কোরআন তেলাওয়াত করা ও শোনার মধ্যে কি ফজিলত সমান?

জিজ্ঞাসা–১৩২৩: আমি জানতে চাই যে, কুরআন শরীফ তেলাওয়াত করা ও শুনার মাঝে কোনটির ফজিলত বেশি?–নাফিউর রহমান।

জবাব: কুরআন তেলাওয়াত করা অনেক ফজিলতপূর্ণ নেক আমল। যেমন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

من قرأ حرفًا من كتابِ اللهِ فله به حسنةٌ، والحسنةُ بعشرِ أمثالِها لا أقولُ (الـم) حرفٌ ولكنْ (ألفٌ) حرفٌ و(لامٌ) حرفٌ و(ميمٌ) حرفٌ

যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করে, তাকে একটি নেকি প্রদান করা হয়। প্রতিটি নেকি দশটি নেকির সমান। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ। (তিরমিযি ২৯১০)

অনুরূপভাবে কুরআন তেলাওয়াত শোনাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নেক আমল। যেমন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে বলেছেন,

اقْرَأْ عَلَيَّ، قُلتُ: يا رَسولَ اللَّهِ، آقْرَأُ عَلَيْكَ، وعَلَيْكَ أُنْزِلَ، قالَ: نَعَمْ فَقَرَأْتُ سُورَةَ النِّساءِ حتَّى أتَيْتُ إلى هذِه الآيَةِ: {فَكيفَ إذا جِئْنا مِن كُلِّ أُمَّةٍ بشَهِيدٍ، وجِئْنا بكَ علَى هَؤُلاءِ شَهِيدًا} [النساء: 41]، قالَ: حَسْبُكَ الآنَ فالْتَفَتُّ إلَيْهِ، فإذا عَيْناهُ تَذْرِفانِ

তুমি কুরআন পাঠ কর। আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনার সামনে কুরআন পাঠ করব? অথচ তা তো আপনার ওপরই নাযিল হয়েছে। তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর আমি “সূরা নিসা” পাঠ করলাম। যখন আমি এই আয়াত পর্যন্ত আসলাম “চিন্তা করো আমি যখন প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে থেকে একজন করে স্বাক্ষী উপস্থিত করব এবং সকলের ওপরে তোমাকে স্বাক্ষী হিসাবে হাযির করব তখন তারা কি করবে”। নবী ﷺ বললেন, আপাতত এটুকুই যথেষ্ট। আমি তাঁর চেহারা মুবারকের দিকে তাকালাম, দেখলাম, তাঁর চক্ষুদ্বয় থেকে অশ্রু ঝরছে। (বুখারী ৫০৫০)

তবে কুরআন তেলাওয়াত করা ও শুনার মাঝে কোনটির ফজিলত বেশি; এ বিষয়ে যেহেতু আলাদা হাদিস পাওয়া যায় না, তাই এর প্রতি ভ্রূক্ষেপ না করে বরং যে সময়ে যেটা ভালো লাগে  সে সময়ে সেটা করুন এবং আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির আশা রাখুন।

والله اعلم بالصواب

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × four =