জিজ্ঞাসা–৮৭৮: বেগানা নারীকে সালাম দেয়া কি যায়েয যদি তাকে আগের থেকে চিনে থাকি?–তাওহীদ।
জবাব: এবিষয়ে ‘আল মাউসুআ’তুল ফিকহিয়্যা’-তে এসেছে,
سَلاَمُ الْمَرْأَةِ عَلَى الْمَرْأَةِ يُسَنُّ كَسَلاَمِ الرَّجُلِ عَلَى الرَّجُلِ وَرَدِّ السَّلاَمِ مِنَ الْمَرْأَةِ عَلَى مِثْلِهَا كَالرَّدِّ مِنَ الرَّجُلِ عَلَى سَلاَمِ الرَّجُلِ وَأَمَّا سَلاَمُ الرَّجُلِ عَلَى الْمَرْأَةِ فَإِنْ كَانَتْ تِلْكَ الْمَرْأَةُ زَوْجَةً أَوْ أَمَةً أَوْ مِنَ الْمَحَارِمِ فَسَلاَمُهُ عَلَيْهَا سُنَّةٌ وَرَدُّ السَّلاَمِ مِنْهَا عَلَيْهِ وَاجِبٌ بَلْ يُسَنُّ أَنْ يُسَلِّمَ الرَّجُلُ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ وَمَحَارِمِهِ وَإِنْ كَانَتْ تِلْكَ الْمَرْأَةُ أَجْنَبِيَّةً فَإِنْ كَانَتْ عَجُوزًا أَوِ امْرَأَةً لاَ تُشْتَهَى فَالسَّلاَمُ عَلَيْهَا سُنَّةٌ وَرَدُّ السَّلاَمِ مِنْهَا عَلَى مَنْ سَلَّمَ عَلَيْهَا لَفْظًا وَاجِبٌ وَأَمَّا إِنْ كَانَتْ تِلْكَ الْمَرْأَةُ شَابَّةً يُخْشَى اْلافْتِتَانُ بِهَا أَوْ يُخْشَى افْتِتَانُهَا هِيَ أَيْضًا بِمَنْ سَلَّمَ عَلَيْهَا فَالسَّلاَمُ عَلَيْهَا وَجَوَابُ السَّلاَمِ مِنْهَا حُكْمُهُ الْكَرَاهَةُ عِنْدَ الْمَالِكِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ وَالْحَنَابِلَةِ وَذَكَرَ الْحَنَفِيَّةُ أَنَّ الرَّجُلَ يَرُدُّ عَلَى سَلاَمِ الْمَرْأَةِ فِيْ نَفْسِهِ إِنْ سَلَّمَتْ هِيَ عَلَيْهِ وَتَرُدُّ هِيَ أَيْضًا فِيْ نَفْسِهَا إنْ سَلَّمَ هُوَ عَلَيْهَا
যেমনিভাবে পুরুষ পুরুষকে সালাম দেয়া সুন্নাত, অনুরূপভাবে নারী নারীকে সালাম দেয়া সুন্নাত। পুরুষ পুরুষের সালামের উত্তর দেয়া এবং নারী নারীর সালামের উত্তর দেয়ার বিধানও অভিন্ন। তবে পুরুষ নারীকে সালাম দেয়ার ক্ষেত্রে কথা হল, যদি ওই নারী নিজ স্ত্রী, বাঁদি অথবা মাহরাম হয় তাহলে তাকে সালাম দেয়া সুন্নাত এবং তার সালামের উত্তর দেয়া ওয়াজিব। বরং সুন্নাত হল, পুরুষ তার পরিবারকে ও মাহরামকে সালাম দিবে। আর যদি ওই নারী বেগানা হয় তাহলে যদি সে বৃদ্ধা হয় কিংবা এমন হয় যে, তার প্রতি আকর্ষণ অনুভূত হয় না তাহলে তাকেও সালাম দেয়া সুন্নাত এবং তার সালামের উত্তর সশব্দে দেয়া ওয়াজিব। পক্ষান্তরে সে যদি যুবতী/তরুণী হয় যে, তার মাধ্যমে পুরুষ কিংবা পুরুষের মাধ্যমে সে ফেতনায় পড়ার আশঙ্কা আছে তাহলে তাকে সালাম দেয়া এবং তার সালামের উত্তর দেয়া শাফিঈ মালেকি ও হাম্বলি মাযহাব মতে মাকরুহ। আর হানাফি মাযহাব মতে বেগানা নারী যদি সালাম দেয় তাহলে পুরুষ মনে মনে উত্তর দিবে। আর বেগানা পুরুষ যদি সালাম দেয় তাহলে নারী মনে মনে উত্তর দিবে। (আল মাউসুআ’তুল ফিকহিয়্যা আল কুয়েতিয়া ৬/১৬৬)
ইমাম নববী রহ. বলেন,
وإن كانت أجنبية يخاف الافتتان بها لم يسلم الرجل عليها ، ولو سلم لم يجز لها رد الجواب ، ولم تسلم هي عليه ابتداء ، فإن سلمت لم تستحق جواباً
যদি পরনারী এমন হয় যে ,ফিতনার আশঙ্কা আছে তাহলে পুরুষ তাকে সালাম দিবে না। যদি সে সালাম দিয়ে দেয় তাহলে মহিলা উত্তর দিবে না। আর নারী পরপুরুষকে আগে সালাম দিবে না। যদি সে সালাম দিয়ে দেয় তাহলে সে উত্তর পাওয়ার উপযুক্ত হবে না। (আলাযকার ৪০৭)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
লিখিত ভাবে সালাম ও সালামের উত্তর দিতে পারব কি?
লিখিত সালামের জবাব লিখেও দেওয়া যায় আবার মুখে উচ্চারণ করেও দেওয়া যায়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি চাইলে জবাব লিখেও পাঠাতে পারেন অথবা বারবার লিখে পাঠানো আপনার জন্য কষ্টদায়ক মনে হলে নিজে নিজে মুখে জবাব দিয়ে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে মৌখিক জবাব তাকে শুনিয়ে দেওয়া জরুরি নয় এবং সালামের জবাবের জন্য তাকে পাল্টা উত্তর লেখা জরুরি নয়। বরং একাকী মুখে জবাব দিয়ে দিলেই হবে। (ফয়যুল কাদীর ৪/৩১; রদ্দুল মুহতার ৬/৪১)
মাঝে মধ্যে গায়রে মাহরাম দের সাথে সামনাসামনি /ফোনে কথা বলতে হয়।তখনকি সালাম দিতে পারব?
মূল বিষয় হল, ফেতনার ভয় না থাকা। ফেতনার ভয় না থাকলে সালাম দিতে পারবেন।
মাঝে মধ্যে গায়রে মাহরাম দের সাথে সামনাসামনি /ফোনে কথা বলতে হয়।তখনকি সালাম দিতে পারব? লিখিত ভাবে সালাম ও সালামের উত্তর দিতে পারব কি?
মূল বিষয় হল, ফেতনার ভয় না থাকা। ফেতনার ভয় না থাকলে সালাম দিতে পারবেন।
মাশা~আল্লাহ… আল্লাহ আপনার এই দ্বীন খেদমতকে কবুল করুন।