জিজ্ঞাসা–৭৩২: মানুষ নিজের অজান্তেই অনেক সময় শিরক করে পেলে। শিরকে আকবারের কারণে মানুষ মুশরিক হয়ে যায়। যার শাস্তি চিরস্থায়ী জাহান্নাম। শিরকে আযগারের কারণেও কি মানুষ চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে?–abdul aziz
জবাব: শিরকে আকবার মানে বড় শিরক। শিরকে আসগার মানে ছোট শিরক। এই দুই শিরকের মাঝে মূলত পাঁচটি পার্থক্য পাওয়া যায়।
১- শিরকে আকবার আল্লাহ তাআলা মাফ করেন না। পক্ষান্তরে শিরকে আসগারের ব্যাপারে ওলামায়ে কেরাম দুটি মত পেশ করেছেন। কেউ বলেন, শিরকে আসগার আল্লাহ তাআলার ইচ্ছাধীন; তিনি চাইলে এটি মাফ করে দিতে পারেন, আর চাইলে শাস্তিও দিতে পারেন। আর কেউ বলেন, শিরকে আসগার করে কেউ মারা গেলে, অবশ্যই সে শাস্তি পাবে তবে সে চিরকালের জন্য জাহান্নামে যাবে না।
২- শিরকে আকবার সকল আমল নষ্ট করে দেয়। পক্ষান্তরে শিরকে আসগার কেবল ওই আমলকে নষ্ট করে যে আমলের সঙ্গে উক্ত শিরক সম্পৃক্ত থাকে। যেমন, রিয়া কেবল ওই আমল নষ্ট করে যে আমলে এটি পাওয়া যায়।
৩- শিরকে আকবার করলে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়। পক্ষান্তরে শিরকে আসগার করলে সে ইসলাম থেকে বের হয় না; বরং তার সঙ্গে আত্মীয়তা করা যায়, তার জবাইকৃ্ত পশু হালাল, সে উত্তরাধিকারসত্ত্বের মালিক হয়, মারা গেলে তার জানাযা পড়া যায় এবং তাকে মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা যায়।
৪- শিরকে আসগার করলে সে জাহান্নামে চিরকালের জন্য যাবে। পক্ষান্তরে শিরকে আসগার করলে সে অন্যান্য কবিরা গুনাহকারীর মত চিরকালের জন্য জাহান্নামে যাবে না।
৫- শিরকে আকবার করলে তাকে মুশরিক বলা হবে। আর শিরকে আসগার করলে তাকে ফাসিক বলা হবে। (তাইসীরুল আযীযিল হামীদ শরহু কিতাবিত তাওহীদ ৯৮)
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمْ الشِّرْكُ الأَصْغَرُ . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ : وَمَا الشِّرْكُ الأَصْغَرُ؟ قَالَ :الرِّيَاء . إِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ يَوْمَ تُجَازَى الْعِبَادُ بِأَعْمَالِهِمْ اذْهَبُوا إِلَى الَّذِينَ كُنْتُمْ تُرَاءُونَ بِأَعْمَالِكُمْ فِي الدُّنْيَا فَانْظُرُوا هَلْ تَجِدُونَ عِنْدَهُمْ جَزَاءً
আমি সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি তোমাদের ব্যাপারে ভয় পাই তা হলো শিরক আসগার বা ক্ষুদ্রতর শিরক। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসূল, শিরক আসগার কী? তিনি বলেন: রিয়া বা প্রদর্শনেচ্ছা। কিয়ামতের দিন যখন মানুষদেরকে তাদের কর্মের প্রতিফল দেওয়া হবে তখন মহান আল্লাহ এদেরকে বলবেন, তোমরা যাদের দেখাতে তাদের নিকট যাও, দেখ তাদের কাছে তোমাদের পুরস্কার পাও কি না! (মুসনাদে আহমদ ৫/৪২৮-৪২৯)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী