জিজ্ঞাসা–৯৮০: আমি একজনের সাথে প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ আছি! তবে তার চরিত্রবান এবং দ্বীনদারী ব্যাক্তি! সে আমার ছোট বেলার বন্ধু হওয়ায় তাকে ভালোভাবে চিনি! তাকে স্বামী হিসেবে পাওয়ার জন্য কি আমল করবো?–ইচ্ছাকৃতভাবে নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা হয় নি।
জবাব: বিয়ের পূর্বে পরপুরুষের সঙ্গে প্রেম-ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে তোলা হারাম। এ জাতীয় প্রেম মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে অনেক দূরে ঠেলে দেয়। প্রেমিকের ভাবনা তাকে দিন দিন আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন করে দেয়। ইতালির পিজা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডোনাটেলা মারাজ্জিতি ২০ জন সদ্য প্রেমে পড়া যুগলের ওপর একটি গবেষণা চালান। গবেষণায় তিনি দেখতে চেয়েছেন যে সারাক্ষণ ভালোবাসার মানুষটির কথা ভাবার ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কেমন হতে পারে। গবেষণায় ডোনাটেলা মারাজ্জিতি ছেলে-মেয়েদের রক্ত পরীক্ষা করে দেখেছেন, সদ্য প্রেমে পড়া তরুণ-তরুণীদের ও নেশাগ্রস্ত ব্যক্তির রক্তের সেরোটোনিনের পরিমাণ একই মাত্রায় রয়েছে। (সূত্র : বাংলানিউজ২৪)
এজন্যই রাসূল ﷺ বলেন,
وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه
আর অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে। (সহীহ মুসলিম ২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ ৮৯৩২)
প্রিয় বোন, সুতরাং আপনার প্রতি আমাদের পরামর্শ হল–
১. উক্ত চিন্তা থেকে তাওবা করুন এবং সাহসিকতার সঙ্গে মনের বিরোধিতা করুন। আল্লাহ তো বলেছেন,
২. নির্দিষ্ট কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে কামনা না করে আল্লাহর কাছে উত্তমটা কামনা করুন। আল্লাহর পক্ষে আপনার ধারণা থেকেও উত্তম জীবনসঙ্গী দেয়া কোন বিষয়ই না।
৩. প্রত্যেক নামাযের পর দৈনিক অন্তত পাঁচ বার কিছু সময়ের জন্য- দুই থেকে পাঁচ মিনিটের জন্য আল্লাহর সান্নিধ্যের মুরাকাবা করুন। মুরাকাবা এভাবে করবেন- চোখ বন্ধ করবেন। তারপর ভাববেন, ‘আমি যেখানেই থাকি না আল্লাহ আমার সাথে আছেন।’ অথবা এই আয়াতের বিষয়বস্তু নিয়ে চিন্তা করবেন- هُوَ مَعَكُمْ اَيْنَمَا كُنْتُمْ ‘তোমরা যেখানেই তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন।’
এভাবে নিয়মিত কিছুদিন করতে পারলে -ইনশা আল্লাহ- ধীরে ধীরে আল্লাহর সান্নিধ্যের সার্বক্ষণিক অনুভূতি অন্তরে বসে যাবে এবং বাজে চিন্তা থেকে বের হওয়া সহজ হয়ে যাবে।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী