বর্তমানে ইঞ্জিল কিতাবের অনুসরণকারী পরকালে নাজাত পাবে কি?

জিজ্ঞাসা–১১৫৬: আল্লাহ হযরত ঈসা (আ.)-কে ইঞ্জিল কিতাব দিয়ে বনি ইসরাঈল সম্প্রদায়ের নিকট পাঠিয়েছেন এবং আমি জানি ইঞ্জিল শুধু বনি ইসরাঈলদের জন্য ছিল। এখন বর্তমান বনি ইসরাঈল সম্প্রদায় যদি কুরআন এবং হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসরণ বাদ দিয়ে হযরত ইসা (আ.) এবং ইঞ্জিলের অনুসরণ করে তাহলে তারা কি পরকালে নাজাত পাবে? আল্লাহ আপনার ইলমের মধ্যে বরকত দান করুক।–মুহাম্মদ সাজিদ।

জবাব: প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, মূল ইঞ্জিলের অনুসরণ কেউ চাইলেই বর্তমানে সম্ভব নয়। কেননা, এটা প্রমাণিত সত্য যে, বর্তমানে কুরআন মজিদ ছাড়া কোনো আসমানি-কিতাব স্বমহিমায় অবিকৃত অবস্থায় নেই। উপরন্তু কুরআন মজিদ নাজিল হওয়ার মাধ্যমে অতীত সকল আসমানি-কিতাব রহিত হয়ে গিয়েছে বিধায় যেমনিভাবে বর্তমানে ঈসা আ.-এর শরিয়ত অনুসরণ করা অনুমোদিত নয়, অনুরূপভাবে কেবল ইঞ্জিলের উপর ঈমান আনাও যথেষ্ট নয়। বরং বর্তমানে মুমিন হিসেবে স্বীকৃতি পেতে হলে মুহাম্মদ ﷺ-এর উপর নাজিলকৃত কুরআন মজিদের উপরও ঈমান আনতে হবে  এবং তার অনুসরণ করতে হবে। যে ব্যক্তি কুরআন মজিদের উপর ঈমান আনবে না; সে মুমিন হতে পারবে না এবং পরকালে নাজাতও পাবে না। কেননা, জান্নাতের যাওয়ার জন্য ঈমান পূর্বশর্ত। একারণে রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন,

وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ يَهُودِيٌّ وَلاَ نَصْرَانِيٌّ ثُمَّ يَمُوتُ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ إِلاَّ كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ

সে সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! ইহুদী হোক আর খৃস্টান হোক, যে ব্যক্তিই আমার এ রিসালাতের খবর শুনেছে অথচ আমার রিসালাতের উপর ঈমান না এনে মৃত্যুবরণ করবে, অবশ্যই সে জাহান্নামী হবে। (সহিহ মুসলিম ২৮৩)

তাফসিরে ইবনে কাসীরে এসেছে,

فكان إيمان اليهود أنه من تمسك بالتوراة وسنة موسى عليه السلام حتى جاء عيسى فلما جاء عيسى كان من تمسك بالتوراة وأخذ بسنة موسى فلم يدعها ولم يتبع عيسى كان هالكا ، وإيمان النصارى أن من تمسك بالإنجيل منهم وشرائع عيسى كان مؤمنا مقبولا منه حتى جاء محمد ﷺ فمن لم يتبع محمدا ﷺ منهم ويدع ما كان عليه من سنة عيسى والإنجيل كان هالكا

ইহুদিদের মধ্য থেকে মুমিন ওই ব্যক্তিকে বলা হবে, যে তাওরাত ও মুসা আ.-এর শরিয়ত গ্রহণ করেছিল; যতক্ষণ না ঈসা আ. এসেছেন। ঈসা আ.-এর আগমণের পর তখনও যে লোক তাওরাত ও মুসা আ.-এর শরিয়ত গ্রহণ করে রেখেছিল; তাঁর শরিয়ত ছেড়ে দিয়ে তখনও ঈসা আ.-এর শরিয়ত গ্রহণ করে নি–সে ধ্বংস (কাফের) হয়ে গিয়েছিল। আর নাসারাদের মধ্য থেকে মুমিন ওই ব্যক্তিকে বলা হবে, যে ইঞ্জিল ও ঈসা আ.-এর শরিয়ত গ্রহণ করেছিল; যতক্ষণ না মুহাম্মদ ﷺ এসেছেন। মুহাম্মদ ﷺ-এর আগমণের পরও যে লোক ইঞ্জিল ও ঈসা আ.-এর শরিয়ত গ্রহণ করে রেখেছে; মুহাম্মদ ﷺ-এর অনুসরণ করে নি এবং ঈসা আ.-এর শরিয়ত বর্জন করে নি– সে ধ্বংস (কাফের) হয়ে গিয়েছে। (তাফসিরে ইবনে কাসীর, সূরা বাকারা ৬২)

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 3 =