জিজ্ঞাসা–১৬৭২: ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে একজন নারীর ইউটিউব চ্যানেল খোলা এবং সেখানে লেকচার দেওয়া কতটা বৈধ? ইদানীং এই ধরণের কিছু তৎপরতা আমার চোখে পড়েছে।–আম্মার হুসাইন।
জবাব: দাওয়াত ও তাবলীগের জন্য ইউটিউব চ্যানেল খোলা এবং সেখানে দাওয়াতি কাজ করা নারীর জন্য জায়েয নয়। কেননা, নারীর প্রতি শরীয়তের বিধান ও চাহিদা হল, তার কন্ঠস্বর যেন প্রয়োজন ছাড়া পরপুরুষ শুনতে না পায়। এ বিধান কেবল সাধারণ ক্ষেত্রেই নয়; বরং ইবাদত বন্দেগী ও আমলের ক্ষেত্রেও তা পূর্ণমাত্রায় লক্ষ রাখা হয়েছে। যেমন,
১. মুআযযিনের এত অধিক মর্যাদা থাকা সত্বেও নারী কন্ঠস্বর যেন বিনা প্রয়োজনে পরপুরুষ শুনতে না পায় এজন্য তাদের উপর আযানের বিধান দেয়া হয় নি।
২. উচ্চ আওয়াজবিশিষ্ট ফরয নামাযের কেরাত তাদের জন্য নিম্ন আওয়াজে পড়ার বিধান রয়েছে।
৩. নামাযে ইমামের কোনো ভুল ত্রুটি হলে তা অবগত করানোর জন্য পুরুষ মুক্তাদিদেরকে সুবহানাল্লাহ বলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে একই বিষয়ে নারীদেরকে তাসফীক অর্থাৎ এক হাতের পিঠ অন্য হাতের তালুতে মেরে শব্দ করতে বলা হয়েছে। যেন পুরুষরা আওয়াজকারী সম্পর্কে বিন্দুমাত্র বুঝতে না পারে।
৪. হজ্বের তালবিয়া পুরুষগণ উচ্চ আওয়াজে পড়বে। কিন্তু মহিলারা পড়বে নিম্ন আওয়াজে। এধরনের প্রায় সকল ক্ষেত্রেই পার্থক্য বিদ্যমান।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا
তোমরা পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে। (সূরা আহযাব ৩২)
সুতরাং ইউটিউবে দাওয়াত ও তাবলীগের আবরণে পরপুরুষের সামনে নারীর কণ্ঠস্বর পৌঁছা–এর অর্থ হল, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তার কুকল্পনাকে উজ্জীবিত করে দেয়া। আর এটা যে ফেতনার কারণ হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
প্রিয় দীনী বোন, একজন নারীর দাওয়াতি কাজের সর্ব শ্রেষ্ঠ ক্ষেত্রে হল তার পরিবার, সন্তান-সন্ততি। তবে নারী তার দৈহিক, মানসিক স্বভাব ও রুচির সঙ্গে মিল রেখে পাড়া-মহল্লার মধ্যেই দাওয়াত ও তা’লীমের ক্ষেত্র তৈরী করতে পারে। অনুরূপভাবে প্রয়োজনে মাহরামের সঙ্গে সফরে বের হয়ে অন্য নারীদের মাঝেও দাওয়াতি কাজ করতে পারে।