ইসলামের দৃষ্টিতে টিভি দেখা কি হারাম?

জিজ্ঞাসা–১০২৮: ইসলামের দৃষ্টিতে টিভি দেখা কী হারাম?–Asif

জবাব: প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, এক্ষেত্রে মূলনীতি হল, যে সকল দৃশ্য বাস্তবে দেখা নাজায়েয, সেগুলো টিভিতেও দেখা নাজায়েয। আর যে সকল দৃশ্য বাস্তবে দেখা জায়েয, সেগুলো টিভিতেও দেখা জায়েয। আর বলা বাহুল্য যে, যেহেতু বর্তমানের টিভি মানেই যেখানে রয়েছে বিজ্ঞাপনের নামে অশ্লীলতার ছড়াছড়ি, নাটক সিনেমার নামে থৈ থৈ করা নোংরামী, নাচ-গান হারাম প্রেমসহ নানা রগরগে জঘন্য বিষয় তো আছেই, সুতরাং এসবের কারণে বর্তমানে টিভি দেখাকে হারাম বলা ছাড়া কোনো উপায় নেই, যা থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা প্রত্যেক মুমিনের ঈমানি-কর্তব্য।

তবে হ্যাঁ, যদি এমন কোনো চ্যানেল থাকে, যাতে উপরোক্ত শরিয়ত-নিষিদ্ধ কোনো কিছুর প্রদর্শন থাকে না; বরং শুধুই শরিয়ত-অনুমোদিত বিষয়গুলো প্রচার করে তাহলে উক্ত চ্যানেল দেখাকে হারামও বলা যাবে না।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

وَلَا تَقْرَبُوا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ

নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতার কাছেও যেও না, চাই তা প্রত্যক্ষ হোক আর পরোক্ষ হোক। (সূরা আনআম ১৫১)

হাদীস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

ثَلَاثَةٌ لَا تَرَى أَعْيُنُهُمُ النَّارَ: عَيْنٌ حَرَسَتْ فِي سَبِيلِ اللهِ، وَعَيْنٌ بَكَتْ مِنْ خَشْيَةِ اللهِ، وَعَيْنٌ غَضَّتْ عَنْ مَحَارِمِ اللهِ

তিন শ্রেণীর লোক যাদের চোখ জাহান্নাম দেখবে না। যে চোখ আল্লাহর রাস্তায় পাহারা দিয়েছে। যে চোখ আল্লাহর ভয়ে কেঁদেছে। যে চোখ আল্লাহর নিষিদ্ধ স্থান থেকে বিরত থেকেছে। (তাবরানি: ১০০৩)

অপর হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

اَلْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظْرُ وَالْاُذُنَانِ زِنَاهُمَا الْاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُمَا الْكَلَامُ وَالْيَدُ زِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهُمَا الخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه

দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা, জিহবার ব্যভিচার হল, [পরনারীর সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে। (সহীহ মুসলিম ২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ ৮৯৩২)

আরো বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুন–হাদিসের আলোকে গান-বাজনা

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen + eight =