হারাম উপার্জনকারীর হাদিয়া গ্রহণ করা যাবে কি?

জিজ্ঞাসা–৩৪৪: আসসালামু আ’লাইকুম,কেউ যদি আমাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে চায় এবং আমি যদি এটা জানি যে তার ওই অর্থ বৈধ উপায়ে অর্জিত নয় তাহলে তার কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য বা উপহার নেওয়া আমার জন্য যায়েজ হবে কি?–মোঃ আশিকুর রহমান।

জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

অনেক লোক সরাসরি হারাম উপার্জনে লিপ্ত। তার অন্য কোনো বৈধ উপার্জন নেই। তাহলে এমন ব্যক্তির আর্থিক সাহায্য বা হাদিয়া হারাম থেকে হয়েছে বলেই প্রতীয়মান হবে। তাই তার আর্থিক সাহায্য বা হাদিয়া গ্রহণ করা হারাম হবে। কেননা, আল্লাহ তাআলা কেবল হালাল ভক্ষণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ ”হে ঈমানদারগণ! তোমাদেরকে আমি যে রিজিক দিয়েছি তাত্থেকে হালালগুলো ভক্ষণ করো”। (সূরা বাকারা : ১৭২)

রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

إِنَّ الْحَلاَلَ بَيِّنٌ وَإِنَّ الْحَرَامَ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبِهَاتٌ لاَ يَعْلَمُهُنَّ كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ فَمَنِ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ اسْتَبْرَأَ لِدِينِهِ وَعِرْضِهِ وَمَنْ وَقَعَ فِى الشُّبُهَاتِ وَقَعَ فِى الْحَرَامِ

”নিশ্চয় হালাল স্পষ্ট; হারামও স্পষ্ট। হালাল ও হারামের মাঝে অনেক সন্দেহযুক্ত বিষয় রয়েছে যা অনেক মানুষই জানে না। সন্দেহযুক্ত বিষয় থেকে বিরত থাকলে তার দীন ও সম্মান হেফাজতে থাকবে। পক্ষান্তরে সন্দেহযুক্ত বিষয়াবলিতে লিপ্ত হলে সে যেন হারামেই লিপ্ত হল…।” (সহিহ মুসলিম ৪১৭৮)

তবে তার যদি অবৈধ উপার্জনের পাশাপাশি বৈধ উপার্জনও থাকে তখন এ সাহায্য বা হাদিয়া বৈধ উপার্জন থেকেও হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার অবৈধ উপার্জন থেকেও দিতে পারে। তাই তখন তার সাহায্য বা হাদিয়া গ্রহণ করা জায়েয হলেও অনুত্তম।

ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বলেন, তার নিকটে জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, আমার একজন প্রতিবেশী আছে যে সূদ খায় এবং সর্বদা আমাকে তার বাড়িতে খাওয়ার জন্য দাওয়াত দেয়। এক্ষণে আমি তার দাওয়াত কবুল করব কি? জওয়াবে তিনি বললেন, مَهْنَأَهُ لَكَ وَإِثْمُهُ عَلَيْهِ ‘তোমার জন্য এটি বিনা কষ্টের অর্জন এবং এর গোনাহ তার উপরে’। (মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১৪৬৭৫)

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 2 =