জিজ্ঞাসা–১২৫০: ইদানীং প্রচলিত ওয়েব সিরিজ কুরুলুস ওসমান কি দেখা জায়েয হবে?–মাহবুব রহমান।
জবাব: প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, বেশ কয়েকটি কারণে প্রশ্নেল্লেখিত সিরিয়ালগুলো দেখা জায়েয হবে না। যেমন,
প্রথমত, নাটক ওয়েব সিরিজ অথবা ফিল্ম যাই বলি না কেন, তাতে মিউজিক, নাচ-গান ও বেগানা নারীদের উপস্থিতি বিদ্যমান। যার সবই শরিয়তের দৃষ্টিতে অবৈধ।
মিউজিকের ব্যাপারে হাদিসে এসেছে, ইমরান ইবন হুসাইন রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
فِي هَذِهِ الأُمَّةِ خَسْفٌ وَمَسْخٌ وَقَذْفٌ . فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَتَى ذَاكَ قَالَ إِذَا ظَهَرَتِ الْقَيْنَاتُ وَالْمَعَازِفُ وَشُرِبَتِ الْخُمُورُ
এই উম্মতের জন্য ভূমিধ্বস, চেহারা বিকৃতি এবং পাথর বর্ষণের আযাব রয়েছে। জনৈক মুসলিম ব্যক্তি তখন বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, কখন হবে তা? তিনি বললেন, যখন গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রের বিস্তার ঘটবে এবং মদ্যপান দেখা দিবে। (তিরমিযী ২২১৫)
আর বেগানা নারীদের সাথে পর্দার ব্যাপারে কুরআন-সুন্নাহয় যা বর্ণিত হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
দ্বিতীয়ত, মুসলিম শাসকদের জীবনীনির্ভর নাটক ও সিরিয়ালের একটা ক্ষতির দিক হল, অনেকেই এসব সিরিয়াল দেখাকে গুনাহ মনে করেন না; অথবা কেউ কেউ এই গুনাহকে হালকা মনে করেন। আর গুনাহকে গুনাহ মনে না করা বা হালকা মনে করা কবিরা গুনাহ। নবীজি ﷺ বলেন,
وإنَّ الفاجِرَ يَرَى ذُنُوبَهُ كَذُبابٍ مَرَّ علَى أنْفِهِ فقالَ به هَكَذا
পাপিষ্ঠ ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে মাছির মত মনে করে, যা তার নাকে বসে চলে যায়। (বুখারী ৬৩০৮)
তৃতীয়ত, এসব ধারাবাহিক সিরিয়াল দেখতে গিয়ে সময়ের অপচয়, নামাজ কাযা হওয়াসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে অমনোযোগী হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। যা সব অনিষ্টের মূল বলেই বিবেচিত। কোন বৈধ নিনোদনের প্রতি আসক্তি ফরজ, ওয়াজিব পালনে অলসতা সৃষ্টি করলে তাও নাজায়েয বলে গণ্য হয়। আর ইতিহাসনির্ভর সিরিয়ালগুলোতে দর্শক চাহিদা বাড়াতে অনেক ক্ষেত্রে ইতিহাসের প্রধান চরিত্রগুলোর ব্যাপারে মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার সম্ভবনা থাকে।
মোট কথা, প্রশ্নেল্লেখিত সিরিয়ালগুলোতে ভিডিও, মিউজিকসহ নারীর অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকা, গুনাহকে হালকা মনে করে তা দেখা এবং ফরজ ওয়াজিব পালনে উদাসীনতাসহ অন্যান্য গুনাহে লিপ্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকার কারণে এগুলো দেখা জায়েয হবে না।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী