মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বিয়ে দিলে হুকুম কী?

জিজ্ঞাসা–১৬১৩: যদি মেয়ে মন থেকে রাজি না থাকে, কিন্তু পরিবারের চাপে বাধ্য হয়ে কবুল বলে তাহলে কি বিয়েটি জায়েয হবে কি-না?–আসিফ।

জবাব:

এক. বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলে কিংবা মেয়ের সম্মতি অপরিহার্য। ইসলামের দৃষ্টিতে জোর করে বিয়ে দেয়া অভিভাবকের জন্য নাজায়েজ এবং আল্লাহর নাফরমানির শামিল।। কেননা, এর কারণে দাম্পত্যজীবনের মূল নিয়ামক শক্তি প্রেম-ভালোবাসা ও পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্প্রীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আল্লাহর কাছে পানাহ চাই, অনেক সময় এই দাম্পত্য-কলহ উত্যুঙ্গ আকার ধারণ করে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটে যায়। এজন্য রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

لاَ تُنْكَحُ الْبِكْرُ حَتَّى تُسْتَأْذَنَ وَلاَ الثَّيِّبُ حَتَّى تُسْتَأْمَرَ فَقِيلَ يَا رَسُولَ اللهِ كَيْفَ إِذْنُهَا قَالَ إِذَا سَكَتَتْ

কুমারী নারী বিয়ে দেয়া যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার অনুমতি গ্রহণ করা হবে। আর বিধবা নারী বিয়ে দেয়া যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার মত গ্রহণ করা হবে। প্রশ্ন করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! তার অনুমতি কেমন করে? তিনি বললেন, যখন সে নীরব থাকে। (বুখারী ৬৪৯৭)

দুই. জোর করে বিয়ে দেয়া যদিও একটি অনৈতিক কাজ, তবে কুমারী মেয়ের সম্মতি থাকলেই জোরপূর্বক হলেও বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। (রদ্দুল মুহতার ৪/৮৭ বাদায়ে’ ২/৬০২) কেননা, হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা রাযি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

ثَلاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ : النِّكَاحُ ، وَالطَّلاقُ ، وَالرَّجْعَةُ

তিনটি বিষয় এমন রয়েছে যা গোস্বায় হোক বা হাসি ঠাট্টায় হোক সর্বাবস্থায় কার্যকরী হয়ে থাকে। বিবাহ, তালাক ও রজয়াত। (আবু দাউদ ২১৯৪ তিরমিযি ১১৮৪)

সেই হিসেবে উক্ত মেয়ে উক্ত বিয়েতে মন থেকে রাজি না থাকলেও যদি বিয়ের মজলিসে বিয়ের জন্য ইসলামের যেসব শর্ত আছে, পূরণ করে বিয়ে সম্পাদিত হয়, তাহলে বিয়ে হয়ে গেছে। কারণ বিধান প্রযোজ্য হয় বাহ্যিক অবস্থার উপর। আর মেয়ে কবুল বলাটা প্রমাণ করে বিয়েতে তার সম্মতি ছিল।

والله أعلم بالصواب

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × four =