা নেই, এমন লোক এই হাদীসের প্রতিপাদ্য কিনা! রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘এ মাস মুমিনের জন্য গনীমত আর মুনাফিকের জন্য ক্ষতির কারণ।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৮৩৬৮)
মূলতঃ রোযা রেখে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে দু’টি মারাত্মক গুনাহ হয়–
১-অযথাই রোযা নষ্ট করা।
২-ব্যভিচারের মত মারাত্মক গোনাহ করা।
সুতরাং প্রথমত, এমন ব্যক্তির উচিত, উক্ত দু’টি গুনাহর জন্য নিষ্কলুষভাবে আল্লাহর কাছে তওবা করা।
দ্বিতীয়ত, এমন ব্যক্তির জন্য কাযা যথেষ্ট নয়; বরং রোযার কাফফারাও দিতে হবে।
আর রোযার কাফ্ফারা হল, লাগাতার ষাট দিন রোজা রাখা। লাগাতার ষাট দিন রোযা রাখার সময় যদি এক দিনও বাদ যায়, তাহলে আবার শুরু থেকে গণনা আরম্ভ হবে, পূর্বেরগুলো বাদ হয়ে যাবে। যদি কেউ লাগাতার ষাট দিন রোযা রাখতে সক্ষম না হয়, তাহলে প্রতি রোযার পরিবর্তে একজন গরীবকে দুবেলা খাবার খাওয়াবে অথবা পৌনে দু’ কেজি গমের মূল্য সদকা করবে। এটাকে বলা হয় ফিদিয়া । মনে রাখতে হবে, রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না। দলিল–
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ ﷺ رَجُلٌ فَقَالَ: هَلَكْتُ، قَالَ: وَمَا أَهْلَكَكَ؟ قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ، فَقَالَ النَّبِيُّ ﷺ : أَعْتِقْ رَقَبَةً. قَالَ: لَا أَجِدُ، قَالَ: صُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ. قَالَ: لَا أُطِيقُ، قَالَ: أَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজী ﷺ এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। নবীজী ﷺ জিজ্ঞেস করলেন, তোমাকে কে ধ্বংস করেছে? সাহাবী বললেন, রমজানে আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। নবীজী ﷺ তাকে বললেন, তাহলে এর বদলে একটি গোলাম আযাদ কর। সাহাবী বললেন, আমি এতে সক্ষম নই। নবীজী ﷺ বললেন, তাহলে লাগাতার দুই মাস রোজা রাখ। সাহাবী বললেন, আমি এতেও সক্ষম নই। তখন নবীজী ﷺ বললেন, তাহলে তুমি ৬০ জন মিসকিনকে খানা খাওয়াও। (সুনানে ইবনে মাজাহ ১৬৭১, মুসনাদে আহমাদ ৬৯৪৪)
রোযা ভঙ্গের কারণসমূহ বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুন–জিজ্ঞাসা নং–৩৫৪
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী