জিজ্ঞাসা–১৪৮১: আমার প্রশ্ন হলো, আমার এক বান্ধবীর ফ্যামিলকে লুকিয়ে বিয়ে করেছে। পরে ফ্যামেলিকে জানানো হবে। সে বিয়ে করেছে ইসলামিকভাবে। সব কিছু নিয়ম ধরে বিয়ে হয়েছে। কিন্তু বিয়ে তে সাক্ষী ছিল শুধু যে কাজি বিয়ে করিয়েছে ওই কাজি আর বউ বর। এছাড়া আার কেউ ছিল না। এখন জানলাম যে, ইসলামের নিয়মে বিয়ে হলে ২ জন সাক্ষী থাকা দরকার। কিন্তু আগে জানতাম না এই কথাটা। আর যে কাজি বিয়ে করিয়েছে সেও এই কথা বলেনি। এখন ওদের এই বিয়েটা কি হয়েছে, নাকি আবার বিয়ে করতে হবে?-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
জবাব: প্রশ্নোক্ত বিয়ের কোনো মূল্য নেই। কেননা, ইসলামি শরিয়তের বিচারে এটি বিয়েই হয় নি। ইসলামি শরিয়তে বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য আবশ্যক ও ন্যূনতম শর্ত হলো, বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। সাক্ষী এমন দুইজন পুরুষ (স্বাধীন) সাক্ষী বা একজন পুরুষ (স্বাধীন) ও দুইজন মহিলা সাক্ষী হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল বলার উভয় বক্তব্য উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। (আদ-দুররুল মুখতার ৩/৯ ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/২৬৮)
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لا نكاح إلا بوليّ وشاهدين
অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই। (আহমাদ, বুলূগুল মারাম ৯৭৬, বিয়ে অধ্যায়)
অপর হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لا تُزَوِّجُ الْمَرْأَةُ نَفْسَهَا فَإِنَّ الزَّانِيَةَ هِيَ الَّتِي تُزَوِّجُ نَفْسَهَا
মহিলা নিজে নিজেকে বিয়ে দিতে পারবে না। ব্যভিচারিনী নিজে নিজেকে বিয়ে দেয়। (ইবনু মাজাহ ১৭৮২)
আবূ যুবাইর মক্কী রহ. থেকে বর্ণিত, ওমর রাযি.-এর নিকট এমন একটি বিয়ের ঘটনা উপস্থিত করা হল, যে বিয়েতে একজন পুরুষ ও একজন নারী ব্যতীত অন্য কোন সাক্ষী ছিল না। তখন তিনি বললেন,
هَذَا نِكَاحُ السِّرِّ وَلَا أُجِيزُهُ وَلَوْ كُنْتُ تَقَدَّمْتُ فِيهِ لَرَجَمْتُ
এটা গোপন বিয়ে। আমি এটাকে জায়েয বলি না। যদি আমার এ সিদ্ধান্ত আমি পূর্বে প্রকাশ করতাম তবে আমি তোমাকে শাস্তি (রজম) দিতাম। (মুয়াত্তা মালিক, বিবাহ সম্পর্কিত অধ্যায়)
সুতরাং উক্ত ছেলে-মেয়ের উভয়ের কর্তব্য হল, খাঁটি দিলে তাওবা ইস্তিগফার করা এবং অভিবাবকের সম্মতিতে কমপক্ষে দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ে শুদ্ধ করে নেয়া।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী