জিজ্ঞাসা–২৯৩: আসসালামু আলাইকুম,বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় যে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনাতে সালাতুল হাজত আদায় করার কথা বলা হয়ে থাকে। হযরতের কাছে প্রশ্ন, সালাতুল হাজত আদায় করার কোন নির্ধারিত পদ্ধতি রয়েছে কী? অনুগ্রহ করে জানিয়ে বাধিত করবেন।জাযাকাল্লাহু খাইরান।–আবদুল হাই।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
প্রশ্নকারী প্রিয় মুসলিম ভাই, মূলতঃ সালাতুল হাজত একটি সাধারণ নফল নামাজ। এটি আদায় করার আলাদা কোনো নিয়ম নেই। স্বাভাবিক নামাজের মতোই উত্তমভাবে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বেন। নামাজ শেষে আল্লাহ তাআলার হামদ ও ছানা (প্রসংসা) এবং রাসূল ﷺ এর ওপর দরুদ পাঠ করে নিজের মনের কথা ব্যক্ত করে আল্লাহর নিকট দোয়া করবেন।
এ নামাজ সম্পর্কে এক হাদিসে এভাবে এসেছে–
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ مَنْ كَانَتْ لَهُ إِلَى اللَّهِ حَاجَةٌ أَوْ إِلَى أَحَدٍ مِنْ بَنِي آدَمَ فَلْيَتَوَضَّأْ وَلْيُحْسِنِ الْوُضُوءَ ثُمَّ لْيُصَلِّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ لْيُثْنِ عَلَى اللَّهِ وَلْيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ ﷺ ثُمَّ لْيَقُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ وَالسَّلاَمَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ لاَ تَدَعْ لِي ذَنْبًا إِلاَّ غَفَرْتَهُ وَلاَ هَمًّا إِلاَّ فَرَّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلاَّ قَضَيْتَهَا يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
অর্থাৎ, আবদুল্লাহ্ ইবনু আবী আওফা থেকে বর্ণিত যে, রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন যে, আল্লাহর কাছে বা কোন আদম-সন্তানের কাছে যদি কারো কোন প্রয়োজন হয় তবে সে যেন অজু করে এবং খুব সুন্দরভাবে যেন তা করে। পরে যেন দু’রাকআত নামাজ আদায় করে, এরপর যেন আল্লাহর হামদ করে ও রাসূল ﷺ-এর উপর দরূদ সালামের পর এই দোয়াটি পড়ে:
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ وَالسَّلاَمَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ لاَ تَدَعْ لِي ذَنْبًا إِلاَّ غَفَرْتَهُ وَلاَ هَمًّا إِلاَّ فَرَّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلاَّ قَضَيْتَهَا يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
অর্থ- আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি অতি সহিষ্ণু ও দয়ালু, সকল দোষ-ক্রটি থেকে পবিত্র তিনি, মহান আরশের প্রভু। সকল প্রশংসা আল্লাহর, তিনি সারা জাহানের রব। আপনার কাছেই আমরা যাঞ্ছা করি, আপনার রহমত আকর্ষণকারী সকল পূণ্যকর্মের ওয়াসীলায়, আপনার ক্ষমা ও মাগফিরাত আকর্ষণকারী সকল ক্রিয়াকাণ্ডের বরকত, সকল নেক কাজ সাফল্য লাভের এবং সব ধরনের গুনাহ থেকে নিরাপত্তা লাভের। আমার কোন গুনাহ যেন মাফ ছাড়া না থাকে। কোন সমস্যা যেন সমাধান ছাড়া না যায় আর আমার এমন প্রয়োজন যাতে রয়েছে আপনার সন্তুষ্টি তা যেন অপূরণ না থাকে, হে আর রাহমানুর রাহিমীন; হে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। (ইবনু মাজাহ ১৩৮৪, তিরমিজী ৪৭৯)
সুতরাং দোয়ার ক্ষেত্রে হাদিস শরিফে বর্ণিত উপরোক্ত দোয়াটি অন্যান্য দোয়ার সাথে নামাজের শেষে বিশেষভাবে পড়া যেতে পারে। তবে পড়তেই হবে–এমন নয়। আপনি আপনার মত করে দোয়া করলেও কোনো অসুবিধা নেই।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
আমি তো ওই দোয়া পারিনা, দোয়া কি দোয়ায় মাছুরা পড়ার আগে পড়তে হবে? ওই দোয়া না পড়ে অন্য দোয়া পড়লে সেটা কখন পড়বো?
পড়তেই হবে–এমন নয়। আপনি আপনার মত করে দোয়া করলেও কোনো অসুবিধা নেই। আর অন্য দোয়া পড়বেন দোয়ায়ে মাসুরার পরে।
আসসালামুআলাইকুম,
আমার নেসাব পরিমান সম্পদ যেমন – সাড়ে সাত ভরি স্বর্ন বা তার সমপরিমান টাকা নেই।কিন্তু, আমার দুইটা বীমা একাউন্ট মিলে ৮০,০০০+ টাকা আছে যা এক বছরের উপরে হল।এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এই ৮০,০০০টাকার উপর কি আমাকে যাকাত দিতে হবে?????
যেহেতু যাকাতের নিসাবের মানদণ্ড কেবল স্বর্ণ নয় বরং রূপাও আছে তাই যাকাতযোগ্য সকল সম্পদ সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হলে হিসাব করে যাকাত দিতে হয়।(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৬৬,৭০৮১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৯৩) সুতরাং আপনার উক্ত আশি হাজার টাকার যাকাত দিতে হবে।
জাযাকাল্লাহু খাইরান। আপনাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করে উত্তর প্রদানের জন্য শোকরিয়া। আল্লাহ তায়ালা আপনাদের প্রচেষ্টাকে কবুল করেন। দুনিয়া ও আখিরাতের যাবতীয় কল্যাণ দান করেন।