মূল
মাহবুবুলওলামা হযরত মাওলানা পীর
জুলফিকার আহমদ নকশবন্দী মুজাদ্দেদী
অনুবাদ ও সম্পাদনা
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
সফলকাম মানুষ
আল্লাহ তাআলা এই পৃথিবীতে মানুষকে তাঁর ইবাদত করার জন্য পাঠিয়েছেন। মানুষ এখানে কয়েক দিনের মেহমান। নিজের সময়-সুযোগ ফুরিয়ে যাওয়ার পরে সে সামনের সফরে রওয়ানা হবে। সৌভাগ্যবান ওই মানুষ যে আল্লাহর স্মরণে নিজের সময় অতিবাহিত করে। যে আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসন্ধানে প্রতিটি মুহূর্ত অস্থির থাকে। যার প্রতিটি আমল সুন্নতে-নববী অনুযায়ী হয়। যার প্রতিটি কাজ শরীয়তের অনুগামী হয়। এ ধরনের মানুষ দুনিয়াতেও সফল, আখেরাতেও সফল।فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيمًا সুতরাং সে মহান সফলতা অর্জন করেছে__বাণীটি এমন ব্যক্তির জন্যই যথোপযুক্ত।
আমাদের সৌভাগ্য
আমাদের সৌভাগ্য যে, বরকতপূর্ণ রমজান মাস আরো একবার আমাদের অধীনে এসেছে। এমন মাস যার প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহ তাআলার রহমত মুষলধারে বৃষ্টির মতো বর্ষিত হয়। যে মানুষটি এই মোবারক মাসের আদব অন্তরে রাখে, রোজা রাখে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে, ইবাদতের প্রতি গুরুত্ব দেয়; আল্লাহর কাছে আশা করা যায় সে ইনশাআল্লাহ তাঁর নৈকট্য এবং জান্নাতের উচ্চস্তর মাকাম অর্জন করার ব্যাপারে সফলকাম হবে।
বুজুর্গির মাপকাঠি
সালফে সালেহীনের জীবনীতে লেখা আছে, যখন তারা কারও বুজুর্গির আলোচনা করতেন তখন এই কথা বলতেন, অমুক ব্যক্তি অনেক বুজুর্গ মানুষ। আর তাঁরা এর প্রমাণ দিতেন, তিনি নিজের জীবনে এতগুলো রমজান অতিবাহিত করেছেন! তাঁদের কাছে এই ছিল বুযুর্গি পরিমাপের মাপকাঠি।
নবীজির উৎসাহপ্রদান
একবার নবীজি ﷺ রমজান আগমণ উপলক্ষে সাহাবায়ে কেরামকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তোমাদের নিকট একটি বরকতপূর্ণ মাস এসেছে, এই মাস আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টি দেন, তোমাদের প্রতি রহমত নাযিল করেন, তোমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেন, তোমাদের দোয়া কবুল করেন। আরো বলেন,
يَنْظُرُ اللَّهُ إِلَى تَنَافُسِكُمْ فيه
‘আল্লাহ তাআলা এই মাসে তোমাদের তানাফুস দেখেন।’
তানাফুস বলা হয়, পরস্পর প্রতিযোগিতা করা এবং একে অন্যের চাইতে আগে বেড়ে যাওয়াকে। সুতরাং হাদিসটিতে উৎসাহ দেয়া হয়েছে, এ মাসে নেক আমল ও ইবাদতের মধ্য দিয়ে একে অন্যেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। প্রত্যেকেই চেষ্টা করব যে, আমি বেশি বেশি ইবাদত করব। ক্লাশ-পরীক্ষার সময় যেমনিভাবে প্রতিটি বাচ্চা ফাস্ট হওয়ার চেষ্টা করে অনুরূপভাবে আমাদেরও চেষ্টা থাকবে বেশি বেশি ইবাদত করব।
রমজান মাসে নবীজির প্রতিদিনের আমল
সাহাবায়ে কেরাম বলতেন, যখনই রমজান আসতো তখন আমরা নবীজির আমলের মাঝে তিনটি অতিরিক্ত বিষয় অনুভব করতাম।
প্রথম বিষয়: নবীজি ﷺ ইবাদতের মাঝে অনেক বেশি চেষ্টা-মুজাহাদা করতেন। অথচ তাঁর অন্যান্য সময়ের ইবাদতও এমন ছিল যে, حَتَّى تَوَرَّمَتْ قَدَمَاهُ এমনকি তাঁর কদম মোবারক ফুলে যেত। আর রমজানে ইবাদতের এই আধিক্যতা আরো স্ফীত হয়ে উঠত।
দ্বিতীয় বিষয়: এ মাসে তিনি আল্লাহর রাস্তায় অনেক বেশি খরচ করতেন। নিজের হাতকে একেবারে প্রসারিত করে দিতেন। অনেক খোলামনে দান-খয়রাত করতেন।
তৃতীয় বিষয়: এ মাসে তিনি মুনাজাতে অনেক বেশি কান্নাকাটি করতেন।
রমজানে তাঁর এই তিনটি বিষয়ে পরিবর্তন আসত। ইবাদতে অত্যাধিক চেষ্টা-মুজাহাদা করা, আল্লাহর রাস্তায় আরো বেশি খরচ করা এবং দোয়ায় অনেক কান্নাকাটি করা।
আমরা রমজান কিভাবে কাটাবো?
আমরাও যদি রহমতের এই মৌসুম থেকে ফায়দা অর্জন করতে চাই, অসন্তুষ্ট রবকে সন্তুষ্ট করতে চাই, নিজেদের বিপর্যস্ত অবস্থাকে ঠিক করে নিতে চাই তাহলে এই মাসে কয়েকটি জিনিসের প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। এতে আশা করা যায়, আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রমজানের বরকতের প্রাচুর্য দান করবেন।
১. রোজার হেফাজত করব
প্রথমত, পরিপূর্ণ আদব ও শর্ত পালন করে রোজা রাখব। রোজায় পানাহার ও কামাচারের ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা তো আছেই। এ ব্যাপারেও বাধ্যবাধকত থাকতে হবে যে, শরীরের কোন অঙ্গ থেকে যেন কোন গুনাহ না হয়। রোজাদার ব্যক্তির চোখও রোজাদার হবে, জবান রোজাদার হবে, কান রোজাদার হবে, লজ্জাস্থান রোজাদার হবে, মন-মস্তিস্কও রোজাদার হবে। এভাবে আমরা মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত রোজাদার হয়ে যাব। এজন্যই হাদীস শরীফে এসেছে,
الصَّوْمُ جُنَّةٌ مَا لَمْ يَخْرِقْهَا
‘রোজা মানুষের জন্য ঢালস্বরূপ যতক্ষণ পর্যন্ত সে তা না ভেঙ্গে ফেলে।’
উদ্দেশ্য হচ্ছে, রোজা শয়তান থেকে মানুষকে হেফাজত করে। কেউ আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোন জিনিস দ্বারা তা ভেঙ্গে যায়? নবীজি ﷺ উত্তর দিলেন, মিথ্যা এবং পরনিন্দা দ্বারা।
অপর হাদীসে রয়েছে,
رُبَّ صَائِمٍ لَيْسَ لَهُ مِنْ صِيَامِهِ إِلَّا الْجُوعُ والعطَشُ
‘অনেক রোজাদার তাদের রোজার দ্বারা ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত থাকা ছাড়া অন্য কোন ফায়দা হয় না।’
কেন? কারণ রোজা রাখে আর হিন্দি গান শুনে। রোজা রাখে এবং মার্কেটে যাদের দিকে দৃষ্টি দেওয়া বৈধ নয় তাদের দিকেও দৃষ্টি দেয়। রোজা রাখে, অন্য মানুষের প্রতি অপবাদ দেয়, মিথ্যা বলে, ধোঁকা দেয়। এ ধরণের রোজা আল্লাহর কাছে কোন বিনিময় পায়না। সে ধোঁকাবাজি করছে। রোজার হাকীকত তার অর্জন হবে না। এজন্যই হাদীসে এসেছে,
ليسَ الصيامُ منَ الأكْلِ والشرْبِ ، إِنَّما الصيامُ منَ اللغوِ والرفَثِ
‘রোজা কেবল পানাহার থেকে বেঁচে থাকার নাম নয়; বরং রোজা অনর্থক এবং অশ্লীল কাজ থেকে বেঁচে থাকার কারণে হয়।’
অনুরূপভাবে অন্যত্র রোজাদার সম্পর্কে নবীজি ﷺ বলেছেন,
مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ وَالْجَهْل فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ
‘যে রোজাদার মিথ্যা এবং নিজের আমলের ভেজাল ছাড়ে না, আল্লাহ তাআলার তার ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত থাকার কোন প্রয়োজন নেই।’
রোজা বেশি ধরে ফেলার অজুহাত
সাধারণত দেখা যায়, যে ব্যক্তি পরহেজগারীর সাথে রোজা রাখে তার ক্ষুধা-তৃষ্ণা অনেক কম অনুভব হয়। আর বেশি ক্ষুধা-তৃষ্ণা লাগে ওই ব্যক্তির যে পরহেজগারীর সাথে রোজা রাখে না।
নবী-যুগের কথা। দুই মহিলা রোজা রেখেছে এবং রোজা তাদেরকে এত ধরে ফেলেছে যে, তারা মরার উপক্রম। ব্যাপারটা নবীজি ﷺ দরবারে জানানো হলো। নবীজী ﷺ বললেন, তাদেরকে কুলি করতে বল। উভয়জনকে কুলি করতে বলা হলো। তখন তাদের মুখ থেকে গোশতের ছোট ছোট টুকরা বের হলো। তারা তো অবাক যে, আমরা কোন কিছু খাইনি, পান করিনি –এটা কী হলো! নবীজি ﷺ বললেন, এরা মূলত রোজা রেখে অন্যের গীবত করেছে। আর গীবত করা এমন-ই যেমন মৃত ব্যক্তির গোশত খাওয়া।
এ জাতীয় ঘটনা এজন্য ঘটেছে যাতে আমাদের মত পরবর্তীদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলা দৃষ্টান্ত বানিয়ে দিয়েছেন যাতে করে লোকেরা উপদেশ গ্রহণ করতে পারে।
সুতরাং আমাদের উচিত রোজার হেফাজত করা অর্থাৎ সব ধরনের ছোট বড় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা। আর তখনই আমাদের রোজার বিনিময়ে সাওয়াব হবে এবং রোজার বরকত নসিব হবে।
২. বেশি বেশি ইবাদত করা
আমরা রমজান মাসে ফরজ নামাজগুলো তাকবীরে উলার সাথে পাবন্দির সাথে আদায় করার চেষ্টা করব। অন্যান্য সুন্নত নফল ইবাদত জিকির-আজকার বেশি বেশি করব। ইবাদতের করতে করতে নিজের শরীর ক্লান্ত করে ফেলব। আমাদের দেহ দুনিয়ার কায়কারবারের জন্য প্রতিনিয়ত ক্লান্ত হয়। জীবনে এমন সময় আসা উচিত যখন ইবাদতের কারণে ক্লান্ত হবো। কখনও এমন সময় আসা প্রয়োজন যখন ইবাদত করতে করতে নেতিয়ে পড়ব, চোখ ঘুমের জন্য ছটফট করবে।
ইবাদতের মাঝে প্রতিবন্ধক
রমজান মাসে বড় বড় শয়তানদেরকে বন্দি করা হয়। এরপরও যদি মানুষ ইবাদত না করে তাহলে প্রতিবন্ধক কোন জিনিস? প্রতিবন্ধক হলো, মানুষের নিজের নফস। শয়তান আমাদের নফসকে এতটাই বিকৃত করে রেখেছে যে, কেমন যেন আমরা নিজেরাই বন্দী হয়ে যাই। ফলে তার ছোট ছোট কূটচাল রয়ে যায়। এই ছোট ছোট কূটচাল আমাদের নফসকে সোজা হতে দেয় না।
আমাদের ঢিলেমি্পনার এমন অবস্থা যে, তারাবিহতে এক খতম কুরআন শোনাও কঠিন হয়ে যায়। অনেকে বলে, অমুক মসজিদে যেতে হবে। কেন? কারণ, সেখানে ত্রিশ মিনিটে তারাবিহ হয়ে যায়। অমুক জায়গায় পঁচিশ মিনিটে হয়ে যায়। এভাবে আমরা মসজিদ তালাশ করতে থাকি–কোথায় আমরা পাঁচ মিনিট পূর্বে ফারেগ হতে পারি।
বিনিদ্রদের আরাম মৃত্যুর পরে
নিজের নফসকে বুঝাবেন, অনেক সময়ই তো গাফিলতির মধ্য দিয়ে কাটিয়ে দিয়েছি। এখন এই মাসে উপার্জন করতে হবে। আল্লাহর অলিরা এ মাসে আরাম-আয়েশকে বিদায় জানাতেন। আমরাও বিদায় বলে দিবো। একটু ভাবুন, বছরের এগার মাস তো আমরা নিজেদের মতো ঘুমাই, জাগি। অন্তত একমাস এমন হতে হবে যাতে আমরা অনেক কম ঘুমাবো। ইবাদত করতে করতে যদি চোখ ঘুমের কারণে ছটফট করে তাহলে ভালো কথা। যদি শরীর ক্লান্ত হয়ে যায় তাহলে ভালো কথা। যদি আজ আপনারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জাগেন তাহলে কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার দিদার নসিব হবে। এই চোখ আজ জাগবে তো কাল কবরের মাঝে মিষ্টিঘুম ঘুমাবে।
موت کے بعد ہے بیدار دلوں کو آرام
نیند بھر کر وہی سویا جو کہ جاگا ہوگا
মৃত্যুর পরে জাগ্রতদের আরাম।
ঘুমাবে সে শান্তি মত যে করেছে ঘুম হারাম।
৩. বেশী বেশী দোয়া করা
এ মাসে আল্লাহর রহমত জোশে থাকে। তিনি নিজের বান্দাদেরকে কিছু দিতে চান। এজন্য এ মাসে দোয়া বাড়িয়ে দিতে হবে। হাদীস শরীফে এসেছে,
وَإنَّ لِكُلِّ مُسْلِم فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ
‘রমজানের প্রত্যেক দিনে ও রাতে প্রত্যেক মুসলমানের একটি দোয়া অবশ্যই কবুল হয়।’
সুতরাং আল্লাহর দরবারে কেঁদে কেঁদে দোয়া করতে হবে। জানা নাই, কোন মুহূর্তে দোয়া কবুল হয়ে যাবে। তাহাজ্জুদের সময় দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ সময়। সুতরাং তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করতে হবে এবং নিজের সমস্ত প্রয়োজন আল্লাহর সামনে পেশ করতে হবে। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে হবে।
বিভিন্ন হাদিসে ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া কবুলের কথা এসেছে। তিন ব্যক্তির দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া, ন্যায়পরায়ণ বাদশাহর দোয়া এবং মজলুমের দোয়া।
এ কারণেই ইফতারের সময় দোয়ার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। একটু চিন্তা করুন, মনে করুন, আল্লাহ তাআলার কোন প্রিয় বান্দা আপনাকে বললো, এইমাত্র স্বপ্নের মাধ্যমে আমি সুসংবাদ পেয়েছি–এটা দোয়া কবুলের সময়। তোমরা যা কিছু চাইতে পারো আল্লাহর কাছে চেয়ে নাও। তখন আপনি কিভাবে দোয়া করবেন? নিশ্চয় অত্যন্ত নম্রতার সাথে কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে সব কিছু চাইবেন। কারণ তখন অন্তরে একথা থাকবে যে, আল্লাহর অলি বলেছেন–এটা দোয়া কবুলের সময়। যখন একজন অলি বলেছেন এটা দোয়া কবুলের সময় তখন আমরা এত আগ্রহের সাথে দোয়া করি। একটু ভেবে দেখুন, সমস্ত নবীদের সরদার আল্লাহ তাআলার মাহবুব হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা আহমদ মুজতাবা ﷺ বলেছেন, ইফতারের সময় আল্লাহ তাআলা রোজাদারের দোয়া কবুল করেন। সুতরাং আমাদের ইফতারের সময় কত আগ্রহের সাথে এবং মিনতির সাথে আশা নিয়ে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করা উচিত।
কিন্তু হয় কী? আসরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ইফতারের ধুম শুরু হয়। ইফতারি বানানো হচ্ছে, পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে… এতে কাবাবও দেওয়া চাই… ফল থাকতে হবে… সমচা থাকতে হবে… অমুক জিনিস থাকতে হবে…। আমরা দশ/পনের মিনিট আগে দস্তরখানা বিছিয়ে অপেক্ষায় বসে থাকি ঠিক; কিন্তু দোয়া করার তৌফিকটুকু হয়না! এটা নাও, ওটা দাও, এটা হয়েছে, ওটা রয়ে গিয়েছে–এর মাঝেই ইফতারির মূল্যবান সময় কাটিয়ে ফেলি! উচিত তো ছিল ইফতারের শেষ আধাঘন্টা আল্লাহর কাছে দোয়া করার জন্য নির্ধারিত করে রাখা। অনুনয়-বিনয়ের সঙ্গে আল্লাহর সামনে নিজের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা বলা এবং নিজের দুনিয়া-আখেরাতের জান-মাল ও ঈমানের নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা।
নিয়ম আছে, যদি আপনি কাউকে পারিশ্রমিকের জন্য বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং সে সারাদিন ঘাম ঝরায় আর সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সময় আপনার কাছে পারিশ্রমিক চায় তাহলে আপনি তার পারিশ্রমিক আটকে রাখবেন না। অথচ আমাদের মঝে কত দুর্বলতা আছে। শত্রুতা আছে। বিদ্বেষ আছে। হিংসা আছে। কৃপণতা আছে। কিন্তু আমাদের মাঝে যে সামান্য ভদ্রতা আছে তা-ই এটা সহ্য করো না যে, যে লোকটি সারাদিন মেহনত করেছে সন্ধ্যার সময় পারিশ্রমিক ছাড়াই তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিব। যদি আমাদের মন এটা না চায় তাহলে যে বান্দা আল্লাহর জন্য ক্ষুধা-তৃষ্ণা বরদাশ্ত করেছে এবং ইফতারের সময় তার পারিশ্রমিক নেয়ার সময় হয়েছে তখন আল্লাহ তাআলা কি তাকে পারিশ্রমিকে ছাড়াই ফিরিয়ে দিবেন? কক্ষনো নয়। এজন্য সততা ও বিশ্বাসের সঙ্গে ইফতারের সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন। আল্লাহ তাআলা অবশ্যই কবুল করবেন।
হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে যে, রমজান মাসে বেশি বেশি দোয়া করবে। আল্লাহর কাছে অধিকহারে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, জান্নাত কামনা করবে এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইবে। অতএব দোয়ার মঝে এই তিন জিনিস বারবার চাইবে। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাআলা আশা পূরণ করবেন।
বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করা
রমজানের সঙ্গে কুরআন মজীদের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। কারণ এ মাসেই কোরআন নাজিল হয়েছে।
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ
‘রমজান মাসে কোরআন মাজিদ অবতীর্ণ করা হয়েছে।’
এর পূর্বে যত আসমানী কিতাব এবং সহিফা এসেছে সেগুলোও এই মাসেই অবতীর্ণ হয়েছে। বোঝা গেল, এই মাসের সঙ্গে কালামুল্লাহর বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে এ মাসে কোরআন মাজিদ বেশি বেশি তেলাওয়াত করা হয়, শোনা হয়। হাদীসে এসেছে, নবীজি ﷺ হযরত জিব্রাইল আ.-এর সামনে পুরো কোরআন তেলাওয়াত করতেন। নবীজির সাহাবীদের থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত এই নিয়ম চলে আসছে যে, এই মাসে কোরআন মজিদ তেলাওয়াত অধিকহারে করা হয়। আমাদের অনেক আকাবির এই মাসে এক দিনে এক খতম এবং এক দিনে দুই খতম তেলাওয়াত করতেন। সুতরাং আকাবিরদের অনুসরণে বেশি বেশি তেলাওয়াত করার অভ্যাস করা উচিত।
ইতেকাফ: আল্লাহর রহমত পাওয়ার শক্তিশালী মাধ্যম
রমজানের নূর ও বরকত দ্বারা সিক্ত হওয়ার একটি শক্তিশালী মাধ্যমের নাম ইতেকাফ। এটি নবীজির সুন্নাত। আমাদের আকাবিররা এটি ছাড়তেন না। ইতেকফের মূল উদ্দেশ্য–আল্লাহ তাআলার দরজায় চৌকাঠ ধরে বসে থাকা।
আপনারা জানেন, দানশীল ব্যক্তির দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও ফকিররা সেখানে ভীড় করে থাকে। কারণ, তারা জানে, দরজাটি এক সময় না হয় এক সময় খুলবে। যখন খুলবে তখন যদি আমি সামনে থাকি তাহলে ভাগ অবশ্যই পাব। অনুরূপভাবে ইতেকাফকারীরাও আল্লাহ তাআলার রহমতের দরজার সামনে বসে পড়ে। ইতেকাফের রাতগুলোতে তারা কদরের রাত তালাশ করতে থাকে।
শেষ দশকে নবীজির মুজাহাদা
আয়েশা রাযি. বলেন,
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَجْتَهِدُ فِي العَشْرِ الأَوَاخِرِ منْ رَمضانَ مَالا يَجْتَهدُ في غَيْرِهِ
‘রাসূলুল্লাহ ﷺ রমযানের শেষ দশকে এত সময়-শ্রম দিতেন যা অন্য সময় দিতেন না।’
বুখারী শরীফের হাদিস,
كَانَ النبي ﷺ إِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ شَدَّ مِئْزَرَهُ، وَأَحْيَا لَيْلَهُ، وَأَيْقَظَ أَهْلَهُ
আয়েশা রাযি. বলেন, ‘যখন শেষ দশক আসতো তখন নবীজি ﷺ নিজের কোমর ভালোভাবে বেঁধে নিতেন। নিজে রাত জাগতেন আর পরিবারকে রাত জাগাতেন।
লাইলাতুল কদরের ফজিলত
আল্লাহ তাআলা অসীম দয়ালু। তিনি রমজানে একটি রাত এমন দিয়েছেন যাকে লাইলাতুল কদর বলা হয়। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ
‘লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চাইতে সেরা।’
রাতটির ইবাদত এমনই যেন হাজার মাসের ইবাদত। রাতটির খুঁজেই ইতেকাফে বসা। হাদীস শরীফে এসেছে,
مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের নিয়তে ইবাদতের জন্য রাত জেগে থাকবে তার অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’
লাইলাতুল কদর পাওয়ার সহজ পদ্ধতি
লাইলাতুল কদরের বরকত লাভের রহস্য বলে দিচ্ছি। যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার ক্ষমা পেতে চায় তার জন্য উচিত হচ্ছে, অন্তর থেকে সকলের ব্যাপারে গোস্বা বের করে দিবে। নিজের সিনাকে হিংসামুক্ত করে নিবে। সকলকে আল্লাহর জন্য ক্ষমা করে দিবে। তবে আল্লাহ তাআলা হাশরের দিন এটাকেই বাহানা বানিয়ে তাকেও ক্ষমা করে দিবেন।
আরেকটি রহস্য বলে দিচ্ছি, যে ব্যক্তি চায় যে, রমজানের লাইলাতুল কদরের সাওয়াব আমি পেয়ে যাব। তবে তো পাওয়া অনেক সহজ। কিন্তু কিভাবে?
দেখুন, রাতটি সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন,
تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمْرٍ
তথা রাতটিতে বেহিসেবিভাবে রহমত ও শান্তি নাযিল হয়। কল্যাণ ও বরকতের ফল্গুধারা আসতেই থাকে। কিন্তু রাতটির কোন ভাগে এটি হয় তা কেউ জানে না। তবে আল্লাহ তাআলা একটি ইঙ্গিত দিয়েছেন। هِيَ حَتَّىٰ مَطْلَعِ الْفَجْرِ তথা এই ধারা অব্যাহত থাকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত।
এখান থেকে একটি সূক্ষ্ম বিষয় জানা গেল। তা হল, লাইলাতুল কদরের বরকত যখনই শুরু হবে তা শুরু হয়ে অবশ্যই সুবহে সাদিক পর্যন্ত অবশিষ্ট থাকবে। সুতরাং আমাদের মত দুর্বল মুমিন যারা সারারাত ইবাদত করতে পারিনা, যখন রোজা রাখার জন্য সেহরির সময় উঠবো তখন যদি কিছু তাহাজ্জুদ আমরা পড়ে নেই তাহলে অবশ্যই লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সাওয়াব পেয়ে যাব।
নেকির চেক বই
রমজান মাসের একটি দৃষ্টান্ত নিন। যেমন ব্যাংকের চেক বই। কেমন যেন আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ত্রিশ পৃষ্ঠাবিশিষ্ট একটি চেক বই দান করেছেন, তাতে যত পারো অংক লিখে দাও। তা তোমাদের জন্যে আখেরাতে জমা হবে। কিছু লোক এমন আছে যারা পৃষ্ঠাগুলো খালি পাঠিয়ে দিবে। কিছুই লিখবে না। রমজানে তাদের দিনগুলো হেলাফেলায় চলে যাবে। কিছু মানুষ এমন হবে যারা এক লাখ লিখবে। কেউ এক মিলিয়ন লিখবে এবং কেউ এক বিলিয়ন লিখবে। অর্থাৎ প্রত্যেকে নিজ নিজ পছন্দ এবং ভাগ্য অনুপাতে লিখবে। রমজানের বিশটা দিন চলে যাওয়ার অর্থ হলো, আমাদের বিশটি চেক জমা হয়ে গিয়েছে, হাতে আছে আর দশটা। এ চেকগুলোতে লেখা আমাদের কাজ। যত অংক লিখতে পারব, আখেরাতে তত নেকি জমা থাকবে। সুতরাং রাতগুলো এবং দিনগুলো অনেক ইবাদতের মধ্য দিয়ে কাটাতে হবে। আল্লাহ তাআলা অনেক গুণগ্রাহী। যখন মানুষ পরিচ্ছন্ন অন্তর নিয়ে তাঁর চৌকাঠে পড়ে থাকে তখন তিনি অবশ্যই রহমতের আচরণ করেন। আলী রাযি. বলতেন, যদি আল্লাহর ইচ্ছা থাকতো যে, তিনি এই উম্মতকে আজাব দিবেন তাহলে তিনি এই উম্মতকে সূরা ইখলাস এবং রমজান মাস দান করতেন না।
ভয় এবং আশা
প্রত্যেক রোজাদারের অন্তরে দু’টি অবস্থা থাকতে হবে। একটি হচ্ছে, তার ভিতরে ভয় থাকবে। দ্বিতীয় হচ্ছে, তার ভিতরে আশা থাকবে। ভয় করবে যেন আমার রোজা ফিরিয়ে দেওয়া না হয় এবং আশাও রাখবে যে, আল্লাহ তাআলা যখন তাওফিক দিয়েছেন তখন তিনি খালি হাতে ফিরিয়ে দিবেন না। কারণ, কোন দানশীল বাদশাহ কাউকে ডেকে খালি হাতে ফেরত দেন না। যাকে দেন না তাকে দরজায়ই আসতে দেন না। দরজা থেকে খালি হাতে ফেরত দেওয়া দানশীলের মর্যাদাপরিপন্থী। সুতরাং অফুরন্ত ক্ষমতা ও করুণার অধিকারী রাজাধিরাজ মহান আল্লাহ যখন আমাদেরকে রমজানের রোজা রাখার এবং ইতিকাফ করার তাওফিক দিয়েছেন তখন আমরা তাঁর রহমতের দরবারে এই আশাবাদই ব্যক্ত করব যে, তিনি আমাদের জন্য কল্যাণের ফয়সালা করবেন। আমাদের প্রতি ক্ষমার দৃষ্টিতে তাকাবেন।
একটি বদদোয়ার উপর রহমতের নবীর ‘আমিন’ বলা
হাদীস শরীফে এসেছে, জিব্রাইল আ. একবার নবীজির সামনে বদ দোয়া করলেন,
بعُدَ مَن أدرَك رمضانَ فلم يُغْفَرْ له
‘ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে রমজান পেল অথচ নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না।’
এখানে বুঝার বিষয় হলো, প্রথমত জিব্রাঈল আ. নিজ থেকে বদদোয়া করতে পারেন না। কেননা কোরআনের ফায়সালা হচ্ছে,
لَا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ
‘আল্লাহর নির্দেশের অবাধ্য তারা হয় না। তাদেরকে যা নির্দেশ দেওয়া হয় তারা তা করে।’
সুতরাং আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে হুকুম ছিল যে, যাও, বদদোয়া কর–ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে রমজান পেল অথচ নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না। কিন্তু এই বদদোয়ার বিপরীতে নবীজির আমিন বলে দেওয়া অনেক বেশি আশ্চর্যের বিষয়। কোন মায়ের সামনে তার ছেলের ব্যাপারে বদদোয়া দিলে মা কি তা সহ্য করেন? মা কি তখন আমিন বলেন? অবশ্যই না। সুতরাং যদি মা সন্তানের প্রতি ভালোবাসার কারণে আমিন বলতে না পারেন তাহলে রহমতের নবী যিনিبِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ মুমিনদের সঙ্গে দয়া ও মেহেরবানির আচরণ করেন, তিনি জিব্রাইল আ.-এর বদদোয়ার পরিপেক্ষিতে আমিন বলে দিলেন কিভাবে!
আমাদের মাশায়েখ এর উত্তরে লিখেছেন, এর কারণ হলো, রমজান মাসে আল্লাহ তাআলা খুব দ্রুত ক্ষমা করে দেন। যে বান্দা সামান্য চেষ্টা করবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু যে এই যৎসামান্য চেষ্টাও করবে না সে নিশ্চিত মাহরুম এবং বঞ্চিত। রহমতের নবীﷺ বুঝিয়েছেন, যে ব্যক্তি রমজানের ব্যাপারে এতটুকু খেয়াল রাখে না যে, আল্লাহর কাছ থেকে গুনাহ মাফ করিয়ে নিতে হবে তাহলে সে পাক্কা বঞ্চিত। তার তো ধ্বংস হয়ে যাওয়াই উচিত। একারণেই আমিন-এর মোহর লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঈদ না ওয়ীদ তথা খুশি না শাস্তি
আর এ কারণেই রমজানের পরে ঈদ আমাদের জন্য হয় ঈদ হবে না হয় ওয়ীদ হবে। ঈদ মানে তো খুশি। ওয়ীদ মানে শাস্তি। রমজানে যারা নিজেদের গুনাহ মাফ করিয়ে নিতে পেরেছে তাদের জন্য ঈদ। আর যারা মাফ করাতে পারে নি তাদের জন্য ওয়ীদ ।
এক বুযুর্গের কাছে কেউ জিজ্ঞেস করল, হযরত ঈদ কবে হবে? তিনি উত্তর দিলেন, যখন দীদ হবে তখন ঈদ হবে। অর্থাৎ যখন মাহবুবের দেখা হবে তখন আমাদের ঈদ হবে। কারণ আশিকের কাজ তো একটাই– মাহবুবের সাথে মিলিত হওয়া। সুতরাং রমজানের এ দিনগুলোতে আপনারাও এই দোয়া করবেন যে, হে আল্লাহ! আমরা আপনার কাছে আপনাকেই চাই। আপনার নৈকট্য চাই। যাতে আমাদের ঈদ সঠিক অর্থ ঈদ হতে পারে।
মুক্তির পথ
আমার বন্ধুরা! আমরা সকলে জানি, আমাদের গুনাহ অনেক বেশি। চেষ্টা সামান্য। কিন্তু এখানে তো আঁচল বিছানোর ব্যাপার। আমরা রমজানের এই কয়টা দিন আল্লাহর রহমত ভিক্ষা করতে করতে কাটিয়ে দিব। যদি কোন দুনিয়াদারের দরজায় কোন ব্যক্তি এক মাস কড়া নাড়াতে থাকে তাহলে ওই দুনিয়াদারও দরজা খুলে দেয়। আমরাতো রব্বুল আলামিনের দরজা খটখট করব। যখন আমরা পরিপূর্ণ ইখলাসের সঙ্গে নিজেদের গুনাহর জন্য তাঁর কাছে অনুনয়-বিনযয়ের সাথে ক্ষমা চাইতে থাকব তখন অবশ্যই তার রহমত তরঙ্গ খেলে উঠবে এবং আমাদের জন্য মাগফেরাতের ঘোষণা বয়ে আনবে। আমাদের মুক্তির ভিত্তি তো আমাদের প্রকৃত মাহবুব আমাদের রব আমাদের মালিক আমাদের আল্লাহর একটিমাত্র রহমতের দৃষ্টি কিংবা অর্ধ দৃষ্টি। وَمَا ذَٰلِكَ عَلَى اللَّهِ بِعَزِيزٍ আর এটা আমাদের মালিকের কাছে কঠিন নয়।
আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর রহমতের বিশেষ অংশ নসিব করুন আমিন।
وَآخِرُ دَعْوَانَا اَنِ الْحَمْدُ لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ