জিজ্ঞাসা–১০২৭: হজরত মুহাম্মদ সাললাল্লাহু আলাইহিসসাল্লামের জন্মের কত মাস আগে তার পিতা মারা গেছে? একজন হিন্দু বলেছে, ৩৬মাস আগে তার পিতা মারা গেছে। কথাটা কি ঠিক নাকি ভুল? উওর চাই।– Matiul Miah
জবাব: কতটা নির্লজ্জ হলে মানুষ এতটা ভয়াবহ মিথ্যাচার করতে পারে আমাদের জানা নাই। তবে এটা নিশ্চিত যে, সুস্থ মস্তিষ্কের কোন মানুষ এমন নির্লজ্জ মিথ্যাচার করতে পারে না। কেননা, এই বিষয়ে সকল ইতিহাসবিদ ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ ﷺ -এর পিতা আব্দুল্লাহ যখন মৃত্যুবরণ করেন, তখন তিনি তাঁর মা আমেনার গর্ভে ছিলেন। যেমন, সীরাহবিশারদ আসসালিহি আশশামি ‘সুবুলুলহুদা ওয়াররাশাদ’গ্রন্থে (খণ্ড ০১, পৃষ্ঠা ৩৩১) এই বিষয়ে ‘আব্দুল্লাহ ইবন আব্দুল মুত্তালিবের মৃত্যু’ একটি অধ্যায়ের অবতারণা করেন। সেখানে তিনি লিখেন,
قال ابن إسحاق رحمه الله تعالى: ثم لم يلبث عبد الله بن عبد المطلب أن توفي وأم رسول الله صلى الله عليه وسلم حامل به. هذا ما جزم به ابن إسحاق ورجحه الواقدي وابن سعد والبلاذري، وصححه الذهبي وقال ابن كثير: إنه المشهور، وقال ابن الجوزي: إنه الذي عليه معظم أهل السّير، ورواه الحاكم وصححه، وأقره الذهبي عن قيس بن مخرمة رضي الله تعالى عنه
‘ইবনু ইসহাক বলেছেন, আব্দুল্লাহ ইবন আব্দুল মুত্তালিব মৃত্যুবরণ করেন, যখন রাসুলুল্লাহ -এর মা তাঁর দ্বারা গর্ভধারিণী ছিলেন। এটি ইবনু ইসহাক নিশ্চয়তার সঙ্গে বলেছেন। এটিকেই ওয়াকিদি, ইবনু সা’দ ও বালাযিরি প্রধান্য দিয়েছেন এবং যাহাবি বিশুদ্ধ আখ্যায়িত করেছেন। ইবনু কাছির বলেন, এটিই প্রসিদ্ধ। ইবনুল জাওযি বলেন, এই মতের উপরেই রয়েছেন শীর্ষ ঐতিহাসিকগণ। হাকিমও এটি বর্ণনা করেছেন এবং বিশুদ্ধ বলেছেন। যাহাবি কায়েস ইবনু মাখরামা রাযি. থেকেও এটি বর্ণনা করেছেন।’
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বিশ্বস্ত তথ্যসূত্র উইকিপিডিয়াতেও আছে,
‘আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিব (ইংরেজি: Abdullah ibn Abdul-Muttalib; আরবি: عبدالله بن عبد المطلب; ৫৪৬ – ৫৭০) ছিলেন ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মুহাম্মদ-এর পিতা; মুহাম্মদ তার এবং তার স্ত্রী আমিনার একমাত্র সন্তান। পুত্রের জন্মের পূর্বেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।’ (https://bn.wikipedia.org/wiki)
লক্ষ করুন, আব্দুল্লাহর মৃত্যু হয় ৫৭০খ্রিস্টাব্দে আর রাসুল ﷺ জন্মও হয় ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে। তাহলে পিতার মৃত্যুর ৩৬মাস পরে রাসুল ﷺ-এর জন্ম–এই কথাটা কি ভয়াবহ নির্লজ্জ মিথ্যাচার বলে প্রমাণিত হয়না?
তাছাড়া তৎকালীন সময়ে তাঁকে সবাই আব্দুল্লাহর পুত্র হিসেবেই চিনত। বিভিন্ন চুক্তি ও চিঠিতেও তাঁকে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, এতসব চোখ ধাঁধানো প্রমাণ থাকার পরেও যারা এজাতীয় মিথাচার করে তাদেরকে পাগল ছাড়া আর কী ই বা বলা যাবে!
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী