জিজ্ঞাসা–১১৩৬: আজকাল বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে শিক্ষা উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে ৷ আমিও এইচ এস সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আর্থিক সমস্যা থাকায় আর এই বিষয়ে না জানার কারণে এক ব্যাংক হতে এই ধরনের উপবৃত্তি গ্রহণ করেছি। এক বছরের সম্পূর্ণ টাকাও পেয়েছি৷ একদিন আমি এই নিয়ে ভাবলাম যে, আমি তো তাদের সুদের উপার্জন থেকেই এই বৃত্তিটা গ্রহণ করছি, আবার সুদের সংজ্ঞা অনুযায়ী বলতে গেলে আমি তো সুদও নিচ্ছি না ৷ হযরতের কাছে প্রশ্ন-১. এই ধরনের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে শিক্ষা উপবৃত্তি গ্রহণ করার ব্যাপারে মুফতিয়ানিকেরাম কী বলেন? প্রশ্ন-২. কোন কোন ক্ষেত্রে এই ধরনের উপবৃত্তি গ্রহণ করা যাবে? প্রশ্ন-৩. আমি যে আমার আর্থিক সমস্যার কারণে এক বছরের সম্পূর্ণ টাকা গ্রহণ করে ফেলেছি এখন আমার কি কোনো করণীয় আছে কিনা?–Sohel
জবাব: নিয়ম হল, সুদের টাকা মূল মালিককে ফেরত দেয়া। আর যদি তা অসম্ভব হয় তাহলে সুদের টাকা সাওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিবদের মধ্যে অথবা জনকল্যাণমূলক কাজে দান করে দেয়া। সাওয়াবের নিয়ত করা যাবে না কারণ, কেননা, সুদী পন্থায় অর্জিত অর্থের প্রকৃত মালিক সে নয়।
সুতরাং যদি আপনি গরিব (যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত) ও হাজতমন্দ হন তাহলে ব্যাংকের উক্ত শিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করতে পারবেন। এর দলিল হল,
আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাযি. বলেন, তার নিকটে জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, আমার একজন প্রতিবেশী আছে যে সূদ খায় এবং সর্বদা আমাকে তার বাড়িতে খাওয়ার জন্য দাওয়াত দেয়। এক্ষণে আমি তার দাওয়াত কবুল করব কি? জওয়াবে তিনি বললেন, مَهْنَأَهُ لَكَ وَإِثْمُهُ عَلَيْهِ ‘তোমার জন্য এটি বিনা কষ্টের অর্জন এবং এর গুনাহ তার উপরে।’ (মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১৪৬৭৫)
পক্ষান্তরে যদি আপনি গরিব (যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত) না হন তাহলে ব্যাংকের উক্ত শিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করা আপনার জন্য হারাম হয়েছে। এমতাবস্থায় আপনার করণীয় হল, আপনি উক্ত টাকা সাওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিবদের মধ্যে অথবা জনকল্যাণমূলক কাজে দান করে দিবেন।
من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
যে ব্যক্তি হারাম সম্পদের মালিক হয় আর যদি তা প্রকৃত মালিকের কাছে ফেরত দেয়া অসম্ভব হয় তাহলে তা ফকিরদের মাঝে দান করে দিবে। (মাআ’রিফুসসুনান ১/৩৪)
উল্লেখ্য, উল্লেখিত সূরতে উক্ত টাকা ব্যাংককে ফেরত দিবে না, কেননা, মূলত উক্ত টাকার প্রকৃত মালিক ব্যাংক নয়।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী