জিজ্ঞাসা–১৭২৯: সূর্য/চন্দ্র গ্রহণের সময় বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের কোনো কিছু খাওয়া/পানাহার করা বা ঘর থেকে বের হওয়া বা ঐ সময় কোনো ধরনের কাজ কাম করা থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে যে কথা সমাজে প্রচলিত আছে শরিয়তে তার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? নাকি এসব প্রচলিত কুসংস্কার মাত্র? এবং ঐ সময়ের জন্য বিশেষ কোনো আমল আছে কিনা?–আহমাদ।
এক. প্রিয় প্রশ্নকারী দীনি ভাই, প্রশ্নেল্লেখিত ধারণাগুলো অমূলক ও কুসংস্কার বৈ কিছু নয়। ইসলামি শরিয়তে এমন বিশ্বাসের কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং এ জাতীয় কুসংস্কারে বিশ্বাস রাখা হারাম। বরং এগুলো এক প্রকার শিরকি চিন্তা থেকে উৎসারিত। ইসলামপূর্ব জাহেলি যুগের মানুষের বিশ্বাস ছিল, জগতের বৃহৎ কোনো পরিবর্তনের কারণে চাঁদ এবং সূর্যের গ্রহণ লাগে। যেমন বড় কারো জন্ম, মৃত্যু কিংবা দুর্ভিক্ষের আগমন ইত্যাদির কারণে প্রকৃতিতে এমন ঘটে। রাসুল ﷺ তাদের এ ভুল বিশ্বাস খন্ডন করে বলেন,
إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لاَ يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللهِ
সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ কারো জন্ম-মৃত্যুর কারণে হয় না, এগুলো আল্লাহর নিদর্শনাবলির দুটি নিদর্শন মাত্র। ( সহীহ বুখারী ১০৪২)
দুই. চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণের সময় কি করা উচিৎ, এ ব্যাপারে হাদিসে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর জীবদ্দশায় একবার সূর্যগ্রহণ হলো। তখন তিনি লম্বা কেরাত ও লম্বা রুকু-সিজদার মাধ্যমে নামাজ আদায় করলেন। অতপর বললেন,
إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، لاَ يَنْخَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ فَادْعُوا اللَّهَ وَكَبِّرُوا، وَصَلُّوا وَتَصَدَّقُوا
সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনাবলির দুটি নিদর্শন মাত্র। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। যখন তোমরা তা দেখবে তখন বেশি বেশি আল্লাহকে ডাকবে (দোয়া করবে), বেশি বেশি তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলবে, নামাজ পড়বে এবং সদকা করবে। (সহীহ বুখারী ১০৪৪)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী