জিজ্ঞাসা–৯৩৫: হাত এর নখ বড় রাখা জায়েয আছে? ছেলে বা মেয়ে যাই হোক না কেন, কুরআন ও হাদিসের আলোকে ব্যাখাটি দিলে খুব উপকৃত হতাম।–তৌহিদ আল শোয়াইব।
জবাব: হাত পায়ের নখ কাটা সুনানুল ফিতরাতের অন্তর্ভুক্ত। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
خَمْسٌ مِنَ الْفِطْرَةِ الْخِتَانُ، وَالاِسْتِحْدَادُ، وَتَقْلِيمُ الأَظْفَارِ، وَنَتْفُ الإِبِطِ، وَقَصُّ الشَّارِبِ
ফিতরাত (নবীগণের তরিকা) পাঁচটি খতনা করা, নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করা, নখসমূহ কাটা, বগলের পশম তুলে ফেলা এবং মোচ কাটা। (ইবনু মাজাহ ২৯২)
অপর হাদিসে এসেছে, ফিতরাত দশটি। তন্মধ্যে রয়েছে, নখসমূহ কাটা।
এজন্য ইসলাম মানুষের শরীরের অবাঞ্ছিত লোম, নখ ইত্যাদি বিনা ওজরে চল্লিশ দিন পর কাটাকে মাকরূহ তাহরীমি বা গোনাহর কাজ বলেছে। এ মর্মে সাহাবী আনাস রাযি. বলেন,
وُقِّتَ لَنَا فِي قَصِّ الشَّارِبِ، وَتَقْلِيمِ الأَظْفَارِ، وَنَتْفِ الإِبِطِ، وَحَلْقِ الْعَانَةِ، أَنْ لاَ نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِينَ يَوْماً.
অর্থাৎ, গোঁফ ছোট রাখা , নখ কাঁটা, বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলা এবং নাভীর নিচের লোম চেঁছে ফেলার জন্যে আমাদেরকে সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল যেন, আমরা তা করতে চল্লিশ দিনের অধিক দেরী না করি। (মুসলিম ২৫৮)
ইমাম নববী রহ. এ সংক্রান্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন,
تقليم الأظفار مجمع على أنه سنة , وسواء فيه الرجل والمرأة واليدان والرجلان
নখসমূহ কাটা সকলের মতে সুন্নাত। এ ক্ষেত্রে পুরুষ-মহিলা এবং উভয় হাত ও উভয় পা সমান। (আলমাজমু’ ১/৩৩৯)
তাছাড়া নখ বড় হওয়ার কারণে তাতে আটা বা ময়লা জমে থাকার কারণে যদি নখের গোড়ায় পানি না পৌঁছে তাহলে অযু সহীহ হয় না। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২)
উপরন্তু বড় নখ দেখতে বিশ্রী, যা হিংস্র প্রাণীর বৈশিষ্ট্য এবং এতে রয়েছে কিছু কাফের মহিলাদের অনুকরণ ও সাদৃশ্য অবলম্বন, যা মুসলিমের জন্য হতে পারে না।
মুসনাদে আহমাদের একটি রেওয়ায়েতে আছে,
عَنْ أَبِي وَاصِلٍ ، قَالَ : لَقِيتُ أَبَا أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيَّ فَصَافَحَنِي ، فَرَأَى فِي أَظْفَارِي طُولًا ، فَقَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : يَسْأَلُ أَحَدُكُمْ عَنْ خَبَرِ السَّمَاءِ ، وَهُوَ يَدَعُ أَظْفَارَهُ كَأَظَافِيرِ الطَّيْرِ يَجْتَمِعُ فِيهَا الْجَنَابَةُ وَالْخَبَثُ وَالتَّفَثُ
আবু ওয়াসিল বলেন, আমি আবু আইয়ূব রাযি.-এর সাথে সাক্ষাত করতে গেলাম। মোসাফাহার সময় তিনি আমার নখ বড় দেখে বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ কেউ আসমানের খবর জিজ্ঞাসা কর, অথচ তার হাতের নখগুলো পাখির নখের মতো, যাতে জমে থাকে ময়লা-আবর্জনা! (মুসনাদে আহমদ ২৩০১১)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী