জিজ্ঞাসা–১৩১৯: জরুরি ভিত্তিতে উত্তর প্রত্যাশী। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। স্বামী-স্ত্রী উভয়ের পরীক্ষা ছিল সামনে। স্বামী যদি হাস্যরসের ভঙ্গিমায় বলে, তুমি দেখো পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করবা। তখন স্ত্রী বলে, আমি যদি রেজাল্ট খারাপ করি, আপনার পরীক্ষায় ডিসটার্ব করবো, এটা মজার ছলে বলে। তখন স্বামী বলে যে, তুমি যদি আমার পরীক্ষায় ডিসটার্ব কর তাহলে ডিভোর্স। এরপর পরীক্ষার সময় স্ত্রীর পরীক্ষাগুলো খারাপ হয় নি, ভালো হয়েছে। তবে কোনো এক ঘটনায় স্ত্রীর মন খারাপ ছিল। কারণটা স্বামী জানতে চান। স্বামীকে বলতে গেলে তিনি রেগে যান কোনো কারণে এবং তাতে মাথা গরম হওয়ার সেদিনের পড়ায় একটু বিঘ্ন ঘটে। তিনি বলেন যে, তুমি কি চাইতেছ লাস্ট পরীক্ষায় আমার সাথে ঝামেলা করে ডিভোর্স এর ওটা এনসিওর করতে। (যেমনটা মজা করে বলেছিল স্বামী যে, ডিস্টার্ব করলে ডিভোর্স, তিনি নিজেও জানতে পারেন, মজা করে বলে ফেললেও হয়ে যায়, তাই জানান দিলেন স্ত্রীকে) প্রশ্ন হলো, স্ত্রী তো ইচ্ছে করে গিয়ে ডিস্টার্ব করে নি। মন খারাপের কারণ ব্যাখ্যা করতে গেলে স্বামী রেগে গেছে। যেহেতু স্ত্রী বলেছিল আমার এক্সাম খারাপ হলে আপনাকে ডিস্টার্ব করবো। তখন স্বামী বলে পরীক্ষায় ডিস্টার্ব করলে ডিভোর্স। এখানে স্ত্রীর এক্সাম খারাপও হয় নি, যার কারণে সে ডিস্টার্ব করতে যাবে। আদতেও করতো না কখনো। স্বামীর খারাপ চাইবে না। তাহলে কী এখানে ডিভোর্স পতিত হয়েছে? এবং কী করণীয়?–আবিদা সুলতানা।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
প্রশ্নে যা এসেছে সে আলোকে বোঝা যাচ্ছে যে, যেহেতু শর্ত পাওয়া যায় নি তাই স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয় নি। কেননা, শর্ত সাপেক্ষে তালাকের বিধান হল, যদি তালাককে কোনো শর্তের সাথে যুক্ত করে, তাহলে শর্ত পাওয়ার পরেই তালাক পতিত হয়। আর শর্ত পাওয়া না গেলে তালাক হয় না। (আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩৪৪ আলবাহরুররায়েক ৪/৫ আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া ১/৪২০ ফাতাওয়া মাহমুদিয়া ১৩/১০৭)
তবে যেহেতু তালাকের পরিণতি খুবই ভয়াবহ হয় তাই প্রতিটি বিবেচক স্বামীর দায়িত্ব হল, তালাকের শব্দ কিংবা এর সমার্থক কোনো শব্দ মুখে উচ্চারণ করা থেকে সতর্কতার সাথে বিরত থাকা। যখন তখন তালাকের বিষয় টেনে আনা মানে আল্লাহর বিধানের সঙ্গে তামাশা করা। কেননা, তালাক-সংক্রান্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلا تَتَّخِذُوا آيَاتِ اللَّهِ هُزُواً
আর আল্লাহর নির্দেশকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করো না। (সূরা বাকারা ২৩১)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী