স্বামী তাঁর স্ত্রীর সতীত্ব নিয়ে সন্দিহান…

জিজ্ঞাসা–৬৯৪: আমি একজন অসহায় নারী। আমার স্বামী সব দিক থেকে ভালো। আমার প্রতি যথেষ্ট খেয়াল রাখে। কিন্তু সে প্রায় সময় আমার সতীত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলে। সে বলে বাসর রাতের প্রথম মিলনে সে কোনো রক্ত দেখে নি। এজন্য সে এও বলে, আমি তোমার অতীত অপরাধ মাফ করে দিয়েছি। কিন্তু ভবিষ্যতে এমনটি হলে ক্ষমা করব না। অথচ আল্লাহর কসম, আমি কখনও খারাপ কাজ করি নি। আমি এখন কী করব? প্লিজ পরামর্শ দিন।–নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।

জবাব: প্রিয় বোন, অনেকের ধারণা সতীচ্ছেদ ছিঁড়ে গেলে সেটা যে কোনো পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের কারণেই হয়েছে– এই ধারণা একেবারেই অমূলক। অনেকের ধারণা প্রথম মিলনে সতীচ্ছেদ ছিঁড়ে রক্তপাত হয়। এটাও ঠিক নয়। কেননা, সতীচ্ছেদ সম্পর্কিত বাস্তব বিষয় হলো –সাঁতার, খেলাধূলা, বয়স বেশি হওয়া বা অন্য কোনো কারণে সতীচ্ছেদ নষ্ট হতে পারে। এমনকি সতীচ্ছেদ ছিঁড়লেই যে রক্তক্ষরণ হবে এমন বাধ্যবাধকতাও নেই; বরং রক্তশূন্যতা বা মাসিক পিরিয়ডের পর রক্তক্ষরণ ছাড়াও সতীচ্ছেদ ছিঁড়ে যেতে পারে। সুতরাং যদি আপনার স্বামী বাস্তবেই বুদ্ধিমান হয় এবং আপনার প্রতি ভালোবাসা থাকে তাহলে তার উচিত এই বাস্তবতাকে মেনে নেয়া এবং আপনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখা।

আপনার স্বামীর এও জানা উচিত যে, আপনার স্বামীর এই কর্মে সবচে’ বেশি আনন্দিত হয় শয়তান। কেননা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নষ্ট করতে পারলেই সে সর্বাধিক খুশি হয়। জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত হাদিস শরিফে এসেছে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ বলেছেন,

إِنَّ إِبْلِيسَ يَضَعُ عَرْشَهُ عَلَى الْمَاءِ ، ثُمَّ يَبْعَثُ سَرَايَاهُ ، فَأَدْنَاهُمْ مِنْهُ مَنْزِلَةً أَعْظَمُهُمْ فِتْنَةً ، يَجِيءُ أَحَدُهُمْ فَيَقُولُ : فَعَلْتُ كَذَا وَكَذَا ، فَيَقُولُ : مَا صَنَعْتَ شَيْئًا ! قَالَ : ثُمَّ يَجِيءُ أَحَدُهُمْ فَيَقُولُ : مَا تَرَكْتُهُ حَتَّى فَرَّقْتُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ امْرَأَتِهِ ، قَالَ : فَيُدْنِيهِ مِنْهُ ، وَيَقُولُ : نِعْمَ أَنْتَ

ইবলিস পানির উপর তার  সিংহাসন স্থাপন করে তার বাহিনী পাঠায়। তাদের মধ্যে তার সর্বাধিক নৈকট্যপ্রাপ্ত সেই যে সর্বাধিক ফিতনা সৃষ্টিকারী। তাদের একজন এসে বলে, আমি অমুক অমুক কাজ করেছি। সে বলে, তুমি কিছুই কর নি। অতঃপর অন্যজন এসে বলে, অমুকের সাথে আমি সকল প্রকার ধোঁকার আচরণই করেছি। এমনকি তার থেকে তার স্ত্রীকে বিচ্ছিন্ন না করা পর্যন্ত আমি তাকে ছেড়ে দেই নি। অতঃপর শয়তান তাকে তার নিকটবর্তী করে নেয় এবং বলে হ্যাঁ, তুমি একটি বড় কাজ করেছ। (মুসলিম ৫০২৩)

আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, তিনি আপনার স্বামীকে সুস্থ চিন্তার তাওফিক দিন এবং দাম্পত্যজীবনের সমূহ কল্যাণ তিনি আপনাদের দান করুন। আমিন।

والله اعلم بالصواب
আরো পড়ুন–

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five − two =