জিজ্ঞাসা–১৮১৬: আসসালামু আলাইকুম। আমার একটা সম্পর্কে একটু জানার দরকার ছিল সেটা হলো, আমার হাজব্যান্ড প্রবাসী। প্রায় দুই তিন বছর আগে পারিবারিক ঝগড়ার একপর্যায়ে আমার হাজবেন্ড এসএমএসে তিন তালাক লিখে পাঠায়। আমি তখন বিষয়টিকে এত গুরুত্ব দেই নাই। কারণ, এই সম্পর্কে আমি তখন এত কিছু জানতাম না। ইউটিউব বা ফেসবুকে কখনো আমার এইসব সম্পর্কে কোন ওয়াজ সামনেও আসে নাই বা আমারও এইসব নিয়ে কোন হুজুরের ওয়াজ শোনার মত মাথায় সেরকম বুদ্ধিও আসে নাই। এরপর আমাদের মধ্যে ঝগড়া মিটমাট হয় এবং আমরা স্বাভাবিকভাবে চলতে থাকি। এরপর দেশে এসে সে সাত মাস থেকে যায়। আমরা নরমালি ঘর-সংসার করেছি সাত মাস। ইদানিং আমার সামনে youtube বা ফেসবুকে এইসব নিয়ে এত ভিডিও সামনে আসে যে, বিভিন্ন হুজুরের বক্তব্য শুনে আমি একটু টেনশনে পড়ে যাই। আমার একটা সাত বছরের মেয়ে আছে। আমি চাই আমার হাজব্যান্ড-এর সাথে সংসার করতে। এখন আমার করণীয় কী?–সঙ্গত কারণে নাম প্রকাশ করা হয় নি।
জবাব:وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
মুখে দিলে যেমনিভাবে তালাক হয় তেমনিভাবে তালাক লিখে পাঠালেও তালাক পতিত হয়। ফকিহগণ বলেন,
إن الكتابة يقع بها الطلاق، ولو كان الكاتب قادرا على النطق، فكما أن للزوج أن يطلق زوجته باللفظ، فله أن يكتب إليها الطلاق
নিশ্চয় চিঠি (ম্যাসেজ) দ্বারাও তালাক পতিত হয়। যদিও লেখক বলতে সক্ষম হয়। সুতরাং যেমনিভাবে স্বামী মুখে তালাক দিতে পারে, তেমনিভাবে লিখিতভাবেও দিতে পারে। (ফিকহুস সুন্নাহ ৩/১৬৫)
সুতরাং আপনার উপর তিন তালাক পতিত হয়ে গেছে। এখন আপনাদের ঘরসংসার করা আর বৈধ হবে না। হ্যাঁ, ইদ্দত শেষে যদি স্ত্রীর অন্যত্র বিয়ে হয়। সেখান থেকে কোনো কারণে তালাকপ্রাপ্তা হয় বা তার স্বামীর মারা যায় তাহলে ইদ্দত পালন শেষে তাকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে পারবে। এছাড়া আর কোন গত্যান্তর নেই। (কিতাবুন নাওয়াজেল-৯/৫২১-৫২৩)।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। (সূরা বাকারা ২৩০)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী