ফজরের পর ও আসরের পরে ঘুমানো কি নিষেধ?

জিজ্ঞাসা–৮৬৬: সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের সময় ঘুমালে কি কোন ক্ষতি হবে? –Alam hasibul

জবাব:

এক. সালফে সালেহীনের মধ্য থেকে অনেকেই ফজরের পরে ঘুমানোকে মাকরুহ মনে করতেন। কেননা, ভোরবেলা ঘুমালে ওই বরকত থেকে বঞ্চিত হতে হয়, যে বরকতের দোয়া রাসুলুল্লাহ করেছেন।

— সখর গামেদি রাযি. সূত্রে বর্ণিত, রাসুল এ দোয়া করেছেন,

اللَّهُمَّ بَارِكْ لأُمَّتِي فِي بُكُورِهَا

‘হে আল্লাহ, আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরু বরকতময় করুন।’

বর্ণনাকারী বলেন, এ জন্যই রাসুল কোনো যুদ্ধ অভিযানে বাহিনী পাঠানোর সময় দিনের শুরুতে পাঠাতেন। আর সখর রাযি. ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনিও তাঁর ব্যবসায়ী কার্যক্রম ভোরবেলা শুরু করতেন। এতে তাঁর ব্যবসায় অনেক উন্নতি হয় এবং তিনি সীমাহীন প্রাচুর্য লাভ করেন। (আবু দাউদ ২৬০৬)

— উরওয়া ইবন যুবাইর রহ. বলেন, যুবাইর রাযি. তাঁর সন্তানদেরকে ভোরবেলা ঘুমানো থেকে নিষেধ করতেন। উরওয়া রহ. বলেন,

إِنِّي لَأَسْمَعُ بِالرَّجُلِ يَتَصَبَّحُ فَأَزْهَدُ فِيهِ

আমি যখন কারো সম্পর্কে শুনি, সে ভোরবেলা ঘুমায় তখন তার প্রতি আমি আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। (মুসান্নাফ ইবনু আবী শাইবা ৫/২২২)

— আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. তাঁর এক সন্তানকে ভোরবেলা ঘুমাতে দেখে বলেছিলেন,

أتنام في الساعة التي تُقسَّم فيها الأرزاق؟

ওঠো, তুমি কি এমন সময়ে ঘুমিয়ে আছ, যখন রিজিক বণ্টন করা হচ্ছে। (যাদুল মাআ’দ ৪/২৪১)

দুই. আসরের পর ক্লান্ত থাকলে অথবা বিশ্রাম বা ঘুমের প্রয়োজন হলে ঘুমানো নিষেধ নয়। তবে সালফে সালেহীনের মধ্য থেকে কেউ কেউ বিনা প্রয়োজনে আসরের পর ঘুমনোকে মাকরুহ মনে করতেন। যেমন, ইমাম আহমাদ রহ. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন,

‏ يُكْرَهُ أَنْ يَنَامَ بَعْدَ الْعَصْرِ يُخَافُ عَلَى عَقْلِهِ

আসরের পর ঘুমনো মাকরুহ, এতে বুদ্ধি লোপ পাওয়ার আশঙ্কা আছে। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৮/১৩৬, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা)

এ মর্মে একটি দুর্বল হাদিসও পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ বলেছেন,

مَنْ نَامَ بَعْدَ الْعَصْرِ، فَاخْتُلِسَ عَقْلُهُ، فلا يَلُومَنَّ إِلَّا نَفْسَهُ

যে ব্যক্তি আসরের পর ঘুমায় আর তার বুদ্ধি কমে যায়, তবে সে যেন নিজেকে তিরস্কার করে। (মুসনাদে আবি ইয়ালা ৪৮৯৭)

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − seven =